সংক্ষিপ্ত
- হায়দ্রবাদের খুন ২৬ বছর বয়সি পশু চিকিৎশক
- ধর্ষণ করে খুন বলে সন্দেহ পুলিশের
- ঘটনায় নিন্দার ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়
- দোষীদের শাস্তির দাবিতে চাপ বাড়ছে তেলেঙ্গানা সরকারের উপরে
কড়া আইন এসেছে, কঠিন শাস্তির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবু বার বার সামনে উঠে আসছে একের পর এক নির্ভয়ার কাহিনি। সেই তালিকায় এবার নতুন সংযোজন হায়দ্রাবাদের ছাব্বিশ বছর বয়সি এক পশু চিকিৎসক। বৃহস্পতিবার হায়দ্রবাদের চাঁদনপল্লির একটি আন্ডাপাসের ভিতর থেকে তাঁর দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের অনুমান, ধর্ষণের পরে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ওই তরুণীকে। ঘটনার প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ছাব্বিশ কিলোমিটার দূরে গাচিবাউলিতে একটি ক্লিনিকে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন ওই পশু চিকিৎসক। এর পর রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ একটি টোল প্লাজার সামনে থেকে নিজের বোনকে ফোন করেন ওই পশু চিকিৎসক। ফোনে তিনি জানান, টোল প্লাজার কাছে তাঁর স্কুটারটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। ওই পশু চিকিৎসক ভয়ার্ত কন্ঠে জানিয়েছিলেন, বেশ কয়েকজন আগুন্তক যুবক তাঁর উপরে নজর রাখছে। এমন কী, তাদের মধ্য থেকে একজন তাঁর স্কুটারটি সারিয়ে দেওয়ারও প্রস্তাব দেয়। যদিও সেই প্রস্তাবে রাজি হননি ওই পশ চিকিৎসক। ভয় পেয়ে গিয়ে নিজের বোনকে তিনি ফোনেপ কথোপকথন জালিয়ে যেতে বলেন।
এর পরেই নির্যাতিতার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাঁর বোনের। পরে ফোন করেও আর নির্যাতিতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি তাঁর পরিবার।
এর পর ওই পশু চিকিৎসকের পবিরার প্রথমে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করে। এর পর তাঁরা নিজেরাই তরুণীর শেষ বারের মতো দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী ওই টোল প্লাজার সামনে যান। কিন্তু সেখানেও কারও খোঁজ মেলেনি। শেষে ঘটনার প্রায় বারো ঘণ্টা পরে ওই আন্ডারপাসের মধ্যে থেকে তরুণীর দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। দেহটি পুড়ে গিয়ে এতটাই বিকৃত হয়ে যায় যে সেটি দেখে কিছুই বোঝার উপায় ছিল না। যদিও, পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ দেখেই এমন অনুমান করছেন তদন্তকারীরা। ময়নাতদন্তের পরেই এই বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হতে পারবে। ঘটনার তদন্তে দশটি পৃথক দল তৈরি করেছে পুলিশ। সাধারণ মানুষেরও সাহায্য চাওয়া হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কোনওরকম তথ্য জানা থাকলে তা পুলিশকে জানানোর জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছে পুলিশ।
এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি এবং দ্রুত পদক্ষেপের দাবিতে সরব হয়েছেন নেটিজেনরা। বিষয়টি নিয়ে তেলেঙ্গানার সরকারের উপরও চাপ বাড়ছে। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে টুইট করেছেন গোশামহল এবং মল্কাজগিরির দুই সাংসদ রাজা সিংহ এবং রেভান্ত রেড্ডি। পশু চিকিৎসকের হত্যার ঘটনায় সরব হয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুও। টুইটারে তিনি লিখেছেন, 'শাদনগরে ছাব্বিশ বছর বয়সি পশু চিকিৎসকের নৃশংস হত্যার ঘটনায় আমি ব্যথিত। মৃতার পরিবারকে সমবেদনা জানাই। এই ঘৃণ্য অপরাধে অভিযুক্তদের দ্রুত এবং সবথেকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। সভ্য সমাজে বসবাস করার কোনও অধিকারই তাদের নেই।'
একই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, 'কড়া শাস্তি এবং বেশি করে নজরদারির পাশাপাশি এটাও নিশ্চিত করতে হবে যাতে ছেলেরা ছোট থেকেই মহিলাদের সম্মান করতে শেখে এবং সমান চোখে দেখে। বাড়ি হোক বা স্কুল, শিক্ষার প্রতিটি স্তরে লিঙ্গের সমানাধিকার এবং যৌন শিক্ষার পাঠ রাখা উচিত। প্রত্যেককেই এই বদল আনার জন্য উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।'