সংক্ষিপ্ত

  • দিল্লি আইআইটি থেকে বি.টেক 
  • ইচ্ছি ছিল আইআইএম থেকে এমবিএ করার
  • ২ বার চেষ্টা করেও তাতে সফল হননি
  • তাই নিজেকে অপহরণের  মিথ্যে গল্প সাজালেন 

আপনে বাচ্চে কো জিন্দা দেখনা হ্যায়ে তো কাল তক পাঁচ লাখ রুপয়ে কী ইন্তেজাম করকে রাখ! গত ১৯ জুলাই দিল্লির রোহিনীর বুধবিহারে আইআইটি দিল্লির স্নাতক অঙ্কিত গুপ্তার পরিবারের কাছে এমনই এক মেসেজ আসে। যার মোদ্দা কথা, ছেলেকে জীবন্ত পেতে হলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। এই মেসেজ পাওয়ার পরেই আতঙ্ক তৈরি হয় গুপ্তা পরিবারে। থানায় গিয়ে ছেলের অপহরণের খবর জানান বিনোদ গুপ্তা। এরপর পুলিশ তদন্তে নামতেই প্রকাশ্যে আসে আসল গল্প। জানা যায় আত্মহত্যা করতেই নিজেকে অপরহরণের মিথ্যে গল্প ফেঁদে ছিলেন বছর চব্বিশের মেধাবী ছাত্র অঙ্কিত।

জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে দিল্লি আইআইটি থেকে বি.টেক করেন অঙ্কিত গুপ্তা। ইচ্ছে ছিল আইআইএম-আহমেদাবাদ থেকে এমবিএ করবেন। তবে দু'বারের চেষ্টাতেও তাতে সফল না হওয়ায় আত্মহত্যা করবেন বলে স্থির করেন ওই যুবক। তবে মা-বাবার কষ্ট কমাতে আত্মহত্যার চেষ্টার আগে ছক কষেছিলেন এই আইআইটিয়ান। নিজের অপহরণ হওয়ার মিথ্যে গল্প সাজালেন ইঞ্জিনিয়ার। 

আরও পড়ুন: রেডারের আওতার বাইরে থেকে চিনের উপর নজর, সেনার হাতে ডিআরডিও তুলে দিল অত্যাধুনিক 'ভারত'

বর্তমানে নয়ডার একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করছেন অঙ্কিত। রোহিণীর ডিসিপি পিকে মিশ্র জানান, 'মহামারীর সময় তিনি বাড়ি থেকে কাজ করছিলেন। কিন্তু  নানা চেষ্টা সত্ত্বেও ২ বার আইআইএমে ভর্তি হতে ব্যর্থ হওয়ায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এরপরেই হতাশার কারণে আত্মঘাতী হবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক করেন, চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করবেন। কিন্তু বাবা-মাকে সমস্যায় ফেলতে চাননি। সে জন্য তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে নিজেকে অপহরণের ভুয়ো গল্প সাজানোর ছক কষেন।'

১৯ জুলাই অঙ্কিতের বাবা বিনোদ গুপ্তা  ছেলের অপহরণের ঘটনা থানায় জানাতে এলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। পুলিশকে তিনি জানান, ১৯ তারিখ সন্ধে ৬টা নাগাদ কানাড়া ব্যাংকের এটিএমে গিয়েছিলেন তাঁর ছেলে। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। তাঁর ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। 

আরও পড়ুন: দেশের করোনা পরিস্থিতিতে বড় সিদ্ধান্ত সরকারের, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ঘোষণা

তদন্তে নেমে পুলিশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। তাতেই দেখা যায় যে, অঙ্কিত তাঁর বাড়ি থেকে বেরিয়ে এটিএম কিয়স্কের দিকে না গিয়ে অন্যদিকে যাচ্ছেন। এরপরেই ওই যুবকের  লোকেশন জানার জন্য তাঁর ফোনের লাইভ কল ডিটেইলস রেকর্ড খতিয়ে দেখে পুলিশ। অঙ্কিতের  ফোন থেকে শেষ লোকেশন খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, রাত ৮.৪৭-এ সরাই রোহিলা রেলস্টেশনে সেটি সক্রিয় ছিল। সঙ্গে সঙ্গে খবর পাঠান  হয় জয়পুর জিআরপি-কে। এরপর জয়পুর স্টেশনের জিআরপি ও পুলিশ অঙ্কিতকে চিহ্নিত করে।

অঙ্কিতকে ফিরিয়ে আনতে যুবকের পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি পুলিশ জয়পুরে যায়। তাঁকে দিল্লিতে ফিরিয়ে এনে কাউন্সেলিংও শুরু করা হয়েছে। পরিবারকে  বিভ্রান্ত করতেই অঙ্কিত  নিজের অন্য মোবাইল থেকে মুক্তিপণের মেসেজ পাঠিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।