সংক্ষিপ্ত
মৃত্যু অনিশ্চিত। তার আবারও প্রমাণ করল ওড়িশার বালেশ্বের তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা। কারণ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ৪০ যাত্রীর দেহে কোনও আঘাত নেই।
মৃত্যু ঠিক কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা আরও একবার দেখিয়ে দিল ওড়িশার বালেশ্বরের তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষ। দুর্ঘটনায় সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শালিমার - চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। কারণ এই দূরপাল্লার ট্রেনটি প্রথমে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়িতে ধাক্কা মারে। তারপর এই ট্রেনের ছড়িয়ে থাকা কামরায় ধাক্কা মারে উল্টো দিক থেকে আসা যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। যাইহোক করমণ্ডল এক্সপ্রেস থেকে উদ্ধার হয়েছে এমন ৪০টি মৃতদেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। প্রাথমিক তদন্তের পরে জিআরপি অনুমান করছে এই ৪০ জনই ট্রেনের মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।
বালোশ্বর গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ স্টেশনে নথিভুক্ত একটি এফআইআর দেখে মনে করা হচ্ছে লাইভ ওভারহেড তারগুলি দুর্ঘটনার সময় ছুঁড়ে গিয়েছিল। তারপরে সেগুলি কয়েকটি কোচের সঙ্গে আটকে যায়। সেই কোচে থাকা যাত্রীরাই তড়িদাহত হয়ে মারা গেছে।
সাব ইন্সপেক্টর পি কুমার নায়েক এফআইআর-এ বলেছেন অনেক ওভারহেড তার ছিঁড়ে যায়। সেটি দুটি ট্রেনের সংঘর্ষের কারণে লাইনের সংস্পর্শে আসে। তারপরই বৈদ্যুতিক আঘাতের কারণে একাধিক যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে ওভারহেড তারগুলি কোচের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিল। সেই সময় তারে বিদ্যৎ থাকায় সেগুলি কোচে থাকা যাত্রীদের প্রাণ নিয়ে নেয়।
ওড়িশার বালাসোরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস-যশবন্তপুর এক্সপ্রেস-মালগাড়ি তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ল। সরকারি হিসেবে মৃত্যু হয়েছে। ২৭৮ জনের। কারণ আহতদের মধ্যে তিন জন মঙ্গলবার মারাগেছে। তবে এখনও পর্যন্ত ১০১ জনের মৃতদের সনাক্ত করা যায়নি। মৃতদেহগুলি পড়ে রয়েছে ওড়িশার মর্গে। এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানিয়েছে ট্রেনে কাটাপড়া বা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া দেহগুলি বেশি দিন সংরক্ষণ করা যাবে না। তাই দেহগুলি যাতে দ্রুত সনাক্তকরণের ব্যবস্থা করা হয় তারও আর্জি জানিয়েছেন।
ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত রাজ্যের প্রায় শতাধিক মানুষের দেহ চিহ্নিত করা গয়েছে। মঙ্গলবার ওড়িশার কটকের হাসপাতালে ভর্তি রাজ্যের আহত বাসিন্দাদের দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ই তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত বাংলার ১০৩ জনের দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে। সামগ্রিকভাবে তিনি ওড়িশা সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বলেছেন, রাজ্যের ৯৭ জন জখম ব্যক্তি ওড়িশার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলেও জানিয়েছেন মমতা। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসসিবি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। সেখানে চক্ষু ও সার্জারি বিভাগে যান। রাজ্যের আহত রোদীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেন। মমতা আহতদের সম্ভাব্য সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন। মমতা বলেন, 'আমরা সম্ভাব্য সব উপায়ে যাত্রীদের সাহায্য করার চেষ্টা করছি। ২ জুন দুর্ঘটনার রাতেই যাত্রীদের সাহায্যের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স, ও অফিসারদের দল পাঠিয়েছি।'
আরও পড়ুনঃ
ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনও সামরিক জোট নেই, মোদীর সফরের আগেই চিনের মুখের ওপর জবাব