সংক্ষিপ্ত

সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কি ফের একবার বাঙালির দাপট? সূত্রের খবর, সিপিএম-এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ভাবা হচ্ছে মহম্মদ সেলিমের নাম।

সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কি ফের একবার বাঙালির দাপট? সূত্রের খবর, সিপিএম-এর (CPM) পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ভাবা হচ্ছে মহম্মদ সেলিমের (Md Salim) নাম।

এই মুহূর্তে তিনি দলের পলিটব্যুরোর সদস্য তথা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক। জানা যাচ্ছে, ছাত্র-যুবর প্রিয় নেতা সেলিমকে ভাবার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। রাজি হলে তিনিই হবেন দলের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক।

এখনও পর্যন্ত সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে একবারও কোনও বাঙালি সাধারণ সম্পাদক পায়নি লাল ঝাণ্ডা। তবে এবার কি সেই ধারা বদলাতে চলেছে তারা? সমগ্র বিষয়টি যেন সেইদিকেই ইঙ্গিত করছে।

প্রসঙ্গত, সীতারাম ইয়েচুরির মৃত্যুর পর আগামী ৬ মাসের জন্য সিপিএম কাউকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়নি। দলীয় বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত হতে চলা পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে পলিটব্যুরো যৌথভাবে দায়িত্ব সামলাবে।

সমন্বয়ক হিসেবে প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, দলের পলিটব্যুরোর সদস্য তথা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে ভাবার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। যদি তিনি রাজি হয়ে যান, তাহলে তিনিই হবেন পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক। আর সেটা হলে, ইতিহাসে প্রথমবারের জন্য সিপিএম একজন বাঙালি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে পাবে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার এবং শনিবার সিপিএম-এর পলিটব্যুরোর বৈঠক ছিল। তার আগে সেলিমকে রাজি করানোর এক দফা চেষ্টা করেছিলেন কারাটরা। সিপিএম সূত্রে খবর, সেলিম অন্তর্বর্তী সাধারণ সম্পাদক হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু পলিটব্যুরো এখনও আশা ছাড়তে নারাজ। তাই তারা আবারও তাঁকে ভাবতে সময় দিয়েছে।

কিন্তু কেন সেলিম? এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি কারণ সামনে উঠে আসছে। বিশেষ করে সংসদীয় রাজনীতিতে মহম্মদ সেলিমের বেশ ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি দুবারের রাজ্যসভা এবং দুবার লোকসভার সাংসদ ছিলেন। শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রীও ছিলেন।

তাছাড়া যুব সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। ফলে, দেশের প্রতিটি রাজ্য সম্পর্কেই একটা ধারণা রয়েছে তাঁর। আরও একটি বিষয় হচ্ছে, সর্বভারতীয় স্তরে কোনও একটি দলের সর্বোচ্চ নেতা হতে গেলে একাধিক ভাষা জানাটাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সেলিম বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি, হিন্দি এবং উর্দুতে যথেষ্ট সাবলীল। স্বভাবতই, সিপিএম-এর পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে আর যাদের নাম বিবেচনার মধ্যে রয়েছে, তারা প্রায় প্রত্যেকেই দক্ষিণ ভারতের নেতা। হিন্দি কিংবা উর্দু বলার বা বোঝার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে তাদের।

তাছাড়া বয়সের কারণেও পলিটব্যুরোর একাধিক নেতা সেলিমকে চাইছেন। কারণ, সিপিএম এখন নিয়ম করেছে যে, ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বে কাউকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হবে না। সেইসঙ্গে, দলের অন্দরে এই নিয়মও চালু হয়েছে যে, একজন ব্যক্তি একটি স্তরে তিনটি মেয়াদের বেশি সম্পাদকের দায়িত্ব সামলাতে পারবেন না।

এই কারণেই তিনটি মেয়াদের পরে কারাট সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরে গেছিলেন গত ২০১৫ সালে। এমনকি, আগামী পার্টি কংগ্রেসে সীতারাম ইয়েচুরিরও তৃতীয় মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। যদিও তিনি বেঁচে থাকাকালীনই দলের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছিল যে, দলের তিন-চতুর্থাংশের সমর্থন নিয়ে ফের তাঁকেই সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া যায় কি না। তবে সেই সুযোগ আর এখন নেই।

প্রসঙ্গত, মহম্মদ সেলিমের বয়স এখন ৬৭ বছর। ফলে, তিনি যদি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন, তাহলে তিনটি মেয়াদ থাকতে পারবেন। এহেন ভাবনাচিন্তা থেকেই সেলিমকে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের একটি বড় অংশ।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।