Bangladesh-Pakistan: গত বছর শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে  তৎপরতা বাড়াচ্ছে পাকিস্তানের সেনা ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। সীমান্তের ওপারের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ভারত।

Pakistan's ISI in Bangladesh: একদিকে কাশ্মীর (Kashmir) সীমান্ত, অন্যদিকে বাংলাদেশ (Bangladesh) সীমান্ত, দুই দিকেই কড়া নজর রাখতে হচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী (Indian Army) ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (BSF)। কারণ, গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে উপস্থিতি ও তৎপরতা বাড়াচ্ছে পাকিস্তানের সেনা (Pakistani military) এবং গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই (Pakistan's ISI)। মহম্মদ ইউনূস সরকারের আমলে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সখ্য তৈরি হয়েছে। এই কারণে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার (Pahalgam terror attack) পর পাকিস্তান যাতে বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতকে বিব্রত করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক সেনাবাহিনী। বাংলাদেশ সীমান্তে চূড়ান্ত সতর্কতা বজায় রাখা হয়েছে। অনুপ্রবেশ রোখার জন্য কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি মায়ানমার (Myanmar) সীমান্তেও কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। কারণ, মায়ানমারের পরিস্থিতিও ভালো নয়। সেদেশে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্তে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে।

ভারতে অস্থিরতা তৈরির লক্ষ্যে আইএসআই

শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের আমলে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের কূটনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠতা ছিল না। কিন্তু হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই বাংলাদেশে সক্রিয় হচ্ছে আইএসআই ও পাক সেনা। বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সন্ত্রাসবাদীদের মদত দিচ্ছে পাকিস্তান। এই মৌলবাদী ও সন্ত্রাসবাদীদের ব্যবহার করেই ভারত সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে আইএসআই। সম্প্রতি মালদার মোথাবাড়ি এবং মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় যে হিংসার ঘটনা দেখা গিয়েছে, তার পিছনে বাংলাদেশের হাত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে মুর্শিদাবাদের ঘটনায় বাংলাদেশের মৌলবাদীদের হাত থাকতে পারে কেন্দ্রীয় সরকারকে এক রিপোর্টে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। মালদা ও মুর্শিদাবাদে মৌলবাদ বাড়ছে। এই কারণে পাকিস্তান সীমান্তের পাশাপাশি বাংলাদেশ সীমান্তেও নজর দিতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত বরাবরই উত্তেজনাপ্রবণ। সম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্তেও উত্তেজনা বাড়ছে। এই কারণে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।

ভারতের প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় পাকিস্তান

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এই ঘটনার পর পাকিস্তানকে পাল্টা আঘাত করার দাবি তুলছেন সারা দেশের মানুষ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সেনা যে কোনও সময় আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পাকিস্তান। এই কারণে ভারত সীমান্তে সেনা জওয়ানের সংখ্যা বাড়িয়েছে পাকিস্তান। তাদের নৌবাহিনীকেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়ে যাচ্ছে পাক সেনা। অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের পাল্টা জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনা। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার (Attaullah Tarar) বলেছেন, পাকিস্তান সরকার বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পেরেছে, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আঘাত হানতে পারে ভারত। এই কারণে ভয়ে কাঁটা হয়ে রয়েছে পাকিস্তান। ভারতীয় সেনা কবে এবং কখন অভিযান চালাবে, সে বিষয়ে অবশ্য কিছু জানা যায়নি।

বাংলাদেশ নিয়েও চিন্তা ভারতের

বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গিয়েছে। সংখ্যালঘুদের উপর যেমন অত্যাচার চালানো হচ্ছে, তেমনই ভারত সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশও বাড়ছে। পাশাপাশি মায়ানমার সীমান্তেও নজর রাখতে হচ্ছে ভারতকে। কারণ, মায়ানমারেও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে যেমন ধর্মীয় বিষয় নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, মায়ানমারে অবশ্য সেরকম কিছু হয়নি। সেখানে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দানা বাঁধছে। বাংলাদেশকেও মায়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক থাকতে হচ্ছে। কারণ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে মায়ানমারের বিদ্রোহীরা। সবমিলিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে এখন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ভারতের অভ্যন্তরে যাতে এই অস্থিরতা বড় সমস্যা তৈরি করতে না পারে, সেই কারণেই পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্তেও হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সীমান্তে ২৪ ঘণ্টা পাহারা দিচ্ছেন জওয়ানরা।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।