সংক্ষিপ্ত
অভিযুক্ত বিধু সোয়াইন মূলত পঞ্জাব, দিল্লি, অসম, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশ্যার মহিলাদের সঙ্গেই প্রতারণা করেছে। সে বেছে বেছে মধ্যবয়সী ও বিবাহবিচ্ছিন্না নারীদের লক্ষ্য করেই টোপ ফেলত। নিজেকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে মধ্যবয়সী কিছুটা একা এমন মহিলাদের টার্গেট করত।
অবাক করা কাণ্ড। ওড়িশার (Orisha) এক ব্যক্তি ভুয়ো ডাক্তার (Fake Doctor) সেজে একের পর এক প্রায় ১৪ জন মহিলার (14 women) সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাদের বিয়ে করে ঠকিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েক জন মহিলার সঙ্গে প্রতারণা করছে বলেও অভিযোগ। অভিযুক্তের নাম বিধু প্রকাশ সোয়াইন (Bidhu Prakash Swain)। ৫৪ বছরের এই ব্যক্তি ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়ার জেলার বাসিন্দা। তিনি বেশিরভায় সময়ই ওড়িশার বাইরে থাকতেন। এই ব্যক্তি যেসব মহিলাদের সঙ্গে প্রতারণ করেছে তাদের মধ্যে এক রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। তেমনই রয়েছেন দিল্লির শিক্ষিকা ও কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর এক সিনিয়র কর্তাও। রীতিমত সমাজের উচ্চবিত্তে ঘোরাফেরা ছিল এই জাল ডাক্তারের।
অভিযুক্ত বিধু সোয়াইন মূলত পঞ্জাব, দিল্লি, অসম, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশ্যার মহিলাদের সঙ্গেই প্রতারণা করেছে। সে বেছে বেছে মধ্যবয়সী ও বিবাহবিচ্ছিন্না নারীদের লক্ষ্য করেই টোপ ফেলত। নিজেকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে মধ্যবয়সী কিছুটা একা এমন মহিলাদের টার্গেট করত। তাদের সঙ্গে আলাপ করত। তাদের বন্ধু হিসেবে বেছে নিত। একাধিক বিবাহ সাইটেরও সদস্য ছিল সে। সেখান থেকেও মহিলাদের টোপ দিত বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিধু প্রকাশ সোয়াইনের মূল টার্গেট ছিল উচ্চ শিক্ষিত, সরকারি আধিকারিক হিসেবে নিযুক্ত মহিলারা। এছাড়াও বেসরকারি সংস্থার উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদেরও টার্গেট করেছিল সে। মহিলাদের টাকা পয়সা, ধনসম্পত্তির ওপরই মূলত নজর ছিল তার।
ঘটনার তদন্তে নেমে রীতিমত চোখ কপালে উঠেছে ওড়িশার পুলিশের। ভূবনেশ্বের ডিএসপি উমাশঙ্কর দাস জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ও কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর সিনিয়র কর্তার সঙ্গেও প্রতারণা করেছে বিধু সোয়াইন। ২০১৮ সালে সিআরপিএফ আধিকারিককে বিয়ে করে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছিল সে। পরে এক পঞ্জাবি মহিলাকে বিয়ে করেছে। সেই বিয়েতেও ১১ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছিল।
তবে শুধু বিয়েই নয়। সোয়াইন রীতিমত সন্তাদের বাবাও হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী একাধিক মহিলার সঙ্গে বিয়ের কারণে পাঁচ জন সন্তানও রয়েছে তার। সে প্রথম বিয়েটি করে ১৯৮২ সালে। তারপর ২০০২ সালে আরও একটি বিয়ে করে। ২০০২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বেশ কয়েকজন মহিলার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে। তাদেরও প্রতারিত করেছিল ডাক্তার সেজে। পুলিশ সূত্রের খবর ডাক্তার সেজে বিয়ে করত। বেশ কিছুদিন মহিলার সঙ্গে থাকত। কিন্তু তারপর কাজের সূত্রে উত্তর পূর্ব বা ওড়িশা যাওয়ার নাম করে সেখান থেকে পাততাড়ি গোটাত। কিন্তু মহিলার বাড়ি ছেড়ে আসার বেশ কয়েক দিন পরেও মহিলার ও তার বাবা মা বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত।
২০২১ সালে দিল্লির এক শিক্ষিকার দায়ের করা অভিযোগের জেরেই গ্রেফতার করা হয়েছে বিধু সোয়াইনকে। মহিলার জানিয়েছেন নতুন দিল্লির আর্য সমাজ মন্দির তাঁকে বিয়ে করেছিলেন। মহিলার দায়ের করা অভিযোগের পর সোয়াইনকে ভূবনেশ্বরের খান্দগিরি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেখানে একটি ভাড়া বাড়ি ছিল সোয়াইনের ডেরা। সেই ঘটনারই তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে সে আরও ১৩ জন মহিলাকে বিয়ে করে ও তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে। মহিলাদের সঙ্গে সে মূলত সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ও বিয়ের সাইটগুলিতেও আপাল করত।
তবে শুধু বিয়ে নয় এক আগে চাকরি দেওয়ার নাম করে একাধিক তরুণের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ডাক্তারিতে ভর্তির নাম করেই বহু ছাত্রর থেকে টাকা তুলেছে সে। সেই সময় সোয়াইন নিজেকে সেন্ট্রাল হেলথ এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং এর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল হিসেবে তুলে ধরেছিল। সব মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা প্রতারণা করেছে।
পুলিশ জানিয়েছেন সোয়াইনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রয়োজনে একটি মহিলা দলও গঠন করা হবে। যেসব মহিলাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে তাদেরও জিজ্ঞাসাবদ করা হবে।তার জালিয়াতি বিষয়ে তদন্তের জন্য আর্থিক তদন্তও করা হবে।
'আমি মিথ্যা কথা বলি না',পঞ্জাবে মোদীর সঙ্গে কেজরিওয়ালকে কটাক্ষ রাহুলের
'মারা গেলে লাল গোপাল রেখে আসব', স্ত্রীর ইচ্ছাপুরণে প্রেমের দিনে আত্মঘাতী তরুণ
দাউদের বোন হাসিনা পার্কারের বাড়িতে ইডি, একযোগে ১০ স্থানে তল্লাশি