সংক্ষিপ্ত
- লাদাখ ইস্যুতে কংগ্রেসের নিশানা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
- রাজনাথ সিং-এর বিবৃতির নিয়ে মোদীকে নিশানা
- লোকসভা থেকে ওয়াক আউট কংগ্রেসের
- জানান হল সেনাদের সম্মান করে কংগ্রেসও
লাদাখ ইস্য়ুতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর বিবৃতি দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেও কংগ্রেস লোকসভা থেকে ওয়াক আউট করে। কংগ্রেসের দাবি পূর্ব লাদাখের সংকট নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধীদলগুলিকে কিছু বলতে দেয়নি। কংগ্রেসের আরও অভিযোগ লাদাখ সংকট নিয়ে মোদী সরকার বিতর্ক থেকে পালাতে চাইছে। গালওয়ানে ভারত ও চিনা সেনার সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছিল। তারপর থেকে লাদাখ সীমান্ত সমস্যা নিয়ে কংগ্রেসসহ বিরোধীদলগুলি ক্রমাগত নিশানা করে যাচ্ছে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে। আর সেইচাপের কাছে কিছুটা হলেও মাথানত করে মঙ্গলবার বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে লোকসভায় লাদাখ ইস্যুতে বিবৃতি দিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এপ্রিল মাস থেকে এপর্যন্ত লাদাখ সমস্যা নিয়ে প্রায় বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। তাঁর বিবৃতিতেত ঠাঁই পেয়েছিল মস্কোর বৈঠকও। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট ন কংগ্রেস। আর সেই কারণে রাজনাথ সিং-এর মন্তব্যের পর লোকসভা থেকে ওয়াকআউট ককে কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা মঙ্গলবার আবারও একহাত নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কারণ গালওয়ান সংঘর্ষের পর সর্বদলীয় বৈঠক ডেকা হয়েছিল। আর সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রীতিমত দৃঢ়়তার সঙ্গে বলেছিলেন কেই ভারতের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করেনি। কেউ ভারতের ভূখণ্ড দখল করেনি। কিন্তু প্রধামন্ত্রীর সেই মন্তব্যের সঙ্গে রীতিমত ফারাক রয়েগেছে রাজনাথ সিং-এর এদিনের মন্তব্য। কারণ এদিন বিবৃতি দেওয়ার সময় রাজনাথ সিং বলেছিলেন চিন একদমই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সেনা মানছে না। বেশ কয়েকটি এলাকায় তারা ঘাঁটি তৈরি করে অবস্থান করছে। আর সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরেই প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেন সুরজেওয়ালা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কেন সেই সময় দেশকে বিভ্রান্ত করেছিলেন? পাশাপাশি তিনি জানতে চেয়েছেন কখন ভারতীয় ভূখণ্ড চিনা সেনাদের কাছ থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে ? রাণদীপ সুরজেওয়ালা বলেছেন দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে কংগ্রেসের। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে ব্যাখ্যা দিতে হবে কী করে লাল ফৌজ ভারতের ভূখণ্ড দখল করতে পারল।
ওয়াক আউটের কারণ হিসেবে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানান হয়েছিল, শতাব্দী প্রাচিন দলটি লাদাখ ইস্যুতে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে স্পষ্ট উত্তর চেয়েছিল সরকারের কাছ থেকে। কিন্তু স্পিকার তার অনুমতি দেয়নি। স্পিকার তাদের কথা বলতে দেয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা ১৯৬২ সালের ভারত চিন যুদ্ধের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন সেই সময় অটলবিহারী বাজপেয়ী যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছিলেন। আর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু সংসদে দুদিন চিন-ভারত যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু মোদী সরকার গুরুপূর্ণ বিষয়টি থেকে পালিয়ে যেতে চাইছে বলেও অভিযোগ করে কংগ্রেস।
সোমবার বাদল অধিবেশ শুরুর আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লাদাখ ইস্যুতে সেনা বাহিনীর পাশাপাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন গোটা দেশ ভারতীয় জওয়ানদের পাশে রয়েছে। তিনি আশা করেন সংসদও যেন ভারতীয় বাহিনীর পাশে দাঁড়ায়। মঙ্গলবার সেইমত রাজনাথ সিংও লাদাখে ভারতীয় সেনা বাহিনীর ভূমিকার ভয়সী প্রশংসা করেন। কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈএর অভিযোগ সরকার মনে করছে তারাই ভারতীয় জওয়ানদের সমর্থন করছে। কিন্তু এই ধারনা ভ্রান্ত বলে তিনি দাবি করেন। আর বলেন, কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জ চৌধুরী ভারতীয় সেনাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। পাশাপাশি চিনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন তারা যেন কখনই ভারতীয়দের আর দেশের সেনাবাহিনীর ধৈর্য্য পরীক্ষা না করে। স্পষ্ট কথায় গগৈ জানিয়েছেন সেনাদের প্রতি আস্থা রয়েছে কংগ্রেসেরও।