সংক্ষিপ্ত


কংগ্রেস দলের বাস্তবতা মেনে নিলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu And Kashmir) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ (Ghulam Nabi Azad)। তাঁর মন্তব্যে সুবিধা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee)।

'এখন কোনও ইউপিএ (UPA) নেই'। বুধবার, মুম্বইয়ে শরদ পওয়ারের (Sharad Pawar) সঙ্গে বৈঠকের পর, সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) এই মন্তব্য কাঁপিয়ে দিয়েছে জাতীয় রাজনীতি। কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে কেসি বেনুগোপাল (KC Venugopal) এবং অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Choudhury) এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তবে, কংগ্রেস (Congress) দলের বাস্তবতাটা মেনে নিলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ (Ghulam Nabi Azad)। এক দলীয় সমাবেশে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Elections 2024), তাঁর দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। 

বুধবার,  জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu And Kashmir) সীমান্তবর্তী জেলা পুঞ্চে (Poonch) এক পার্টি কনভেনশনে ভাষণ দেন তিনি। ৩৭০ ধারা (Article 370) বাতিল করা নিয়েই সেই সমাবেশ হলেও, সেখানে দাঁড়িয়ে কংগ্রেস দলের শক্তির মূল্যায়ন করেন গুলাম নবি আজাদ। নিজের দলের জয়ের সম্ভাবনা  নাকচ করে দিয়েছেন তিনি। আজাদ বলেছেন, এমন কোনও পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে না, যেখানে লোকসভায় ৩০০ জন সাংসদ নিয়ে কংগ্রেস দল পরবর্তী সরকার গঠন করবে। তিনি জানিয়েছেন, তিনি মনে প্রাণে চান, যে লোকসভা নির্বাচনে ৩০০টি আসন জয়ের লক্ষ্য অর্জন করুক কংগ্রেস, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা ঘটার কোনও সম্ভবনা তিনি দেখতে পাচ্ছেন না।

আরও পড়ুন - Mamata Vs Congress: মমতার পুরোনো ষড়যন্ত্র, পিছনে আছেন মোদী - বিস্ফোরক অধীর

আরও পড়ুন - Congress Vs Mamata: 'নিছক স্বপ্ন' - মমতাকে ছেড়ে কথা বলল না কংগ্রেস

আরও পড়ুন - কংগ্রেস নেতার বিদায়ে চোখে জল প্রধানমন্ত্রীর, নিজেকে গর্বিত হিন্দুস্তানী বললেন গুলাম নবি আজাদ

বলাই বাহুল্য, গুলাম নবি আজাদের মতো দীর্ঘদিনের পুরোনো কংগ্রেস নেতার এই মন্তব্য, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট (Third Front) গঠনের প্রক্রিয়াকে আরও উসকে দেবে। সাম্প্রতিক অতিতে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে, বিজেপি বিরোধী জোট গঠন করার কথা কেউ ভাবেননি। তবে, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ-সহ গত বেশ কয়েকটি বিধানসভা নির্বাচনে, কংগ্রেসের ভরাডুবির পর, শতাব্দী প্রাচীন দলের উপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না অন্যান্য বিজেপি বিরোধী দলগুলি। এরইমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সফলভাবে রুখে দেওয়ার পর, জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধীদের বিকল্প প্রধান মুখ হিসাবে উঠে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

বস্তুত, এই মুহূর্তে যেনতেন প্রকারে, বিভিন্ন রাজ্যে নিজেদের উপস্থিতির জানান দিয়ে, তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) দল নিজেদের জাতীয় দল হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। ইতিমধ্য়েই কংগ্রেসের ঘর ভাঙিয়ে মেঘালয় (Meghalaya) রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল হয়েছে টিএমসি। কংগ্রেস থেকে শিবির বদল করে তৃণমূলে এসেছেন গোয়ার (Goa) প্রাক্তন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীও। এসেছেন সুস্মিতা দেব (Susmita Deb), কীর্তি আজাদের (Kirti Azad) মতো কংগ্রেসি নেতারাও। শরদ পওয়ারের কন্ঠেও কিন্তু, কংগ্রেসকে বিশেষ পাত্তা না দেওয়ার সুরই শোনা গিয়েছে। বুধবার মমতার সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেন, কংগ্রেস দল শুধু নয়, বিজেপি বিরোধী সমমনস্ক সকল দলকেই তাঁরা জোটে সামিল করতে চান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিকল্প শক্তি গঠনের কাজ করছেন। 

এই অবস্থায় গুলাম নবি আজাদের এই মন্তব্য, কংগ্রেস দলকে আরই কোনঠাসা করে দেবে, তা বলাই বাহুল্য। প্রসঙ্গত, গুলাম নবি কিন্তু জি-২৩ গোষ্ঠীর নেতা। যাঁরা কংগ্রেস হাইকমান্ডকে চিঠি দিয়ে দলের মধ্যে নির্বাচন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।