সংক্ষিপ্ত

লকডাউন তাই রমজান মাসে মসজিদে যেতে পারছেন না মুসলমানরা

সারা দেশেই মৌলবিরা এই বিষয়ে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বারবার সাবধান করেছেন

এরমধ্যেই সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে ৭০০ মানুষ একসঙ্গে নামাজ পড়ছেন

এটি কি সত্যি না ভুয়ো

 

একদল পুরুষ, তাদের মাথায় ফেজ টুপি। লকডাউনের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব ও বড় সমাবেশ না করার নিয়ম উড়িয়ে একসঙ্গে বসে নামাজ পড়ছেন। এমন একটি ছবিই গত কয়েকদিন ধরে সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই ছবির সঙ্গে ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি তামিলনাড়ুর ভেলোর জেলার। লকডাউনের মধ্যেই ৭০০ জন পুরুষ এক জায়গায় জমায়েত হয়ে নামাজ পড়ছেন। ফেসবুক, টুইটার, এমনকী হোয়াটসঅ্যাপেও এই ছবি ও বার্তা শেয়ার করে, মুসলমান সম্প্রদায়ের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে। আরও বলা হচ্ছে শুধু তাবলিগি জামাত সদস্যরাই নন, মুসলিম গোটা সম্প্রদায়ই ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী।

ছবিটি ককি সত্যি, নাকি কোনও ফেক ছবি? লকডাউনের মধ্যে মুখে কোনও মাস্ক নেই, এই অবস্থায় সত্যিই কি ৭০০ মানুষ এক জায়গায় জড়ো হয়ে নামাজ পড়ছেন? গুগল সার্চ ইঞ্জিনে ছবিটি ফেলে বিপরীত চিত্র অনুসন্ধানের মাধ্যমে, এশিয়ানেট নিউজ বাংলা দেখতে পেয়েছে ছবিটি ২০১৮ সালে প্রথম ইন্টারনেটে প্রকাশিত হয়েছিল। ছবিটি তামিলনাড়ুর-ও নয়, এটি উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ শহরের।

একটি ফটো এজেন্সির ওয়েবসাইটে স্টক ফটো হিসাবে ছবিটি প্রকাশ করা হয়েছিল ১৭ মে, ২০১৮ সালে। সঙ্গে ক্যাপশনে লেখা ছিল, 'মুসলমানরা এলাহাবাদে রমজান মাসে রাতের নামাজ পড়ছেন' ছবিটি তুলেছিলেন প্রভাত কুমার ভার্মা নামে এক চিত্র সাংবাদিক। এশিয়ানেট নিউজ বাংলার কাজ আরও সহজ করে দিয়েছে তামিলনাড়ুর পুলিশ। তারাও টুইটারে জানিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত এই ছবি ও তথ্য সর্বৈব ভুয়ো। দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর নিবন্ধন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

অর্থাৎ, সব দিক খতিয়ে দেখে এটাই বলতে হয় যে, উত্তরপ্রদেশের ২০১৮ সালে তোলা একটি ছবিই এই ক্ষেত্রে ভুয়োভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, করোনাভাইরাস বিপর্যয়ের সময়ে যখন প্রধানমন্ত্রী-সহ অন্যান্য জাতীয় নেতারা বারবার জাতীয় সংহতির আবেদন করছেন, তখন এই ধরণের ভুয়ো খবর ছড়িয়ে সমাজে ভেদাভেদের চেষ্টা চলছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক, এই ছবিটি শেয়ার করা অনেকেই নিজেদের বিজেপি-র সঙ্গে সংযুক্ত বলে দাবি করেছেন। এই ধরণের বার্তা পশ্চিমবঙ্গেরও অনেক জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। এই বিষয়ে সতর্ক থাকুন। গুজবে নয়, বিপর্যয়ের এই সময়ে, সঠিক তথ্যে বিশ্বাস করুন।