সংক্ষিপ্ত

দেশের করোনা পরিস্থিতির ক্রমান্নতি ঘটছে

কিন্তু, দিল্লির অবস্থা ভয়াবহ

নীতি আয়োগ বলছে এমনটা দেশের কোথাও দেখা যায়নি

সামাল দিতে বহুবিধ ব্যবস্থা নিচ্ছে কেন্দ্র

 

দেশের করোনা পরিস্থিতির যখন ক্রমান্নতি ঘটছে, তখন দিল্লিতে একটা 'অভূতপূর্ব পরিস্থিতি' তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে নীতি আয়োগ। বর্তমানে দিল্লিতে প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে কোভিড আক্রান্তের ৩৬১ জন। কিন্তু , উত্সব মরসুমে যেভাবে রাজধানীতে মানুষ কোভিড বিধি লঙ্ঘন করেছেন তাতে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই দিল্লিতে সংখ্যা প্রতি ১০ লক্ষে কোভিড রোগীর সংখ্যা ৫০০ জনে পৌঁছে যাবে। দিল্লির মতো অবস্থা কিন্তু দেশের অন্যান্য মেট্রো শহরগুলিরও নয়। চেন্নাই-এ প্রতি ১০ লক্ষ জনসংখ্যায় এখন করোনা পজিটিভের সংখ্যা ২১৪। মুম্বই-এ ১৪০ এবং কলকাতায় আরও কম ৬৩।

নীতি আয়োগের সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের যে জায়গাগুলি হরিয়ানার মধ্যে পড়ছে সেই এলাকাগুলির অবস্থাও দিল্লির মতোই খারাপ। তবে উত্তরপ্রদেশের মধ্যে যে জায়গাগুলি পড়ছে সেখানকার অবস্থা কিন্তু অনেকটাই আলাদা। এর মূল করণ উত্তরপ্রদেশের বেশি বেশি করে নমুনা পরীক্ষা ও যোগাযোগ অনুসন্ধান করা, বলে মনে করা হচ্ছে। হরিয়ানার  গুড়গাঁও এবং ফরিদাবাদে এই মুহূর্তে ইতিবাচক হওয়ার হার প্রায় ২০ শতাংশ। আর প্রতি পজিটিভ রোগী পিছু পরীক্ষা হচ্ছে মাত্র ৫টি করে। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ, গৌতম বুদ্ধ নগরে ইতিবাচক হওয়ার হার মাত্র ৫  শতাংশ। আর প্রত্যেক পজিটিভ রোগী পিছু নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে ৩০ টিরও বেশি ।

Click and drag to move

নীতি আয়োগের কর্মকর্তারা বলেছেন, দিল্লির এই অবস্থার জন্য মূল কারণ, গত কয়েক সপ্তাহে দিল্লিতে কোভিড বিধি যথাযথভাবে মানা হয়নি। অথচ রাজধানীর অধিকাংশ মানুষই এখনও ভাইরাল সংক্রমণের জন্য সংবেদনশীল। এরসঙ্গে গোদের উপর বিষফোরার মতো জুড়েছে দিল্লি ও তার আশপাশের অঞ্চলের বায়ুর গুণমানের অবনতি। আগামী বছরের মার্চ মাসের শুরু পর্যন্ত বায়ুর অবস্থা এরকমই থাকবে, বলে মনে করা হচ্ছে। কাজেই আগামী কয়েক সপ্তাহে দিল্লিতে করোনা রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছে নীতি আয়োগ।

এই বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা করার মতো পরিকাঠামো দিল্লির নেই। অবস্থা সামাল দিতে ইতিমধ্য়েই কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লিতে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা বর্তমানের ৩,৪৯১ থেকে বাড়িয়ে ৬,৩৪১ করার পরামর্শ দিয়েছে। আইসিউ শয্যার পাশাপাশি অক্সিজেনের সুবিধা-সহ শয্যার সংখ্যাও ৯,৮৩৯ থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে ১০,৬৩০ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে প্লাজমা থেরাপির নির্দেশিকা জারি করা হবে। সেইসঙ্গে, কেন্দ্র রাজধানীতে প্রতিদিন কমপক্ষে ১ থেকে ১.৫ লক্ষ নমুনা পরীক্ষার সুপারিশ করেছে।

Click and drag to move

রাজধানীর হাসপাতাল ও কোভিড কেয়ার সেন্টারগুলিতে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়াতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অসম, তামিলনাড়ু, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলি থেকে প্রায় ৭৫ জন আধা-সামরিক বাহিনীর চিকিত্সক এবং ২৫০ জন প্যারামেডিককে দিল্লিতে নিয়ে আসছে। মঙ্গলবার থেকেই দিল্লিতে ১০,০০০ অতিরিক্ত আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা শুরু হবে। এর ফলে প্রতিদিনের প্রায় ২৮,০০০-২৯,০০০ নমুনা পরীক্ষা হবে দিল্লিতে। পরের কয়েক দিনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা সংখ্যা দ্বিগুণ করা হবে।