সংক্ষিপ্ত
অশান্তির আগুনে পুড়ছে দিল্লি
অনেকেই এর জন্য কপিল মিশ্রের বক্তৃতাকে দায়ী করছেন
কপিলের ওই মন্তব্যের সমালোচনা করেছিলেন দলের অনেক নেতাই
তারপরেও বিজেপি নেতা-র মুখে বা টুইটে লাগাম লাগছে না
অশান্তির আগুনে পুড়ছে দিল্লি। অনেকেই এর জন্য বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র-কেই সরাসরি দায়ী করছেন। গত রবিবার উত্তর-পূর্ব দিল্লি-তে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদকারীদের রাস্তা থেকে তুলে দেওয়ার জন্য দিল্লি পুলিশকে তিনদিন সময় দিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই দফায় দফায় সিএএ বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে হিংসাত্মক সংঘর্ষ ঘটে চলেছে। এখনও পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কমপক্ষে ২০০ জন আহত হয়েছেন। তারপরও কপিল-কে থামায় কে? দিনভর চলল তাঁর একের পর এক উস্কানিমূলক টুইট।
এদিন সকালেই তিনি টুইট করে বলেন, 'যারা বুরহান ওয়ানি এবং আফজাল গুরুকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে বিবেচনা করেননি তারাই কপিল মিশ্রকে সন্ত্রাসাবাদী বলছে। যাঁরা ইয়াকুব মেনন, উমর খালিদ এবং শারজিল ইমামকে মুক্তি দিতে আদালতে যান তারা কপিল মিশ্রর গ্রেপ্তারের দাবি করছেন। জয় শ্রী রাম'।
পরে আইবি অফিসারের দেহ উদ্ধারের পর তিনি ফের এক টুইট করে, তাঁর মৃত্যুর পিছনে আম আদমি পার্টির হাত আছে বলে দাবি করেন। আম আদমি পার্টির নেতা তাহির হুসেন-এর বাড়ি থেকে টেনে বের করেই অঙ্কিত শর্মা-কে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। আরও দাবি করেন তাহির হুসেনের বাড়ি থেকে একটানা গুলি চালানো হয়েছিল। পরে একটি ভিডিও পোস্ট করে তাহির হুসেনের বাড়ি থেকে ইঁট বৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন।
এখানেই শেষ হয়নি পরে বিকেলের দিকে তিনি ফের আরও একটি টুইট করে দাবি করেন, 'রাস্তা খোলানো আমাদের অধিকার, কোনও আইন লঙ্ঘন করা হয়নি। আমি আমার ধর্ম অনুসরণ করেছি, সত্য ও ধর্ম বিরাজ করবে'। পরে কোনও অজ্ঞাত কারণে টুইটটি মুছেও দেন।
গত রবিবার থেকে সিএএ সমর্থক ও বিরোধীদের তীব্র সংঘর্ষে দিল্লির আবহাওয়া অত্যন্ত গরম হয়ে রয়েছে। এরমধ্যে সব দলের নেতারাই কীভাবে উত্তেজনা কমানো যায় তার চেষ্টা করছেন। এমনকী, এদিন প্রধানমন্ত্রীও শান্তি রক্ষার আবেদন জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-ও এই বার্তা দিয়েই টুইট করেছেন। কিন্তু, কপিল মিশ্র-কে থামানো যাচ্ছে না। তাঁকে সমর্থন জুগিয়ে চলেছেন বিজেপির মেজো ও ছোট স্তরের নেতারাও।
গত রবিবার জাফরাবাদ-এর কাছে উত্তর-পূর্ব দিল্লি-র মৌজপুর এলাকায় সিএএ-র সমর্থনে এক সভা করেন এই বিজেপি নেতা। শনিবার রাত থেকে তার কাছাকাছিই একটি রাস্তায় সিএএ-র বিরুদ্ধে অবরোধ চলছিল। মঞ্চ থেকেই কপিল দিল্লি পুলিশকে 'রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য' সময় সীমা বেঁধে দেন। অন্যথায় তারাই রাস্তায় আঘাত হানবেন বলে হুমকি দেন। তাঁর এই বক্তৃতার কয়েক ঘন্টা পর থেকেই ওই এলাকায় সিএএ বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে তাব্র সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। সেই হিংসাই এখন বিশাল আকার ধারণ করেছে।
বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীর থেকে শুরু করে দিল্লির বিজেপি প্রধান মনোজ তিওয়ারি-ও দলীয় নেতার এই বক্তব্যের সমমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু ওই অবধিই। তারপরেও কপিলের মুখে বা টুইটে কোনও লাগাম লাগেনি।