সংক্ষিপ্ত
দেশের ক্ষমতার করিডোর হিসেবে পরিচিত দিল্লি। তবে শুধু দিল্লি নয় বাকি রাজ্যতেও পর্দার আড়ালে অনেক কিছুই ঘটে। কোনওটা ষড়যন্ত্র। কোনওটা আবার ক্ষমতার খেলা।
বিড়াল থুড়ি নেতাদের ভাগ্যে শিঁকে ছিঁড়বে কি?
একদিকে কর্ণাটক, অন্যদিকে কেন্দ্র। দুই তরফেই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণে লোলুপ হাতছানি। যদিও কর্ণাটকের রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা নেতারা বুঝে গিয়েছেন কেন্দ্রের শিঁকে এখনই ছিঁড়বে না। তার বদলে কর্ণাটকের দিকেই নজর দেওয়া যাক। কারণ কেন্দ্রে ইতিমধ্যেই চারজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সেরাজ্য থেকে। তবে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকা শিবমোগার সাংসদ বি ওয়াই রাঘবেন্দ্র, কালবুর্গির সাংসদ উমেশ যাদব কল পাওয়ার দৌড়ে বেশ এগিয়ে। লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের মুখ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে খুশি করলে কপাল খুলে যেতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজেই কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজা বোমাইকে বলেছিলেন যে ইয়েদুরাপ্পাকে চটিয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। তাই সাবধানে বল ধরে খেলছেন বোমাইও। যদিও তার ভোট রয়েছে পাতিল ইয়াতনাল, অরবিন্দ বেল্লাদ বা সি পি যোগেশ্বরের জন্য। এরমধ্যে একটাই ব্রহ্মাস্ত্র হাতে আছে, তা হল ইয়েদুরাপ্পার ছেলে বি ওয়াই রাঘবেন্দ্রকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া।
সাধারণত রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতারা নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে নিজের পরিবারের ঘনিষ্ঠদের ভালো জায়গা পাইয়ে দেওয়া চেষ্টা করেন। কিন্তু উল্টো সুরে গাইছেন কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তিনি চাইছেন রাজনৈতিক উত্থান পতনের সাক্ষী থাকুক তাঁর ছেলে যথীন্দ্র। সিদ্দারামাইয়ার চিন্তাভাবনা তাঁর ছেলেকে যে বিপদের মুখে ফেলবে, তেমনই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য
তামিলনাড়ু বিধানসভা রাজ্যপাল আরএন রবির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আচমকা একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে সেই প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের বিরোধিতা শুরু করেছে ডিএমকে। প্রথম প্রথম ডিএমকে-র ভোলবদল দেখে চোখ কপালে উঠলেও, বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন বেশ সূক্ষ্ম একটা চাল এতে খেলছে ডিএমকে। কেন্দ্রকে এভাবে চটাতে চাইছে না তারা। হাঁড়ির খবর বলছে দিল্লিকে হাতে রাখতেই এই মুখোশ বদল। দক্ষিণ ভারতে একটি শক্তিশালী শক্তি হিসাবে দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে, ডিএমকে সমস্ত বিরোধী দলকে তার হাতের তালুতে রাখার লক্ষ্যে রয়েছে। পার্টি ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে তারা মাত্র ৫৫ শতাংশ লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। রাজ্যটি ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়া রাজ্যসভার চারটি আসন খালি হওয়াও চোখের সামনে ঝোলানো সুস্বাদু গাজরের মতো অনুঘটকের কাজ করে।
গরীব দল, কোটিপতি নেতা
একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন তাঁর দল অত্যন্ত গরীব। বাস্তবিকই। বড়ই গরীব তৃণমূলের ভাঁড়ারে নাকি মাত্র ৪৭ হাজার টাকা রয়েছে। অন্তত ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট তো সেরকমই বলে। মানুষ দিব্যি মেনেও নিয়েছিলেন মা মাটি মানুষের সেই স্বগতোক্তি। কিন্তু গোল বাঁধল দিন কয়েক পরে। আচমকা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলে হাতে ধরা পড়ে গেলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূলের তথাকথিত সেকেন্ড ইন কমান্ড পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু কেন গ্রেফতার হতে হল তাঁকে! নিন্দুকেরা বলেন এসএসসি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে জেলবন্দি পার্থ। আর খেরোর খাতা বলছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা। এত টাকা দেখে চোখ উলটে গিয়েছে তদন্তকারী অফিসারদেরই। এখানেই শেষ নয়। সম্প্রতি তৃণমূলের বিধায়ক জাকির হুসেনের বাড়ি থেকে হিসেব না মেলা ১৫ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে।
জাকির হুসেন যদিও মুখে বলছেন যে এই টাকা তাঁর ব্যবসার কাজে লাগে। তবু তার হিসেব না থাকায় সাফাইটা ঠিক জোরদার হচ্ছে না জাকিরের। তৃণমূলের মুখে আবারও কালি, তবে কুলুপ নয়। তারা জোর দিয়ে সেই ব্যবসার সূত্রে টাকার কথাই বলে যাচ্ছে। যদি তাই হয়, তবে তার হিসেব কোথায়, তার অঙ্কটা এখনও মেলানোর চেষ্টা করছে দল। আর সেখানেই প্রশ্ন, তৃণমূল দল যদি সত্যি এত গরীব, তবে তাদের সদস্যরা কোটিপতি কীভাবে। কে দেবেন উত্তর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?