সংক্ষিপ্ত
তাপমাত্রার পারদ চড়ছে হুহু করে। তার জন্য বিজ্ঞানীরা মূলত জলবায়ুর পরিবর্তনকেই দায়ী করেছেন। সমুদ্রের জলের উষ্ণতা বাড়ছে দ্রুত।
আগামী পাঁচ দিনের মধ্যেই কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে বঙ্গবাসী। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী তাপমাত্রার পরিবেশ অব্যাহত থাকবে। তবে এদিন বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন কেন তাপমাত্রার একই বৃদ্ধি। শুধু বাংলা নয়, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল , কর্ণাটকের সঙ্গে দিল্লিতেও তৈরি হয়েছে অস্বস্তিকর আবহাওয়া। অত্যাধিক গরমে অস্বস্তিতে পড়ছে মানুষ।
মৌসম ভবনের পূর্বাভাস-
দেশের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক সহ দেশের বেশ কিছু অংশে আগামী ২৪ ঘণ্টা তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে। আইএমডি সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির জন্য তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে। কিছু এলাকার তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠে যাবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে হাওয়া অফিস।
আগামী পাঁচ দিনের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বজায় থাকবে। তাপমাত্রা সাধারণত ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকবে। উত্তর-পূর্বের রাজ্য ও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ-সহ দেশের কয়েকটি রাজ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ও আন্দামান ও নিকোবরে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়েরও সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজ্যের জন্য পূর্বাভাস
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা-সহ পূর্বভারতের কিছু অংশ বৃষ্টি হবে। তবে প্রবল এই গরমের হাত থেকে আপাতত রেহাই নেই। কিছু এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। অসম ও মেঘালয়তেও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তবে অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলাঙ্গনা ও কর্ণাটকের পরিস্থিতি খারাপ হবে। কিছু এলাকার তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। দিল্লি , উত্তর প্রদেশ, রাজস্থানও তাপপ্রবাহের কবলে পড়বে।
জলবায়ু পরিবর্তন
হঠাৎ করে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঠিক কারণে এখনও জানা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের অনুমান এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সমুদ্রের তাপমাত্রা লাগামহীনভাবে বাড়ছে। তাতেই এই অসহ্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভূ-পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা ২০.৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। যা ২০১৬ সাল পর্যন্ত ছিল ২০.৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চারপাশে জল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়েছে। যা নতুন একটি রেকর্ড তৈরি করেছে।
উত্তর আটলান্টিকেও নজিরবিহীনভাবে উষ্ণতা অনুভূত হচ্ছে। চলতি বছরের শুরুতে তাপমাত্রা বেড়েছে আগের তুলনায়। এল নিনো, একটি প্রাকৃতিক আবহাওয়ার ঘটনা, যা গত বছর শুরু হওয়া সিজলিং তাপমাত্রার জন্য আংশিকভাবে দায়ী। যাইহোক, জলবায়ু পরিবর্তন এল নিনোর প্রভাবকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সমুদ্রের তাপমাত্রাকে নতুন করে দ্রুত বাড়তে সাহায্য করেছে।
যেহেতু মহাসাগরগুলি উষ্ণ হচ্ছে তাই পৃথিবীর জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করা আর সম্ভব হচ্ছে না। কারণ সমুদ্রের জল উষ্ণ হওয়ার করাণ তাপ কম শোষণ করে আর আবহাওয়া চরম আকার নেয়। সমুদ্রের জল গরম হওয়ার কারণে কর্বন ডাই অক্সাইডও কম শোষণ করে। সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বায়ুমণ্ডলে CO2-এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা জলবায়ু পরিবর্তনকে দ্রুত করে দিতে সাহায্য করে। এর পরিণতিগুলি ভয়াবহ, এবং এটি অপরিহার্য যে আমরা নির্গমন কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলি হ্রাস করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করি৷