সংক্ষিপ্ত

ক্লিনিকাল ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই অনুমোদন পেয়েছে কোভ্যাক্সিন

এই নিয়ে তাড়াহুড়ো করার অভিযোগ উঠেছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে

সোমবার সমালোচকদের একহাত নিলেন ভারত বায়োটেকের এমডি

কীভাবে এত তাড়াতাড়ি অনুমোদন পেল তাদের তৈরি কোভিড টিকা

আইসিএমআর-এর সহযোগিতায় কোভিড-১৯'এর ভ্যাকসিন, কোভাক্সিন তৈরি করেছে হায়দরাবাদের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ভারত বায়োটেক। রবিবারই ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল শর্তসাপেক্ষে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। কোভ্যাক্সিনের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায় শেষ হওয়ার আগেই এই সরকারি অনুমোদন নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছেন। একদিন পরই সেইসব সমালোচকদের একহাত নিলেন ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চিফ ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডাক্তার কৃষ্ণ এলা।

সোমবার, এক সাংবাদিক সম্মেলন করে ভারত বায়োটেকের এই শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন বা সিডিএসসিও-র নির্দেশিকা মেনেই তাঁদের তৈরি কোভিড টিককা-কে ব্যবহারের সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যদি প্রস্তুতকারী সংস্থা নিরাপদ হিসাবে আগেই নিজেদের প্রমাণ করে থাকে, সেই ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের তথ্যের ভিত্তিতেই পণ্যটির লাইসেন্স দেওয়া যাবে। ডাক্তার কৃষ্ণ এলা-র আরও দাবি, ভারতীয় সংস্থাগুলিকে ছোট করার একটা প্রবণতা বরাবরই রয়েছে। আর তার জন্যই 'কোভাক্সিন'কে এই সমালোচনা সহ্য করতে হচ্ছে। ভারত বায়োটেকের কাছে এই সমালোচনা গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি আরও বলেন, ভারত একটি উদ্ভাবনী দেশ, তারা কারোর নকল করে না। তাই এই ধরণের প্রতিক্রিয়া ভারত বায়োটেকের প্রাপ্য নয়। ভারতীয় সংস্থা বলেই পদ্ধতিগতভাবে সবকিছু ঠিক করেও সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা সহ্য করতে হয়। তিনি জানান, একটি সংবাদমাধ্যম তাঁদের টিকা-কে স্রেফ জল বলে দাগিয়ে দিয়েছে। বিজ্ঞানী হিসাবে এই ঘটনাগুলি তাঁকে ব্যথা দিয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন কেউ ব্রিটেনের অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন না? ভারত বায়োটেকের শীর্ষ কর্তা আরও বলেন, মার্ক সংস্থার তৈরি ইবোলা ভ্যাকসিন ক্লিনিকাল ট্রায়াল কোনওদিন শেষই করেনি, তাও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সেই ভ্যাকসিনকে লাইবেরিয়া এবং গিনি-র জন্য জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। তাই নিয়েও কেউ প্রশ্ন তোলে না।

ডাক্তার এলা আরও জানিয়েছেন, কোভ্যাক্সিনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল যে শুধু ভারতেই চলছে, তা নয়। যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ-সহ মোট ১১ টি দেশে পরীক্ষা চলছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তাঁরা শুধু একটি ভারতীয় সংস্থা নই, তাঁদের কার্যক্রম ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বব্যাপী। এছাড়া ভ্যাকসিনের জগতেও ভারত বায়োটেক একটি পুরোনো নাম। ১২৩টি দেশে তাঁদের বিভিন্ন ভ্যাকসিন রফতানি হয়। সেইসঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে ভারত বায়োটেক-এর পক্ষ থেকে কোভাক্সিন ভ্যাকসিনের বিকাশ নিয়ে ৭০টিরও বেশি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। কাজেই ভ্যাকসিনটি সম্পর্কে তথ্য প্রকাশের অস্বচ্ছতার দাবিও তাদের ক্ষেত্রে খাটে না।