সংক্ষিপ্ত
- ভৌগলিককারণে গুরুত্বপূর্ণ দেপসাং সমভূমি
- দোপসাং-এর একদিকে সিয়াচেন আর তিব্বত
- অন্যদিকে রয়েছে চিনের দখলে থাকা আকসাই চিন
- এলাকায় চিন ও ভারত উভয় বাড়িয়েছে নজরদারি
লাদাখের ৯৭২ বর্গ কিলোমাটার এলাকা জুড়ে রয়েছে দেপসাং সমভূমি। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে প্রায় ১৬ হাজার ৪০০ ফুট উঁচুতে এই অবস্থান। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এলাকায় এই অবস্থান। আর বর্তমানে এই এলাকায় ক্রমশই বাড়ছে উত্তেজনা। পাল্লা দিয়ে সেনা বাড়াচ্ছে ভারত আর চিন। লাদাখের অন্যান্য এলাকার মত দেপসাং সমভূমিতেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমারেখা নিয়ে সমস্যা তৈরি করে রেখেছে চিন। প্যাংগং লেকের উত্তর প্রান্তে অবস্থান দেপসাং সমভূমির। মে মাসে ভারত-চিন সংঘর্ষের আগে থেকেই এই এলাকায় নজরদারী বাড়িয়ে দিয়েছিল চিন। যা এখনও অব্যাবহ রয়েছে। এক সেনা কর্তার বয়ান অনুযায়ী মে মাস থেকেই দোপসাংএর ৫টি পেট্রোল পয়েন্ট ভারতীয় সেনাদের টহল দিতে বাধা দিচ্ছে চিনের পিপিলস লিবারেশন আর্মির সদস্যরা। সেনা সূত্রের খবর চলতি বছর মার্চ ও মে মাস থেকেই ভারতীয় জওয়ানদের টহল দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে পেট্রোল পয়েন্ট ১০, ১১, ১১এ, ১২ আর ১৩। অন্যদিকে প্যাংগং লেকের ৪ নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্টের পর থেকেও চিনা সেনা ভারতীয়দের গতিবিধি আটকে দিয়েছে।
দেপসাং সমভূমি ভারতের উত্তর সাব সেক্টরের অন্তর্গত। এর একদিকে সিয়াচেন হিমবাহ। আর অন্যদিকে চিন অধিগৃহীত আকসাই চিন। যার জন্য এই এলাকার ভৌগলিক গুরুত্ব অনেকটাই বেশি। দেপসাং উত্তরে রয়েছে ১৮০০০ ফুটেরও বেশি কারাকোরাম পাস। এই কারাকোরাম পাস থেকে জি২১৯ হাইওয়ে ধরে সহজে চলে যাওয়া যায় তিব্বত ও চিনের জিনজিয়াং প্রদেশে।আবার এই দেপসাংএর দক্ষিণে রয়েছে মুরগো। এখান থেকে পূর্ব লাদাখের সাসোমায় যাওয়ার একটি রাস্তা রয়েছে। ট্রাক বা জিপ সহজেই চলাচল করতে পারে। একটি সূত্র বলছে মূলত পশু চালকরা এই রাস্তাটি ব্যবহার করে। আর সাসোমা থেকেই গিলগিট বালতিস্তান যাওয়ার একটি রাস্তা রয়েছে। তাই দেপসাং ভ্যালির কৌশলগত অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুর্বুক-সায়ক-দৌলতবেগ ওল্ডি রাস্তাটিও গেছে এই এলাকা দিয়ে। আর চিন ভারতের যে পাঁটটি পেট্রোলিং পোস্টে টহল দিতে বাধা দিচ্ছে সেগুলি এই রাস্তার সংলগ্ন বলেও জানিয়েছেন এক সেনা কর্তা।
দেপসাং এলাকায় চিনা সেনা ব্রুটস নামে একটি এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে। আর ওই এলাকাটি ভারতীয় সামরিক শিবির থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে। ২০১৫ সালেও এই এলাকার দখল করতে উদ্যোগ নিয়েছিল চিনের পিপিলস লিবারেশন আর্মির সদস্যরা। কিন্তু পরে তারা পিছু হাঁটে। যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনা বাহিনী তাদের ঐতিহ্যবাহী পোস্ট গুলিতে টহল দেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় পোস্ট সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পেরেছে। সেনা বাহিনী সূত্রের খবর চিন যদি বাধা দেয় তাহল পায়ে হেঁটেই পোস্টের দখল নেওয়া চেষ্টা করতে। কারণ ভারতীয়রা সড়কপথে বোতলনেক যেতে পারে। সেখানে থেরে পায়ে হেঁটে রাখি নালা হয়ে ১০ নম্বর পেট্রোল পয়েন্টের দিয়ে পৌঁছে যাওয়া খুব কঠিন হবে না। অন্যদিকে দক্ষিণ পূর্ব জিওয়ান নালা দিয়ে ১৩ নম্বর পেট্রোল পয়েন্টের কাছে যাওয়া যায়। সেনা বাহিনী সূত্রে বলা হয়েছে দেপসাং সমভূমিতে এখনও পর্যন্ত ভারতের কোনও স্থানই দখল করতে পারেনি চিন।