সংক্ষিপ্ত

কতটা ভয়াবহ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা! এমনই জিজ্ঞাস্য বারবার ঘুরপাক পেয়েছে শুক্রবার রাত থেকে। কিন্তু, রাতের অন্ধকারে সেই ছবিটা অনুমেয় হলেও তাতে পরিষ্কার ধারনা পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে মিলল সেই ছবি।

 

আকাশ পথ থেকে দেখলে মনে হচ্ছে কোনও আচমকা ঝড় যেন ত্রস্ত-বিধ্বস্ত করে দিয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কামরাগুলোকে। কোনওটা পড়ে রয়েছে রেল ট্র্যাকের সামান্য বাইরে। আবার কোনও কামরা আবার সরে চলে গিয়েছে পাশের রেল ট্র্যাকের উপরে। আবার কোনও কামরার মুখটার ৯০ শতাংশ দুই রেল ট্র্যাকের মাঝে পড়ে রয়েছে। আকাশ পথে তোলা ভিডিও বুঝিয়ে দিচ্ছে কতটা ভয়ঙ্কর ছিল এই দুর্ঘটনা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ভাইরাল হয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার আকাশপথের ভিডিও। দেখলে মনে হচ্ছে কোনও খেলনা রেল গাড়ি ট্র্যাক থেকে ছিটকে একেবেঁকে পড়ে রয়েছে। অনেকটা ইংরাজি-র জিক-জ্যাক রেখার মতো। কোনও কোনও কামরা আবার পাশের লাইনে থাকা মালগাড়ির উপরেও উঠে গিয়েছে।

 

 

শনিবার দুপুর বেলা পর্যন্ত রেলওয়ে তাদের ১১ নম্বর বুলেটিনে ২৬১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। আর আহত-র সংখ্যা ৬০০ বলে জানিয়েছে। যদিও, অসমর্থিত সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে যে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার ভয়াবহতা দেখে তাঁর অনুমান যে মৃতের সংখ্যা সাড়ে চারশো ছাড়িয়ে যাবে। এদিকে, হাওড়ামুখী ডাউন বেঙ্গালুরু সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস শনিবার দুপুরে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছয়। এই ট্রেনে থাকা যাত্রীদের মধ্য়ে অনেকেই দাবি করেন যে ইঞ্জিন বদল হওয়ার তাদের ট্রেন চলতে শুরু করেছিল। আর সেই সময়ই বেঙ্গালুরু সুপার ফাস্টের শেষ প্রান্ত থেকে ২টি কামরা প্রথমে লাইনচ্যূত হয়ে যায়য যার ধাক্কায় লাইনচ্যূত হয় আপ লাইনে থাকা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৫টি কামরা। এরমধ্যে ৭টি কামরা অন্য রেল লাইনে থাকা মালগাড়ির উপর গিয়ে আছড়ে পড়ে। বাকি কামরাগুলো এদিক ওদিকে ছিটকে গিয়ে পড়ে।

 

করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই মারাত্মক যে জ্ঞানেশ্বরী ট্রেন দুর্ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। শনিবার ভোরেই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি রেলের তরফ থেকে শুক্রবার রাতেই আর্থিক ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছিলেন। শনিবারও ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থেকে জানান, দুর্গতদের সাহায্য করতে সর্বোতভাবে সাহায্য করছে রেল। যদিও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বালেশ্বরের সোরো হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনার জন্য রেল দফতরের আধিকারীকদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের দিকেই আঙুল তোলেন।