ভারতীয় নৌবাহিনীর বহরে আরও একটি অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হতে চলেছে। ৬ অক্টোবর নৌবাহিনীতে 'আইএনএস অ্যান্ড্রোট' কমিশন করা হবে। ৭৭ মিটারেরও বেশি লম্বা এই যুদ্ধজাহাজটি উপকূলীয় এলাকায় শত্রুদের ধ্বংস করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

আইএনএস অ্যান্ড্রোট: ভারতীয় নৌবাহিনীতে অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ 'আইএনএস অ্যান্ড্রোট' সোমবার ৬ অক্টোবর কমিশনড হতে চলেছে। এর ফলে সমুদ্রে ভারত এক নতুন শক্তি পাবে। এই যুদ্ধজাহাজটি মূলত উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যবহার করা হবে, কারণ এটি কম গভীর জলের এলাকায় অভিযানের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই জাহাজটি যেকোনো সাবমেরিন আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে, যা নৌবাহিনীর শক্তি বাড়িয়ে তুলবে।

প্রশ্ন- আইএনএস অ্যান্ড্রোটের নাম কার নামে রাখা হয়েছে?

উত্তর- ভারতীয় নৌবাহিনীর এই যুদ্ধজাহাজটির নাম লক্ষদ্বীপের একটি দ্বীপ 'অ্যান্ড্রোট'-এর নামে রাখা হয়েছে। এই দ্বীপটি ভারতের পশ্চিম উপকূল থেকে দূরে আরব সাগরে অবস্থিত ৩৬টি প্রবাল দ্বীপের একটি অংশ। দ্বীপটি কোচি থেকে পশ্চিমে ২৯৩ কিমি (১৮২ মাইল) দূরে অবস্থিত। অ্যান্ড্রোট দ্বীপের আয়তন প্রায় ৫ বর্গ কিলোমিটার।

প্রশ্ন- আইএনএস অ্যান্ড্রোট কোন কোম্পানি তৈরি করেছে?

উত্তর- আইএনএস অ্যান্ড্রোট তৈরি করেছে কলকাতার গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (GRSE)। 'অ্যান্ড্রোট' ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ জিআরএসই, কলকাতায় ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। অ্যান্ড্রোটের ডেলিভারি ভারতীয় নৌবাহিনীর দেশীয় জাহাজ নির্মাণের প্রচেষ্টায় একটি নতুন মাইলফলক, যা ৮০%-এর বেশি দেশীয় সামগ্রী ব্যবহার করে সরকারের 'আত্মনির্ভর ভারত' দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করে এবং ক্রমবর্ধমান দেশীয় ক্ষমতা ও আমদানির উপর নির্ভরতা কমানোর একটি বড় উদাহরণ।

প্রশ্ন- নৌবাহিনীর অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ আইএনএস অ্যান্ড্রোট কতটা বড়?

উত্তর- আইএনএস অ্যান্ড্রোটের দৈর্ঘ্য ৭৭.৬ মিটার অর্থাৎ ২৫৪ ফুটেরও বেশি। এর ওজন ১৪৯০ টনেরও বেশি। এতে ডিজেল ইঞ্জিন ওয়াটারজেটের পাশাপাশি লাইট টর্পেডোও লাগানো আছে। এছাড়াও, এতে যে অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার রকেট লাগানো হয়েছে, তা সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। এই যুদ্ধজাহাজে সমুদ্রের গভীরে সাবমেরিন শনাক্ত করার জন্য আধুনিক সোনার (SONAR) সিস্টেম ইনস্টল করা হয়েছে। শত্রু দেশের কোনো সাবমেরিন যদি ভারতের উপকূলীয় এলাকার কাছাকাছি আসে, তবে এতে থাকা সোনার সিস্টেম সেটিকে খুঁজে বের করে ধ্বংস করে দেবে।

প্রশ্ন- আইএনএস অ্যান্ড্রোট অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় নৌবাহিনীর কী কী সুবিধা হবে?

উত্তর- আইএনএস অ্যান্ড্রোট নৌবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে। এই জাহাজটি কেবল নৌবাহিনীর অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধ ক্ষমতা বাড়াবে না, বরং দেশীয় প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিশ্বমানের যুদ্ধজাহাজ ডিজাইন, উন্নয়ন এবং নির্মাণের সংকল্পকেও শক্তিশালী করবে। অ্যান্টি-সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার ছাড়াও 'আইএনএস অ্যান্ড্রোট' সামুদ্রিক সীমানা পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান এবং উদ্ধার অভিযানেও কাজে আসবে।

প্রশ্ন- গত কয়েক মাসে কোন কোন যুদ্ধজাহাজ ভারতীয় নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে?

উত্তর- গত কয়েক মাসে ভারতীয় নৌবাহিনী বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আইএনএস উদয়গিরি, আইএনএস হিমগিরি, আইএনএস নিস্তার, আইএনএস অর্নালা, আইএনএস নিস্তার এবং 'আইএনএস তমাল'।