দেশের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি জানিয়েছেন, আন্দামান অঞ্চলে নাকি তরল সোনার ভান্ডার পাওয়া যেতে পারে। 

বর্তমানে ভারত তেলের ৮০% ও গ্যাসের ৫০% আমদানি করে আসছে, এই পরিস্থিতিতে দেশীয় উৎস খুঁজে না পেলে দীর্ঘমেয়াদি স্বনির্ভরতা অসম্ভব। এই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি ভারতে মাটির তলায় লুকিয়ে থাকা তেল ও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা গেছে। যা গুপ্তধন পাওয়ার মতো, দেশের অর্থনৈতিক চিত্র বদলে দিতে পারে।

কোথায় রয়েছে এই গুপ্তধন?

দেশের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি জানিয়েছেন, আন্দামান অঞ্চলে নাকি তরল সোনার ভান্ডার পাওয়া যেতে পারে। সোমবার এক পর্যালোচনা বৈঠকে মন্ত্রী জানান, ভারতের ৩.৫ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার সেডিমেন্টারি বেসিনের মাত্র ৮ শতাংশই এখন পর্যন্ত অনুসন্ধান করা হয়েছে। এর আগে পর্যন্ত ১ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার ‘নো-গো’ এলাকা ছিল, ওই এলাকাগুলো বর্তমানে অনুসন্ধানের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। এখানেই মিলেছে তরল সোনার সন্ধান।

দেশের মন্ত্রী জানান, এই পর্যবেক্ষণ ও অসুসন্ধানে যদি ৫ বিলিয়ন ব্যারেল তেলের সন্ধান পাওয়া যায়, তাহলে দেশের ৮০ শতাংশ তেল ও ৫০ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির ক্ষেত্রে বড়ো পরিবর্তন আসবে। এখন পর্যন্ত ৯ দফা ওপেন অ্যাকরেজ লাইসেন্সিং নীতির (OALP) আওতায় প্রায় ১ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৩৮ শতাংশ বিড এসেছে, এবং আগামী দফায় ৭৫ শতাংশের বেশি বিড আসার আশা।

অনুসন্ধানের খরচ

এই খননের কাজ বেশ খরচসাপেক্ষ। একটি অনশোর কূপ খননে যেখানে গড়ে ৪ মিলিয়ন ডলার লাগে, অফশোর কূপের জন্য তা দাঁড়ায় প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার। গয়নার উদাহরণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেছেন, ইতিমধ্যেই খোঁড়া হয়ে গেছে ৪৬টি কূপ। তবুও কিছু পাওয়া যায়নি। ৪৭তম কূপে বিশাল তেলের সন্ধান মিলতে পারে, এমনটাই সম্ভাবনা করছে সকলে।

উন্নত প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে খরচ ও ঝুঁকি সামলে অনুসন্ধান গতি বাড়ানো হচ্ছে।

আরও কোন কোন জায়গায় পাওয়া যাবে এই তরল সোনা?

* সূর্যমণি’ অঞ্চলে ৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন জ্বালানি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। * ‘নীলমণি’তে প্রায় ১.২ মিলিয়ন মেট্রিক টনের তেল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

* এমনকি ২,৮৬৫ মিটার গভীর একটি কূপে তেল ও গ্যাস দুটোই পাওয়া গেছে।

মন্ত্রীর কথায় এই সম্ভাবনাগুলোকে এখনও পর্যন্ত সঠিকভাবে যাচাই করা যায়নি। তবে পাওয়া গেলে, ভারতের জ্বালানি আমদানি নির্ভরতা হ্রাস পাবে, জ্বালানি নিরাপত্তা বলীয়ান হবে, এবং ২০ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দিকে যাত্রা সুগম হবে।