সংক্ষিপ্ত
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেন (Ukraine) থেকে রুশ বাহিনীর (Russian Army) গোলার আঘাতে মৃত ভারতীয় ছাত্র নবীন জ্ঞানগৌড়ার (Naveen Gyanagouda) মরদেহ দেশে ফিরছে। কর্ণাটকের (Karnataka) মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই (Basavaraj Bommai) জানিয়েছেন, রবিবারই বেঙ্গালুরু (Bengaluru) এসে পৌঁছাবে তাঁর দেহ।
অবশেষে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেন (Ukraine) থেকে দেশে ফিরছে, রুশ গোলার আঘাতে মৃত ভারতীয় ছাত্র নবীন জ্ঞানগৌড়ার (Naveen Gyanagouda) মরদেহ। কর্ণাটকের (Karnataka) মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই (Basavaraj Bommai) জানিয়েছেন, রবিবারই ওই ভারতীয় ছাত্রের দেহ এসে পৌঁছাবে বেঙ্গালুরুতে (Bengaluru)। কর্নাটকের হাভেরি (Haveri) জেলায় তাঁর বাড়ি। ডাক্তারি পড়তে ইউক্রেনের খারকিভ (Kharkiv) শহরে গিয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর দিনও বহু ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের তিনি খারকিভ ছাড়তে সহায়তা করেছিলেন, তবে থেকে গিয়েছিলেন নিজে।
এদিন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রবিবার ভোর ৩টেয় নবীনের মরদেহ এসে পৌঁছবে কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Kempegowda International Airport)। হাভেরি জেলার রানেবেন্নুর তালুকের চালাগেরি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ২১ বছরের এই যুবক। মুখ্যমন্ত্রী বোমাই নিজেও হাভেরি জেলারই প্রতিনিধি। তিনি নবীনের পরিবারকে চেনেনও। সম্ভবত বেঙ্গালুরু থেকে তাঁর নেতৃত্বেই গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে নবীনের দেহ।
আরও পড়ুুন - চারিদিকে শুধু ধ্বংস আর মৃত্যুর হাহাকার - ছবিতে ছবিতে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেন
আরও পড়ুন - 'আসতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়', ইউক্রেন-ফেরত ছাত্রের মুখে যুদ্ধের ভয়াবহতা
আরও পড়ুন - রাশিয়া ইউক্রেন সংঘর্ষে অপূর্ণ রয়ে গেল ভারতীয় পড়ুয়ার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন
গত ১ মার্চ খারকিভ শহরে রুশ বাহিনীর (Russian Army) আক্রমণে নবীনের মৃত্যু হয়। তিনিই চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia Ukraine Crisis) বলি প্রথম ভারতীয় নাগরিক। খারকিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির (Kharkiv National Medical University) চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। এশিয়ানেট নিউজকে, খারকিভ থেকে ফেরা তাঁর এক জুনিয়র, চন্দন গৌড়া জানিয়েছিলেন, অনেককেই শহর ছাড়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন নবীন। কিন্তু, আরও কয়েকজন ভারতীয় ছাত্র সেখানে রয়ে গিয়েছে বলে, তাঁদের জন্য নবীন জ্ঞানগৌড়াও থেকে গিয়েছিলেন।
খারকিভ শহরে রুশ গোলার আঘাতে প্রাণ গিয়েছিল নবীনের
চন্দন গৌড়া জানিয়েছিলেন, নবীন ছিলেন, তাঁদের সিনিয়র। ১ মার্চ সকালে তিনিই খুব ভোরে তাঁদের ঘুম থেকে তুলে দিয়েছিলেন। সেই সময়ে কারফিউ না থাকায় চন্দনদের তখনই বেরিয়ে পড়তে বলেছিলেন। নবীন বলেছিলেন, তিনি অন্য জুনিয়রদের সঙ্গে নিয়ে খারকিভ ছাড়বেন। তাই তিনি থেকে যাবেন। বলেছিলেন, 'চিন্তা নেই, আমরা সবাই লভিভে (Lviv) দেখা করব'। চন্দনরা সেই আশ্বাস পেয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠেছিলেন। দুই ঘণ্টা পরই, বন্ধুদের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলেন, নবীন আর নেই।
নবীনের শোকাহত পরিবার
ইউক্রেনে রুশ হামলা (Russian Invation in Ukraine) শুরুর পর থেকে তাঁরা খারকিভ শহরের একটি বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিলেন। ঘটনার দিন, নবীন মুদি দোকানের জিনিসপত্র কিনতে বাঙ্কার থেকে বেরিয়েছিলেন। রুশ বাহিনীর ছোঁড়া একটি শেল এসে পড়ে, আরও বেশ কয়েকজনের সঙ্গে মৃত্যু হয়েছিল এই প্রতিশ্রুতিমান ভারতীয় ছাত্রেরও। চন্দন জানিয়েছেন, গত বছর বার্ষিক পরীক্ষায় তিনি প্রথম হয়েছিলেন।
কেন্দ্র ও রাজ্য - উভয় সরকারের পক্ষ থেকেই নবীনের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। চলমান যুদ্ধের কারণে, তাঁর দেহ অবিলম্বে ইউক্রেন থেকে ভারতে ফেরানো সম্ভব হয়নি। তাই, এতদিন, তাঁর দেহ শুষ্ক করে স্থানীয় একটি মর্গে রাখা হয়েছিল।