সংক্ষিপ্ত

  • নয় ঘন্টার কার্যদিবস চালু করতে চাইছে ভারত সরকার
  • বর্তমানে দৈনিক কাজের সময় আট ঘন্টা
  • শ্রম মন্ত্রকের খসড়া মজুরি কোডে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে
  • জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি

 

দৈনিক কাজের সময় আট ঘন্টা থেকে বাড়িয়ে নয় ঘন্টা করতে চলেছে। শ্রম মন্ত্রকের খসড়া মজুরি কোডে এই পরামর্শই দিয়েছে। তবে সম্ভবত ট্রেড ইউনিয়গুলির ৭ক্ষোভের আশঙ্কাতেই মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ সম্পর্কে কোনও পরামর্শ দেওয়া হয়নি। ভবিষ্যতে মজুরি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিনটি ভৌগলিক শ্রেণিবিন্যাসের প্রস্তাব বাদ বেশিরভাগ পুরোনো নিয়মেরই পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে।

মজুরি সম্পর্কিত শ্রমবিধানের মতো, মজুরি সংক্রান্ত খসড়া বিধিটিতেও সরকার ন্যূনতম মজুরির সম্পর্কে কোনও কথা বলেনি। এতে বলা হয়েছে মজুরি সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি ভবিষ্যতে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ দেবে। গত জানুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের একটি ইন্টারনাল প্যানেল জানিয়েছিল, ভারতের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরির একটি নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করা উচিত। নূন্যতম মাসিক মজুরি ৯,৭৫০ টাকার পাশাপাশি ২০১৮ সালের জুলাই মাসের হিসাবে প্রতিদিন ৩৭৫ টাকা করে দিনমজুরি পায়া উচটিত বলে মত দিয়েছিল সাত সদস্যের সেই প্যানেল। এছাড়া শহুরে শ্রমিকদের জন্য ১৪৩০ টাকার আবাসন ভাতা দেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল।

খসড়াটিতে আরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যে প্রতি পাঁচ বছর বা তার কম সময়ে ফ্লোর ওয়েজ সংশোধন করা হবে। এর জন্য আসন্ন ডিসেম্বর মাসেই এই খসড়া বিধিটি চূড়ান্ত করা হবে।এ ছাড়া খসড়া বিধি অনুসারে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের সময় দেশকে তিনটি ভৌগলিক বিভাগে বিভক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ৪০ লক্ষ বা তার বেশি জনসংখ্যার মেট্রোপলিটন অঞ্চল, ১০ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষের মধ্যে জনসংখ্যার অ-মহানগর অঞ্চল এবং গ্রামীণ অঞ্চল এই তিন ভাগে ভাগ করে মজুরি নির্ধারণ করা হবে।

খসড়া প্রস্তাবটি সম্পর্কে শুরুতেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে দৈনিক আট ঘন্টা হিসেবে ২৬ দিনের কাজের মাসিক বেতন গণনা করা হয়ে আসছে। এর পরিবর্তন অধিকাংশ ট্রেড ইউনিয়নগুলিই মানতে পারছে না।

সেন্টার ফর ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নের সহ সভাপতি একে পদ্মনাভন জানিয়েছেন, বেশ কিছু সংস্থায় এখনই দিনে নয় ঘন্টা করে কাজ করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এবার সরকারি তরফে আইন করে এই বিষয়টিকেই প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। মজুরি কোডের মতো এই নিয়মেরও তাঁরা বিরোধিতা করবেন বলে জানিয়ছেন পদ্মনাভন। এমনকী আরএসএস পন্থী ভারতীয় মজদুর সংঘের (বিএমএস) সভাপতি সিকে সাজি নারায়ণন-ও এই খসড়া বিধি নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তাঁর মতে এই মজুরি কোডের নিয়মে নয়া ভারতের দৃষ্টিভঙ্গির অভাব রয়েছে। তাই তাঁরাও এর বিরোধিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।