India China Space Race: ইন্দো-পাক যুদ্ধের সময় চীন পাকিস্তানকে মহাকাশ-ভিত্তিক ISR-এ সহায়তা করেছিল। ভারত এখন একটি শক্তিশালী মহাকাশ বাহিনী গড়ে তুলছে। EMISAT, RISAT এবং NavIC-এর মতো দেশীয় সিস্টেমগুলি ভারতের সামরিক শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।
India China Space Race: ভারত এবং চিনের স্থল যুদ্ধ এখন মহাকাশে 'মহাকাশ যুদ্ধে' (Space Warfare) রূপান্তরিত হয়েছে। সাম্প্রতিক ভারত-পাক সংঘর্ষের সময় চিন পাকিস্তানকে কেবল অস্ত্রই দেয়নি, বরং তাদের অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট থেকে রিয়েল টাইম ইন্টেলিজেন্স, সার্ভিল্যান্স এবং রিকন (ISR) সহায়তাও দিয়েছে। এর জবাবে ভারত তার সামরিক এবং বেসামরিক মহাকাশ সম্পদ একত্রিত করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তবে এই যাত্রা এখনও অনেক দীর্ঘ।
ISRO-র ১০০তম মিশন NVS-02-এর ব্যর্থতা ভারতের জন্য ধাক্কা,
ISRO ২৯ জানুয়ারী ২০২৫-এ GSLV Mk-2 থেকে NVS-02 উৎক্ষেপণ করেছিল, যা ভারতের NavIC নেভিগেশন সিস্টেমের (Navigation with Indian Constellation) গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু স্যাটেলাইটের অনবোর্ড থ্রাস্টার ব্যর্থ হওয়ার কারণে এটিকে তার লক্ষ্য কক্ষপথে স্থাপন করা যায়নি। NavIC-এর লক্ষ্য ভারত এবং ১৫০০ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে উচ্চ-মানের পজিশনিং পরিষেবা প্রদান করা, যা সামরিক মিশনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চিনের ৫০০০+ স্যাটেলাইট, ভারতের মাত্র ২১৮
চিন আজ প্রায় ৫৩৩০ স্যাটেলাইট নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাকাশ শক্তি, যার মধ্যে প্রায় ৪০টি রিকনাইসেন্স স্যাটেলাইট। Yaogan সিরিজের স্যাটেলাইটগুলি চিনের PLA-কে সঠিক লক্ষ্যবস্তু এবং রিয়েল-টাইম ডেটা সরবরাহ করে।
Yaogan-41: চিনের সবচেয়ে বিপজ্জনক গুপ্তচর স্যাটেলাইট
Yaogan-41 ডিসেম্বর ২০২৩ সালে চিন জিওস্টেশনারি কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করেছিল, যা ভারত মহাসাগর, তাইওয়ান এবং সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার উপর নজর রাখতে সক্ষম। পশ্চিমা বিশ্লেষকদের দাবি, এটি একটি গাড়ির মতো ছোট বস্তুও শনাক্ত করতে পারে।
ভারতের মহাকাশ প্রতিরক্ষা: EMISAT, RISAT এবং Kautilya সিস্টেম ISR ক্ষমতা জোরদার করে
- EMISAT: চিন অধিকৃত তিব্বতে PLA-এর কার্যকলাপের উপর নজর রাখার জন্য ভারতের প্রধান ELINT (Electronic Intelligence) স্যাটেলাইট।
- Kautilya: DRDO-র তৈরি ৪৩৬-কেজি স্যাটেলাইট যা শত্রুর রাডারের অবস্থান ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক সংকেত থেকে শনাক্ত করতে পারে।
- RISAT সিরিজ: RISAT-2B এবং RISAT-2BR1-এর মতো Synthetic Aperture Radar (SAR) স্যাটেলাইটগুলি ভারতের সীমান্ত সুরক্ষা এবং সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ব্যবহৃত হচ্ছে।
মহাকাশ কমান্ডের প্রস্তুতি: ১০০ টিরও বেশি সামরিক স্যাটেলাইট আনার পরিকল্পনা
২০১৯ সালে গঠিত প্রতিরক্ষা মহাকাশ সংস্থাকে একটি পূর্ণকালীন মহাকাশ কমান্ডে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। IAF এখন IASCCS (Integrated Air and Space Command and Control System)-এর দিকে এগিয়ে চলেছে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর লক্ষ্য আগামী ৭-৮ বছরে ভারতের ১০০+ সামরিক স্যাটেলাইট থাকবে।
Tata এবং বেসরকারি খাতের ভূমিকা: ২০২৪ সালে উৎক্ষেপিত প্রথম সামরিক গ্রেড স্যাটেলাইট
Tata Advanced Systems Ltd ভারতের প্রথম বেসরকারিভাবে নির্মিত গুপ্তচর স্যাটেলাইট এপ্রিল ২০২৪ সালে উৎক্ষেপণ করেছে। এটি ভারতকে আমেরিকান নির্ভরতা থেকে মুক্তি দেবে এবং মহাকাশ চিত্রের নিজস্ব জাতীয় নেটওয়ার্ক তৈরি করবে।
Beidou বনাম NavIC: GPS নির্ভরতা দূর করার প্রতিযোগিতা
চিনের Beidou-3 সিস্টেম ৩৫ টি স্যাটেলাইট দিয়ে সজ্জিত এবং PLA-কে বিশ্বব্যাপী অভিযানে GPS-মুক্ত লক্ষ্যবস্তুতে সহায়তা করে। অন্যদিকে, ভারতের NavIC এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে এটি সফল হলে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে কৌশলগত সুবিধা দেবে।


