Assam CM Himanta Sarma: পহেলগাঁওয়ে (Pahalgam) জঙ্গি হামলার পর দেশজুড়ে পাকিস্তানিদের খোঁজ চলছে। এরই মধ্যে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈয়ের (Gaurav Gogoi) বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma)।
Himanta Biswa Sarma attacked Gaurav Gogoi: অসমের জোড়হাটের কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ (Congress MP Gaurav Gogoi) সরকারকে না জানিয়ে ১৫ দিন পাকিস্তানে ছিলেন। তাঁর সন্তানরা ভারতের নাগরিক নন। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Assam Chief Minister Himanta Biswa Sarma)। তিনি দাবি করেছেন, যা বলছেন, তার জন্য পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছেন। ‘এক্স’ হ্যান্ডলে অসমের মুখ্যমন্ত্রী পোস্ট করেছেন, ‘আমি পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে এ কথা বলছি-অসমের এক সাংসদের নাবালক শিশুরা আর ভারতের নাগরিক নয়। কিন্তু এটা সবে শুরু। আরও অনেককিছুই প্রকাশিত হওয়া বাকি।’ এই পোস্ট গৌরবের নাম করেননি হিমন্ত। কিন্তু তিনি যে ইঙ্গিত করেছেন, তাতে গৌরবের কথাই বলছেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অসম ও জাতীয় রাজনীতিতে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
গৌরবের বিরুদ্ধে তদন্ত
এর আগে সরাসরি গৌরবের নাম করে তাঁকে আক্রমণ করেন হিমন্ত। তিনি বলেন, 'আমার কাছে প্রমাণ আছে, গৌরব গগৈয়ের ছেলে ও মেয়ে ভারতীয় নাগরিক নয়। তিনি পাকিস্তানে ১৫ দিন কী করছিলেন, তা আমরা পরীক্ষা করে দেখছি। পাকিস্তানে কোনও পর্যটন কেন্দ্র নেই। এটা শুধু সন্ত্রাসবাদীদের আড্ডার জায়গা। এটা ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে গৌরব গগৈ পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ওখানে ১৫ দিন ধরে কী করছিলেন? রবার্ট বঢ়রা (Robert Vadra) ও গৌরব গগৈ ভারতের চেয়ে পাকিস্তান নিয়ে বেশি চিন্তিত।' অসমের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, 'ভারতের সংসদের এক সদস্য, যিনি একজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে, তিনি আটরি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে যান এবং সেখানে ১৫ দিন থাকেন।' বিশেষ তদন্তকারী দল এ বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পেয়েছে বলেও দাবি করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী।
স্ত্রীর পাকিস্তান-যোগ নিয়ে গৌরবকে আক্রমণ
হিমন্তর অভিযোগ, গৌরবের স্ত্রী ভারতে চাকরি করেন কিন্তু বেতন পান পাকিস্তানের এক এনজিও থেকে। গৌরবের স্ত্রী কেন ভারতের নাগরিক হতে চেয়ে আবেদন জানাননি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন হিমন্ত। তিনি 'এক্স' হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন, 'কংগ্রেস পার্টির মাননীয় সাংসদের কাছে আমার প্রশ্ন, ১. আপনি কি পাকিস্তানে গিয়ে টানা ১৫ দিন ছিলেন? যদি তাই হয়, তাহলে দয়া করে আপনার এই সফরের কারণ ব্যাখ্যা করবেন? ২. আপনার স্ত্রী কি ভারতে থেকে এবং এখানে কাজ করে পাকিস্তানের এক এনজিও-র কাছ থেকে বেতন পান? যদি তাই হয়, তাহলে কি আমরা প্রশ্ন করতে পারি, ভারতে কার্যকলাপের জন্য পাকিস্তানের এক এনজিও কেন বেতন দিচ্ছে? ৩. আপনার স্ত্রী এবং দুই সন্তানের নাগরিকত্ব কী? তাঁরা কি ভারতের নাগরিক? না কি অন্য কোনও দেশের নাগরিক? আরও অনেক প্রশ্ন উঠবে।'
সব অভিযোগ অস্বীকার গৌরবের
হিমন্ত যে বিষয়গুলির কথা উল্লেখ করেছেন, সে বিষয়ে কিছু বলেননি গৌরব। তবে তিনি পাল্টা অভিযোগ করেছেন, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছেন হিমন্ত। তিনি তুচ্ছ রাজনীতি করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন গৌরব। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, শত্রুদেশের হয়ে কাজ করার অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে কি পদত্যাগ করবেন হিমন্ত? গৌরবের দাবি, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে ঠিক যে সময়ে সারা দেশ ঐক্যবদ্ধ এবং ভারতীয় নাগরিকদের উপর সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য পাকিস্তানকে কড়া জবাব দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, তখন অসম-সহ বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি নেতারা তুচ্ছ রাজনীতি করছেন।’ কিন্তু তাঁর স্ত্রী ভারতের নাগরিক নন কেন, তাঁর স্ত্রী কি সত্যিই পাকিস্তানের এনজিও-র কাছ থেকে বেতন পান, তিনি কি পাকিস্তানে গিয়ে ১৫ দিন ছিলেন, তাঁর সন্তানরা কি অন্য কোনও দেশের নাগরিক, এই প্রশ্নগুলির জবাব দেননি। ভারতের একজন সাংসদ হিসেবে এই প্রশ্নগুলির জবাব দেওয়া জরুরি বলে মত রাজনৈতিক মহলের। কারণ, এগুলির সঙ্গে দেশের গোপনীয়তা, নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িয়ে আছে। বিশেষ করে যখন পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


