রাতভর চলল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের দাপট এখনও পর্যন্ত ভারতে ৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কিছু গাছ উপড়ে গিয়েছে এবং অনেক কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে রবিবারও পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে 

রাতভর চলল বুলবুলের তাণ্ডব। বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গের তিন জেলা - পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই চব্বিশ পরগণা। ধ্বংসলীলা চলেছে কলকাতাতেও। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বহু কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়েছে। শুধু জেলাতেই নয়, কলকাতার বুকেও গাছ পড়ে বহু রাস্তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একটাই স্বস্তি মৌসম ভবন থেকে জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক ঘন্টায় আরও শক্তি হারাবে বুলবুল। তবে এদিনও পশ্চিমবঙ্গের বহু জায়গাতেই মাঝারি থেকে ভারী ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

শনিবার সন্ধাবেলাই কলকাতার বালিগঞ্জের সানি পার্ক এলাকায় গাছ পড়ে মৃত্যু হয় এক যুহকের। রাতে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে গাছ পড়ে দুই মহিলার মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার নোয়াখালীতে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের। এছাড়া ওড়িশা উপকূলে বুলবুল এর প্রভাবে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে মৃত্যু হয়েছে আরও একজনের। এছাড়া গুরুতর আহত অন্তত ১৫ জন।

Scroll to load tweet…

বসিরহাটের গোবিন্দকাঠি গ্রামে ঘরের দেওয়াল চাপা পড়ে আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে জেলার পুলিশ সুপার কঙ্করপ্রসাদ বাড়ুই জানিয়েছেন এই ঘটনাটি এখনও নিশ্চিত করে জানা যায়নি। এর পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সম্পত্তিরও। সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, উত্তর চব্বিশ পরগণার হাসনাবাদে বেশ কিছু কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে। গাছ পড়েছে। উপরে গিয়েছে বহু বিদ্যুতের খুঁটি। সব মিলিয়ে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

শুধু জেলাতেই নয় কলকাতাতেও বহু জায়গায় গাছ পড়ে রাস্তা আটকে রয়েছে। সল্টলেকের এডি ব্লক ও পূর্বাচলে গাছ ভেঙে পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে। যান চলাচলও বন্ধ হয়ে রয়েছে। আপাতত কলকাতা ও বিধাননগর পুরসভার কর্মীরা গাছগুলি কেটে রাস্তা পরিষ্কার করার কাজ করছেন। বিমানবন্দরে যাওয়ার রাস্তায় হলদিরামের সামনে মূল রাস্তা ও পাশের সার্ভিস রোড দুই জায়গাতেই হাঁটু পর্যন্ত জল জমে রয়েছে। বিচালি ঘাটসহ কলকাতার বহু ঘাটেই এদিনও বন্ধ থাকছে ফেরি পরিষেবা।

Scroll to load tweet…

তবে আর খুব বেশি খেল দেখাবে না বুলবুল এমনটাই আশা করা হচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে উপকূলীয় জেলাগুলিতে গত ৬ ঘন্টায় ক্রমশ শক্তি হারিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়। পূর্ব থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে ১৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে ধাবিত হয়ে বুলবুল এখন বাংলাদেশ উপকূলে অবস্থান করছে।

Scroll to load tweet…

তবে রবিবারও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলির পাশাপাশি দুই চব্বিশ পরগণা ও নদীয়ায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। চলবে ঝোড়ো হাওয়াও। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে বাতাসের গতিবেগ বাড়তে পারে। ৩৫-৪৫ কিলোমিটার থেকে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সমুদ্রতটগুলিতে ঢেউয়ের আনুমানিক উচ্চতা থাকবে ০.৫ মিটারের কাছাকাছি।

Scroll to load tweet…

এরমধ্যে পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের এবং ভারী বৃষ্টির পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তিনি ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সমস্ত সম্ভাব্য সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Scroll to load tweet…