সংক্ষিপ্ত
এস-২০০ মিসাইল সিস্টেমগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে মোতায়েন করার আগে রাশিয়ান কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সেটির গ্রহণযোগ্যতা পরীক্ষা করে দেখা হবে বলেও সূত্রের খবর।
ভারতকে আরও শক্তিশালী করতে রাশিয়া থেকে আনা হয়েছে এস-৪০০ মিসাইল (S-400 Missile)। প্রথম দফায় এটি ভারতের এসেছে ২০ ডিসেম্বর অর্থাৎ সোমবার। এটি রাখা হয়েছে পঞ্জাব সেক্টরে (Punjab Sector)। অপর একটি এজাতীয় প্রতিরক্ষা সিস্টেন পূর্ব ভাবতে রাখা হবে বলেও সেনা বাহিনী সূত্রের খবর। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের সময় এই মিসাইল নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ৬ ডিসেম্বর ও নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে আলোচনাও হয়। সেই সময়ই দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছিল।
এস-২০০ মিসাইল সিস্টেমগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে মোতায়েন করার আগে রাশিয়ান কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সেটির গ্রহণযোগ্যতা পরীক্ষা করে দেখা হবে বলেও সূত্রের খবর। ২০১৮ সালে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে ৪০ হাজার কোটির টাকার এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের পাঁচটি স্কোয়াড্রন কেনার জন্য একটি চুক্তি করেছিল। আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে রাশিয়ার এই অস্ত্রের সবকটি ভারতকে সরবরাহ করবে বলেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ৪০ কিলোমিটার, ১০০ কিলোমিটার, ২০০ কিলোমিটার, ও ৪০০ কিলোমিটার রেঞ্জসহ চারটি ভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্রে পরিপূর্ণ এই মিসাইল সিস্টেম। নতুন এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিপক্ষের ফাইটার এয়ারক্র্যাফ্ট, ব্যালিস্টিক মিসাইল, এয়ারবর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেমকে শনাক্ত করতে ও টার্গেট করতে পারবে।
পঞ্জাব সেক্টরকে বেছে নেওয়ার মূল কারণ হল প্রতিপক্ষ পাকিস্তান ও চিনের আকাশপথে হুমকির মোকাবিলা করা। পঞ্জাব সেক্টরে রাখার মূল কারণ হল- দুইটি দেশের হুমিক একসঙ্গে মোকাবিলা করা। মস্কোর সঙ্গে এ-৪০০ মিসাইল চুক্তির জন্য আগে একাধিকবার ভারতকে সতর্ক করেছিল আমেরিকা। CAATSA (Vountering American's dversaries Through Sanctions Act) অধীনে ব্যবস্থা নেওযার জন্যই সতর্ক করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালের শেষদিকে ভারতে প্যাট্রিক অ্যাডভান্স ক্যাপাবিলিটি -৩ মিসাইল ও টার্মিলাল আই অল্টিটিউড এলায়া ডিফেন্স মিসাইলের মত সারফেস টু এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দেবে বলেও জানিয়েছিল। তবে সেটির এস -৪০০ -র মত অপারেশনাল ক্ষমতা নেই।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, আরও একটি এস-৪০০ মিসাইল এসে সেটি রাখা হবে উত্তর পূর্বের কোনও একটি রাজ্যে। প্রতিরক্ষা বিশেষদের মতে এস-৪০০ মিসাইল ভারতের কাছে গেমচেঞ্জার হতে পারে। হুমকির কথা বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান হয়েছে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভিকে চতুর্বেদী বলেছেন, এটি একটি গেম-চেঞ্জার হবে পারে। এটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। এটি একসঙ্গে চারটি টার্গেটকে শনাক্ত করতে পারে। পাশাপাশি ১০০টিরও বেশি লক্ষ্য ট্র্যাক করতে পারে।
এয়ার ডিফেন্স থিয়েটার কমান্ড ২০২২ সালে এটির আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সিস্টেমগুলি আমাদের প্রতিরক্ষা সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করবে। তিনি আরও বলেছেন এটি এমন জায়গায় রাখা হচ্ছে যেটি উত্তর ও পশ্চিম - উভয় দিক থেকে আসা প্রতিরক্ষা হিমকি মোকাবিলা করতে পারবে। আগামী দিনে এটি পূর্ব ভারতের কোনও একটি সেক্টরে রাখা হবে। ভারত ছাড়া এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে এজাতীয় অস্ত্র শুধুমাত্র চিনের রয়েছে। চিনের হাতে রয়েছে এস -৩০০। তার তুলনায় কিছুটা শক্তিশালী ও আধুনিক অস্ত্র পাচ্ছে ভারত। রাশিয়ার হাতে রয়েছে এস -৫০০, এটি আরও অধুনিক ও শক্তিশালী। কিন্তু মস্কো সেটি বিক্রি করতে আগ্রহী নয়।
নিরাপত্তা ও কৌশলগত বিশ্লেষক মেজর জেনারেল অশোক কুমারের মতে, ভারতের বিতর্কিত সীমান্তের একপাশে রয়েছে পাকিস্তান ও অন্যদিকে রয়েছে চিন। এই পরিস্থিতি সামান দিতে ভারতেকে প্রতিরক্ষায় আরও শক্তিশালী হতে হবে। ভারতীয় বায়ু সেনার কাছে এস-৪০০ যথেষ্টই কার্যকর হবে।