সংক্ষিপ্ত
রাজনাথ সেখানেই শান্তি ও প্রশান্তির বার্তা দেন। তিনি বলেন শান্তি ও প্রশান্তির ভিত্তি শক্ত করার জন্য দুই দেশের সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
চিনের সীমান্ত নীতি লঙ্ঘন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট করে দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর লি শাংফুর সঙ্গে বৈঠকে এমনই কড়া বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। পাশাপাশি সীমান্তে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য দুই দেশকে একত্রিত হয়ে পথ খুঁজতে হবে বলেও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। পূর্ব লাদাখের সীমান্ত দ্বন্দ্বের তিন বছর পরে এই প্রথম চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি-র সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করেন রাজনাথ। এটাই প্রথম লির ভারত সফর।
এদিন ভারত ও চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে কথাবার্তা বলেন। রাজনাথ সেখানেই শান্তি ও প্রশান্তির বার্তা দেন। তিনি বলেন শান্তি ও প্রশান্তির ভিত্তি শক্ত করার জন্য দুই দেশের সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি। মূলত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (SCO) বৈঠকে যোগ দিতে লি-র নয়াদিল্লি সফর, ২০২০ সালের মে মাসে সীমান্ত সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর প্রথম ভারত সফর। তিনি ভারতে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই এই বৈঠক হয়।
সরকারি সূত্রের খবর, রাজনাথ লিকে জানিয়েছেন, পূর্ব লাদাখের অবশিষ্ট ঘর্ষণ পয়েন্টগুলি থেকে অবিলম্বে চিনা সেনাদের সরিয়ে নিতে হবে। ডি-এসক্সালেশন নিয়েও তিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কাছে আশা প্রকাশ করেছেন রাজনাথ। একটি বিবৃতি জারি করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে, দুই মন্ত্রী ভারত ও চিন সীমান্ত এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে অকপট আলোচনা করেছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্কের বিকাশ সীমান্তে শান্তি ও প্রশান্তি বজায় রাখার পর নির্ভর করে। রাজনাথ সিং আরও বলেছেন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকার সমস্যা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলির ওপর প্রভাব ফেলছে। আর সেই কারণএ দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া জরুরি।
২৩ এপ্রিল কর্পস কমান্ডারের আলোচনায়, উভয় পক্ষ ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে থাকতে এবং পূর্ব লাদাখের অবশিষ্ট সমস্যাগুলির দ্রুততম সময়ে একটি পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধান নিয়ে কাজ করতে সম্মত হয়েছিল। তবে এই বৈঠকের পর এখনও পর্যন্ত কোনও সুস্পষ্ট অগ্রগতি দেখা যায়নি।
ভারত বলে আসছে যে সীমান্ত এলাকায় শান্তি না থাকলে চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে না। অন্যদিকে চিনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংও আগামী সপ্তাহে গোয়ায় এসসিও সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত সফরে আসছেন। ৪ ও ৫ মে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানেও ভারত চিনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে পারে বলে সূত্রের খবর।
বৃহস্পতিবার, রাজনাথ সিং কাজাখস্তান, ইরান এবং তাজিকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে পৃথক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। ভারত তার গ্রুপিংয়ের সভাপতিত্বে SCO প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকের আয়োজন করছে। চিন, রাশিয়া এবং পাকিস্তান ছাড়া এসসিওর অন্যান্য সদস্য দেশগুলির প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা দিল্লিতে বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ভার্চুয়াল মোডের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেবেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
SCO হল একটি প্রভাবশালী অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ব্লক এবং এটি একটি বৃহত্তম আন্তঃদেশীয় আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এটি রাশিয়া, চিন, কিরগিজ প্রজাতন্ত্র, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপতিদের দ্বারা ২০০১ সালে সাংহাইতে একটি শীর্ষ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ভারত ও পাকিস্তান ২০০৭ সালে এর স্থায়ী সদস্য হয়।