সংক্ষিপ্ত

  • সুষমা স্বরাজকে ইশারার মাধ্যমে শ্রদ্ধা গীতা-র
  •  পাকিস্তানে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ছিলেন গীতা
  •  ২০১৫-তে গীতাকে দেশে ফিরিয়ে আনেন সুষমা
  • গীতাকে 'ভারতের কন্যা' বলেছিলেন তিনি 

গীতা। নামটা খুব-ই শোনা শোনা ঠেকছে সকলের কাছে। আসলে এই গীতাই ২০১৫-তে পা রেখেছিলেন ভারতে। আর তাঁকে যিনি পাকিস্তানের মাটি থেকে দেশে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, তিনি হলেন সুষমা স্বরাজ। প্রয়াত প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী গীতার নাম দিয়েছিলেন 'ভারতকন্যা' 

সেই গীতা কিন্তু ভোলেননি সুষমা স্বরাজকে। তাঁর মৃত্যুর খবর কানে আসতেই তিনি ইশারায় প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ-কে শেষ শ্রদ্ধা জানান। ইশারা এই কারণে যে মূক ও বধির গীতা। ইশারা ছাড়া তাঁর পক্ষে কাউকে মনের কথা ব্যক্ত করা সম্ভব নয়।

ভারতের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে অসহায় অবস্থায় ছিলেন গীতা। এবং দেশে ফিরেছিলেন সুষমা স্বরাজের সহায়তায়। ২০০৩ সালে ১১ বছর বয়স থাকাকালীন অসাবধানতা বসত ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে গিয়েছিলেন গীতা। পাকিস্তানি অশ্বারোহী সৈন্যদল লাহোরের কাছে খুঁজে পেয়েছিল তাকে। পরে ওই সৈন্যরা এধি নামে একটি সংগঠনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন গীতাকে। তবে তখনও 'গীতা' নামকরণ হয়নি তার। এধি ফাউন্ডেশনের মুখ্যসচিব বিলকুইজ এধি তার নাম দিয়েছিলেন গীতা। এই ঘটনার দীর্ঘ ১৫ বছর পর মানে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে গীতাকে নিজ দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন সুষমা। তখন বিজেপি সরকারের বিদেশমন্ত্রী পদে ছিলেন তিনি। বহু চেষ্টা করে শেষে গীতাকে দেশে ফেরাতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। 

তবে তার পরেও সমস্যা কমেনি এতটুকু। দেশে ফিরেই আবার সমস্যা শুরু হয়েছিল গীতার পরিবার নিয়ে। অনেকেই গীতাকে নিজের মেয়ে বলে দাবী করেছিলেন। তবে তাদের কারুর সাথেই মেলেনি ডিএনএ টেস্টের স্যাম্পেল। তাই  পরিবার খুঁজে না পাওয়ায় গীতাকে 'ভারতের কন্যা' বলেছিলেন তিনি। ইন্দোরে রিপোর্টারদের জানিয়েছিলেন, গীতা হল ভারতের কন্যা। যদি সে নিজের পরিবার খুঁজে না পায় তাহলেও কোনওভাবেই পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে না তাকে। ভারতীয় সরকার দ্বারাই লালিত হবে সে। পরে গীতার জন্য জীবনসঙ্গীও খুঁজে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। 

নিজের প্রতি তাঁর এই ভালোবাসা কোনোভাবেই ভুলে যায়নি গীতা । সুষমা স্বরাজের প্রয়াণে শোকাহত তো ছিলই, সঙ্গে তাঁকে ইশারার মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তিনি।