সংক্ষিপ্ত
ঘিরে ফেলেছে জওয়ানরা
আত্মসমর্পণ করার ক্ষেত্রে রয়েছে নেতাদের হুমকি
মৃত্যু নিশ্চিত জেনে বাবাকে ফোন করেছিল এক সন্ত্রাসবাদী
সেই ফোনকলেই ফাঁস কীভাবে হুমকির মুখে কাশ্মীরি যুবকদের সন্ত্রাসবাদে বাধ্য করা হচ্ছে
প্রথমে বিপজ্জনক অস্ত্রের সঙ্গে তার একটি ছবি তুলে, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়া হয়েছিল। সমাজে রটিয়ে দেওয়া হয়েছিল সে জঙ্গিদলে যোগ দিয়েছে। এভাবেই ফাঁদে ফেলে একরকম সন্ত্রাসবাদের পথে আসতে বাধ্য করা হয়েছিল তাকে। তারপর, নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করতে চাইলে হুমকি দেওয়া হয়েছে, মেরে ফেলা হবে তার পরিবারের সদস্যদের। এইভাবে একরকম বাধ্য করা হয়েছে কামানের গোলা হতে। ঠেলে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুর দিকে। মৃত্যুর আগে ববাকে করা শেষ ফোনকলে এমনই চমকে দেওয়া স্বীকারোক্তি করেছে এক কাশ্মীরি সন্ত্রাসবাদী।
সংবাদমাধ্যম টাইমস নাও সেই সন্ত্রাসবাদী ও তার বাবার শেষ কথোপকথনের রেকর্ড প্রকাশ করেছে। টাইমস নাও জানিয়েছে ৪দিন আগে বারামুলার কারেরি এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ওই জঙ্গির। সন্ত্রাসবাদের পথে আসার আগে সে প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার হিসেবে পরিচিত ছিল। ফোনকল রেকর্ডে সে নিজেকে আমির বলে পরিচয় দিয়েছে। নেপথ্যে ছিল ব্যাপক গোলাগুলি চলার আওয়াজ।
ফোনকলে তার বাবাকে ওই জঙ্গি বলে, জওয়ানরা তাদের ঘিরে ফেলেছে। সে আত্মসমর্পন করতে চায়। কিন্তু, তার কোনও উপায় নেই। তার হ্যান্ডলাররা হুমকি দিয়েছে, সে আত্মসমর্পণ করলে তার পরিবারের সব সদস্যকে হত্যা করা হবে। পরিত্রাণের কোনও পথ নেই জানিয়ে সে বলে, সে ভুল করেছে। জোর করে অস্ত্রসহ তার ছবি তুলে ভাইরাল করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও সে বাড়ি ফিরে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু, বারবারই তাকে বাবা, মা, ভাই-সহ পরিবারের সদস্যদের প্রাণের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাই সে সন্ত্রাসবাদের পথ থেকে বের হতে পারেনি। ঘিরে ফেলা অবস্থাতেও ভারতীয় জওয়ানরা তাদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু, তাদের নেতারা হুমকি দিয়ে তাদের সেটা করতে দেয়নি।
তার মৃত্য়ুর আগে এইসব কথা যেন কেউ জানতে না পারে বলে, ওই সন্ত্রাসবাদী তার বাবাকে সাবধানও করে দিয়েছে। শেষ অনুরোধ হিসাবে সে তার বাবাকে বলেছে, সে ভালো করে না বুঝেই এই পথে চলে এসেছিল। ধারণাই ছিল না এই পথ তাকে কোথায় পৌঁছে দেবে। তার ভাই-বন্দুরা কেউ যেন এই পথে আসার কথা চিন্তাও না করে, সেটাই তার বাবাকে সুনিশ্চিত করতে বলেছে ওই মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে থাকা জঙ্গি। তারা যাতে তাদের ভবিষ্যত গড়ার দিকে মন দেয়, সেটাই চেয়েছে সে। বাবাকে বলেছে কাশ্মীরি যুবকদের জানাতে, তার পথের কোনও ভবিষ্যত নেই। তার জীবন নষ্ট হয়েছে, কিন্তু অন্য কারোর যাতে তা নাহয়, সেটাই সে চায় বলে জানিয়েছে।