প্রখ্যাত শিল্পপতি গোপীচাঁদ পি হিন্দুজা। ৮৫ বছর বয়সে লন্ডনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। ১৯৪০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। এই ভারতীয়-ব্রিটিশ ধনকুবের হিন্দুজা গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন।
প্রখ্যাত শিল্পপতি গোপীচাঁদ পি হিন্দুজা। ৮৫ বছর বয়সে লন্ডনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। ১৯৪০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। এই ভারতীয়-ব্রিটিশ ধনকুবের হিন্দুজা গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৫৯ সালে মুম্বাইয়ে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন। সেটিকে একটি বহু-বিলিয়ন ডলারের বিশ্বব্যাপী সংগঠনে রূপান্তরিত করেন। তাঁর জন্যই হিন্দুজাগোষ্ঠীর পরিচিতি বিশ্বজোড়া। ব্যবসায়িক মহলে তিনি 'জিপি' নামে পরিচিত ছিলেন।
তিনি এই গ্রুপকে একটি ইন্দো-মধ্যপ্রাচ্য ট্রেডিং অপারেশন থেকে একটি বহু-বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক সংগঠনে রূপান্তরিত করার অন্যতম কারিগর ছিলেন।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু মঙ্গলবার গোপীচাঁদ পি হিন্দুজার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
নাইডু হিন্দুজা গ্রুপকে একটি বিশ্বব্যাপী সংগঠনে রূপান্তরিত করতে প্রয়াত গোপীচাঁদ হিন্দুজার অবদানের কথা স্মরণ করেন। অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী হিন্দুজার পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে তাঁর উত্তরাধিকার আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।"হিন্দুজা গ্রুপের চেয়ারম্যান শ্রী গোপীচাঁদ পি হিন্দুজার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। একজন দূরদর্শী শিল্পপতি হিসেবে তিনি এই গ্রুপকে একটি সত্যিকারের বিশ্বব্যাপী সংগঠনে রূপান্তরিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৮৪ সালে গালফ অয়েল অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে অশোক লেল্যান্ডের পুনরুজ্জীবনের মতো যুগান্তকারী সাফল্য এসেছে। তিনি বিদ্যুৎ ও পরিকাঠামো খাতে গ্রুপের প্রবেশের পথও দেখিয়েছিলেন। তাঁর পরিবার, বন্ধু এবং সমগ্র হিন্দুজা গ্রুপের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। তাঁর উত্তরাধিকার আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করুক," নাইডু এক্স-এ পোস্ট করেছেন।
তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) সাধারণ সম্পাদক লোকেশ নারাও গোপীচাঁদ হিন্দুজার পরিবারের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। "জিপি হিন্দুজার মৃত্যুতে আমি শোকাহত, যাঁর শিল্প ও মানবকল্যাণে অসাধারণ অবদান এক স্থায়ী বিশ্বব্যাপী উত্তরাধিকার রেখে গেছে। আমাদের পরিবারের সঙ্গে হিন্দুজা পরিবারের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্বের ভিত্তিতে একটি দীর্ঘ ও লালিত সম্পর্ক রয়েছে। এই গভীর ক্ষতির সময়ে তাঁর পরিবার ও প্রিয়জনদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা," নারা এক্স-এ পোস্ট করেছেন।
গোপীচাঁদের ব্যবসায়িক দর্শন 'সাধারণ জ্ঞান' শব্দটির মাধ্যমে সবচেয়ে ভালোভাবে বোঝা যায়। একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক পদক্ষেপ ছিল ১৯৮৪ সালে গ্রুপের গালফ অয়েল অধিগ্রহণ, এবং এর পরেই ১৯৮৭ সালে তৎকালীন সমস্যাগ্রস্ত ভারতীয় অটোমোবাইল প্রস্তুতকারক অশোক লেল্যান্ড অধিগ্রহণ, যা ভারতে প্রথম বড় অনাবাসী ভারতীয় বিনিয়োগ হিসেবে চিহ্নিত হয়। আজ এটি ভারতীয় কর্পোরেট ইতিহাসে অন্যতম সফল ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প হিসেবে বিবেচিত হয়।
তিনি বিদ্যুৎ ও পরিকাঠামো খাতে গ্রুপের প্রবেশের পেছনের দূরদর্শী ব্যক্তিও ছিলেন এবং ভারতে বহু-গিগাওয়াট শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা তৈরির জন্য গ্রুপের পরিকল্পনা রূপ দেওয়ার কাজটি তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৫৯ সালে বোম্বের জয় হিন্দ কলেজ থেকে স্নাতক হন। তিনি ওয়েস্টমিনস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে এবং লন্ডনের রিচমন্ড কলেজ থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
