সংক্ষিপ্ত


পুলিশ জানিয়েছে মৃতরা হল কালু দেবী, মমতা ও কমলেন। কালু দেবীর দুই সন্তানও রয়েছে মৃতের তালিকায়। একজনের বয়স চার। অন্য শিশুটির বয়স মাত্র ২৭ দিন। কালুদেবী, মমতা আর কমলেশ তিন বোন। তিন বোনই কিন্তু বাল্যবিবাহের বিপক্ষে ছিলেন।

মর্মান্তিক এক ঘটনার সাক্ষী থাকল রাজস্থানের জয়পুর। দুদু শহরের একটি কুঁয়ো থেকে উদ্ধার হয়েছে পাঁচচি নিথর দেহ। যারমধ্যে দুটি শিশুর মৃতদেহ রয়েছে। আর তিনটি মৃতদেহ বিবাহিত তিন মহিলার। যারমধ্যে দুই মহিলার গর্ভে সন্তান ছিল বলেও তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। প্রত্যেককে হত্যা করে কুঁয়োর মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলেও প্রাথমিক তদন্তে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। 


পুলিশ জানিয়েছে মৃতরা হল কালু দেবী, মমতা ও কমলেন। কালু দেবীর দুই সন্তানও রয়েছে মৃতের তালিকায়। একজনের বয়স চার। অন্য শিশুটির বয়স মাত্র ২৭ দিন। কালুদেবী, মমতা আর কমলেশ তিন বোন। তিন বোনই কিন্তু বাল্যবিবাহের বিপক্ষে ছিলেন। তাঁরা পড়াশুনা করে চাকরি করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের অভিভাবকরা সেই পথে না গিয়ে জোর করে তাদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল। এমন মানুষদের সঙ্গে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়ছিল যারা ছিল মদের নিশায় আশক্ত। দীর্ঘ দিন ধরেই তাদের মারধর করা হত। তাদের স্বামীরা পঞ্চম ও ষষ্ঠশ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। তাই কোনও দিনও  নিহত তিন বোনের সঙ্গে স্বামীদের   মনের মিল হয়নি। পারিবারিক আশান্তি ছিল নিত্য দিনের ঘটনা। 

কালুদেবী (২৭) মমতা (২৩) আর কমলেশ (২০) তিন বোন আর তাদের দুই শিশু সন্তান বুধবার সকাল থেকেই নিখোঁজ ছিল। প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত পুলিশ  তল্লাশি চালিয়েও তাদের কোনও সন্ধান পায়নি। শনিবার স্থানীয় একটি কুঁয়োর ভিতর থেকে পাঁচটি দেহ একসঙ্গে উদ্ধার করে পুলিশ। 

প্রতিবেশীরা জানিয়েছে তিন বোন আর তাদের দুই সন্তানই পারিবারিক নির্যাতনের শিকার। দিন পনেরো আসে কালুদেবীকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এমন মার মেরেছিল যে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। তিনি চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। মাত্র ১৫ দিন আগেই তিনি হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন। কমলেশ ও মমতাও গর্ভাবতী ছিলেন। যেকোনও সময়ই তাঁরা সন্তান প্রসব করতে পারতেন। 

প্রতিবেশীদের অভিযোগ তিন বোনের ওপর পণের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু  সেই পণের টাকা ও সামগ্রী না পাওয়ায় তিন বোনকেই বেধড়ক মারধর করা হত। তাদের বিয়েও হয়েছিল ১৮ বছর হওয়ার আগে। একই পরিবারে তিন ভাইয়ের সঙ্গে তিন বোনের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তাঁরা গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েছিলেন।  পরিবারের কাছ থেকে একাধিকবার সাহায্য চেয়েও তারা পায়নি বলেও জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।