সংক্ষিপ্ত
আগামী দুই দিনের জন্য জ্ঞানবাপী মসজিদে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার পরীক্ষা বন্ধ রাখতে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। মুসলিমপক্ষকে স্বস্তি শীর্ষ আদালতের।
শুরু হওয়ার পরই জ্ঞানবাপী সমজিদের বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা বন্ধ। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে আগামী দুই দিন অর্থাৎ ২৬ জুলাই পর্যন্ত বারানসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের কোনও বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা করা যাবে না। বারাণসী আদালতের নির্দেশে সোমবার সকাল থেকেই এই মসজিদে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া সার্ভে করেছিল। মসজিদ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে এদিন মুসলিম পক্ষ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। তাদের আবেদনের ভিত্তিতে এই নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি মুসলিম পক্ষকে ইলাহাবাদ হাইকোর্টে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জ্ঞানবাপী সমজিদ আইকনির কাশীবিশ্বনাথ মন্দিরের ঠিক পাশেই অবস্থিত।
যদিও এদিন আদালতে শুনানির সময় সরকারের পক্ষ থেকে আদালতকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল ,যে এএসআই-এর সার্ভের সময় মসজিদের পরিকাঠামোর কোনও রকম ক্ষতি হবে না। আদালতে কেন্দ্রের আইনজীবী জানিয়েছিলেন 'সার্ভের জন্য একটি ইটও সরানো হয়নি। এমন কোনও পরিকল্পনা নেই।' ভারতের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতকে বলেছিলেন যে সমীক্ষা পরিকল্পনায় শুধুমাত্র পরিমাপ, ফটোগ্রাফি, ব়্যাডার স্টাডি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রধানবিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন বলেছেন, আদালত ইলাহাবাদ হাইকোর্টের সামনে বারাণসী আদালদের রায়কে চ্যালেঞ্জ করার জন্য জ্ঞানবাপী মসজিদ পরিচালনা কমিটিতে কিছুটা নিশ্বাস নেওয়ার সময় দিয়েছে। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্ট উত্তর প্রদেশের প্রতিনিধিত্বকারী সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতাকে আদেশ দিয়েছে, এএসআইকে এই আদেশ জানিয়ে দিতে। এদিনই আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া মসজিদ প্রাঙ্গনে সার্ভের জন্য ৩০ সদস্যের একটি দল পাঠিয়েছিল। তিনি আদালতের এই আদেশ গ্রহণ করেছেন। জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত মসজিদে কোনও খননকার্য শুরু হয়নি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মসজিদে কোনও খননকাজ করার পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। পাল্টা সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, 'আমরা যা করতে পারে তা হল কোনও আক্রমণাত্মক কাজ বন্ধ রাখা।'
২০২১ সাল থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কাশীবিশ্বনাথ মন্দিরের পাশে অবস্থিত জ্ঞানবাপী সমজিদ। এই মসমজিদের মধ্যে একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে বলে দাবি করে কয়েকজন হিন্দু মহিলা তা পুজো করার দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। যদিও মুসলিম পক্ষ বা মসজিদ পরিচালন কমিটি এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছি। তাদের দাবি ছিল মসজিদে যা রয়েছে তা হল একটি পাথরের ফোয়ারা। মসজিদ তৈরি হওয়ার সময় থেকেই সেটি ওয়াজুখানায় ছিল। এই ওয়াজুখানা হল নাওয়াজের আগে হাত-পা ধোওয়ার জায়গা। পরবর্তীকালে এই বিষয় নিয়েই মামলা শুরু হয়। বারাণসী আদালতের পাশপাশি ইলাহাবাদ হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টেও জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে মামলা হয়েছে। ওয়াজুখানার গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্টে আগেই এলাকা বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরই বারাণসী আদালতে হিন্দু পক্ষ ওয়াজুখানা বাদ দিয়ে গোটা মসজিদের সার্ভে করার দাবি জানায়। তাদের দাবি ছিল মসজিদ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে বৈজ্ঞানিক সার্ভে করানো হোক আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে দিয়ে। তাতেই শুক্রবার মসজিদের সার্ভের আদেশ দিয়েছিল বারাণসী আদালত। ৪ অগাস্টের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতেও নির্দেশ দিয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের দ্বারস্থ হয় মুসলিম পক্ষ। তাদের বক্তব্য ছিল বারাণসী আদালতের এই রায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অবমাননা। মুসলিম পক্ষ জানিয়েছে, বারাণসী আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তারা ইলাহাবাদ হাইকোর্টে যাবে। আজ সন্ধ্যের মধ্যেই আবেদন করা হবে।