সংক্ষিপ্ত

রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে রাজ্যপালকে নিয়ে নালিশ জানালেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। অবিলম্বে বাংলার রাজ্যপালকে সরানোর জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন তিনি।

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) সঙ্গে রাজ্যের (State Government) সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। আর এবার সেই আঁচ পৌঁছে গেল দিল্লির (Delhi) দরবারে। সরাসরি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের (Ram Nath Kovind) কাছে রাজ্যপালকে নিয়ে নালিশ জানালেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee)। অবিলম্বে বাংলার রাজ্যপালকে সরানোর জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন তিনি। বাংলার গণতন্ত্রের স্বার্থেই (Democracy of Bengal) রাজ্যপালকে সরানো প্রয়োজন বলে তিনি জানিয়েছেন। 

আজ থেকেই সংসদে শুরু হয়েছে বাজেট অধিবেশন। আগামীকাল অর্থাৎ ১ ফেব্রুয়ারি সাধারণ বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ (Nirmala Sitharaman)। আজ অধিবেশেনর প্রথম দিন সেন্ট্রাল হলে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুদীপও। ভাষণ শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রথম সারিতে বসা লোকসভার সাংসদদের দিকে এগিয়ে যান রাষ্ট্রপতি। আর প্রথম সারিতে ছিলেন সুদীপও। তখনই রাষ্ট্রপতিকে দেখে আর দেরি করেননি তিনি। সোজা সেখানেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকে দেন। তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে সরান। না হলে, সংসদীয় গণতন্ত্রের বিপদ হচ্ছে।" সেই সময় কোবিন্দের পাশেই ছিলেন উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুও।

আরও পড়ুন- সোমবার বাজেট অধিবেশনের শুরুতে ভাষণ দিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, কী বক্তব্য রাখলেন দেখে নিন

উল্লেখ্য, রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত নতুন কোনও বিষয় নয়। জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল হয়ে আসর পর থেকেই একাধিক বিষয় নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে তাঁর সংঘাত তৈরি হয়েছে। আর রাজ্যপালের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রকাশ্যেই তা নিয়ে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা তার জবাবও দিয়েছেন রাজ্যপাল। মাঝে মধ্যেই রাজ্য সরকারকে বিঁধে টুইট করতে দেখা যায় তাঁকে। আর রাজ্যপালের আচরণ নিয়ে আগেও দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে রাজ্যপালকে নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে ছিলেন মমতা। অবশ্য তখন তাঁর আবেদন ছিল, ‘রাজ্যপালকে সংযত হতে বলুন।’ তবে এখন রাজ্যের সংসদীয় প্রধানের সঙ্গে শাসক দলের সম্পর্ক যেখানে গিয়েছে তাতে আর সংযত হওয়ার বার্তা নয়, তাঁকে একেবারে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন করলেন সুদীপ। 

আরও পড়ুন-Budget Session 2022: বিতর্ক চাইলেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী সাংসদদের উদ্দেশ্যে বড় আহ্বান

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজ্যের শাসক দলের ক্ষোভের পারদ অনেক দিন ধরেই চড়ছিল। যে কোনও বিষয়ের মধ্যে রাজ্যপালের পদক্ষেপ করার বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলে না শাসকদল। রাজ্যপাল ও সরকারের সংঘাত চরম আকার নেয় গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে। রাজ্যপাল প্রায় প্রতিদিনই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক টুইট করেন। পাল্টা তাঁকেও ‘বিজেপির লোক’ বলে সমালোচনায় সরব হয় শাসক দল। কিন্তু, তা সত্ত্বেও দমেননি রাজ্যপাল। এরপরও রাজ্যের এবাধিক বিষয় নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আর তাঁর অপসারণের দাবিতে সোজা সংসদে সরব হওয়ার পরিকল্পনা আগেই করছিল তৃণমূল। লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিষয়টি নিয়ে সরব হতে দুই সাংসদের উপর দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। আর এর মধ্যেই অধিবেশন শুরুর দিনই খোদ রাষ্ট্রপতির কাছেই রাজ্যপালকে নিয়ে নালিশ জানালেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। 

আরও পড়ুন- পর্ণশ্রীতে কংগ্রেস নেতার উপর হামলা, পুলিশের সামনেই ‘খুনের হুমকি’, অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর