নভেম্বরেই হাড় কাঁপানো শীত? সময়ের আগেই আসছে ঠান্ডা, সতর্ক করল আবহাওয়া দফতর
শীতকাল ২০২৫: দেশের পাহাড়ি ও সমতল এলাকায় এখন ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমছে, যার ফলে কাঁপুনি বাড়ছে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী দিনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে, যার ফলে ঠান্ডা আরও বাড়বে।

শীতকাল ২০২৫: অক্টোবর মাস শুরু হতেই আবহাওয়ায় পরিবর্তন স্পষ্ট। হালকা শীত পড়তে শুরু করেছে। সকাল ও সন্ধ্যায় হালকা কাঁপুনি অনুভূত হচ্ছে এবং মানুষ এখন হালকা গরম জামাকাপড় পরতে শুরু করেছে।
হিমাচল প্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরের উঁচু এলাকায় তুষারপাত শুরু হয়েছে, অন্যদিকে দিল্লি ও উত্তর ভারতের সমতল এলাকায় তাপমাত্রা দ্রুত কমছে। এমন পরিস্থিতিতে অনুমান করা হচ্ছে, এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে আগেই শীত আসছে।
পাহাড় থেকে সমতল, সর্বত্রই বেড়েছে ঠান্ডা
গত সপ্তাহে শ্রীনগরে নির্ধারিত সময়ের আগেই তুষারপাত হয়েছে, অন্যদিকে জম্মু-কাশ্মীরের সমতল এলাকায় বৃষ্টির কারণে ঠান্ডা আরও বেড়েছে। হিমাচল প্রদেশের উঁচু এলাকায় ক্রমাগত তুষারপাত হচ্ছে এবং নিচু এলাকায় বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রায় বড় ধরনের পতন রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তন প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা হ্রাসের কারণে ঘটছে। এর ফলে লা নিনার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, যা ঠান্ডাকে আরও আগে এবং তীব্রভাবে নিয়ে আসছে। এই কারণেই এবার অক্টোবরের শুরুতেই মানুষ কাঁপুনি অনুভব করছে।
উত্তর ভারতে জাঁকিয়ে শীত পড়বে
IMD-র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লা নিনার কারণে এবার ভারতের অনেক অংশে, বিশেষ করে উত্তর ভারতে বেশি ঠান্ডা পড়তে পারে। অর্থাৎ, পাহাড়ে তুষারপাত ও ঠান্ডা বাতাস আগের চেয়ে বাড়তে পারে। পাশাপাশি, আইএমডি জানিয়েছে যে অক্টোবর মাসে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্ষার বিদায়
শুক্রবার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এ বছর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু মুম্বাই থেকে বিদায় নিয়েছে। এটি ২০১৮ সালের পর সবচেয়ে দ্রুত বিদায়। সাধারণত, মুম্বাই থেকে বর্ষা ৬ অক্টোবরের কাছাকাছি বিদায় নেয়, কিন্তু গত বছর এটি ১৫ অক্টোবর বিদায় নিয়েছিল। এ বছর বর্ষা ২৬ মে মুম্বাইয়ে পৌঁছেছিল, যা গত ৭৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত ছিল। এবার মুম্বাইয়ে বেশ ভালো বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে, আজ সপ্তাহের প্রথম দিন সোমবার (১৩ অক্টোবর, ২০২৫) থেকে এই রাজ্য থেকে বর্ষার বিদায়-পর্ব শুরু হয়ে গেল। নতুন করে দুই বঙ্গেই বৃষ্টির জোরালো সম্ভাবনা বেশ ক্ষীণ। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে নতুন করে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তেমন প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা আর নেই। মোটের ওপর দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় আবহাওয়া আজ থেকেই শুষ্ক হতে শুরু করবে।
অন্যদিকে মৌসম ভবন জানিয়েছে, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশের পর এবার মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, সিকিম, ওড়িশা, তেলঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বর্ষা বিদায়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পুজোর পর থেকেই এখন ভোরের দিকে আর সন্ধ্যের পর থেকে বাড়ির বাইরে বেরোলে মৃদু ঠাণ্ডার অনুভূতি হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সময় যত এগোবে এই শীতের শিরশিরানি ততই বাড়বে। এমনিতেই নভেম্বর মাসের শুরু থেকে শীতের শিরশিরানি বঙ্গে অনুভূত হতে শুরু হয়।
বাংলায় ঘরে ঘরে সোয়েটার, লেপ-কম্পল বের হলেও শীত পড়তে পড়তে ডিসেম্বর হয়ে যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই অক্টোবরের শেষ এবং নভেম্বরের শুরুতে শীত শীত ভাব অনুভূত হতে থাকে। যদিও জলীয় বাষ্পের দাপট না কমলে বাতাস শুষ্ক হয় না। সে কারণেই বর্ষা বিদায়ের জন্য অপেক্ষা বাড়ছিল।
এবার কি অক্টোবর থেকেই শীতের অনুভূতি বাড়তে শুরু করবে? এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও পূর্বাভাস নে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।

