সংক্ষিপ্ত

দারিদ্রপীড়িত পেরানাদের সংসার চলে মূলত পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে, বাড়ির বউয়ের উপার্জিত অর্থেই। মেয়েদের অভিভাবকরাও মেনে নিয়েছেন এই প্রথা।

বাড়ির বউ গৃহলক্ষ্মী। তেমনই সম্মান দেওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে ভারতে। কিন্তু ভারতের বুকেই এক সম্প্রদায় রয়েছে,যারা নিজেদের বাড়ির বউকে পতিতালয়ে পাঠায়। এমনই নিয়ম তাদের। খোদ দিল্লিতেই চলে আসছে এমন নিয়ম। দিল্লির নজফগড়ের পেরেনা সম্প্রদায়ের রয়েছে এই ভয়াবহ রীতি (custom of Perana community)। কারণ বাড়ির বউদের (housewives) দিয়ে পতিতাবৃত্তি (prostitutes) করানোই তাদের নিয়ম। এই অসম্মানজনক পেশায় নারীদের ঠেলে দেন তাদের শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই।

পেরানা সম্প্রদায়ের মানুষ বাড়িতে কন্যা সন্তান হলে খুব খুশি হন। কারণ এতে তাদের উপার্জনের রাস্তা খুলে যায়। পেরানাদের মধ্যে ছোটবেলায় মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর রীতি নেই। বরং সাত-আট বছর বয়স হলেই বাবা-মা মেয়েকে পাঠিয়ে দেন কোনো দালালের কাছে। সেই দালালের কাজ হয়, পতিতাবৃত্তিতে মেয়েদের প্রশিক্ষিত করা।

এই সম্প্রদায়ের মধ্যে বহু কাল থেকে এই রীতি চলে আসছে। দারিদ্রপীড়িত পেরানাদের সংসার চলে মূলত পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে, বাড়ির বউয়ের উপার্জিত অর্থেই। মেয়েদের অভিভাবকরাও মেনে নিয়েছেন এই প্রথা। আর পেরানা সম্প্রদায়ের মেয়েরা? তাদের মধ্যে এই রীতি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে, কিন্তু প্রতিবাদের সাহস নেই। কারণ পতিতাবৃত্তিতে অরাজি হলে শ্বশুরবাড়িতে মেয়েদের উপর চলে অকথ্য অত্যাচার, এমনকি সময় বিশেষে হত্যাও করা হয়।

১২ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের বিয়ে দেয়া হয়। অবশ্য বিয়েটাও এক রকম সওদাই। কারণ মেয়েকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেয়ের বাবা-মার হাতে তুলে দেন মোটা অঙ্কের টাকা। যারা যত বেশি দর হাঁকতে পারেন, তাদের ঘরেই যায় মেয়ে।

বিয়ের কয়েক দিন পর থেকেই বাড়ির বউয়ের জন্য ‘কাস্টমার’ খোঁজা শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে ‘দালাল’-এর কাজ করেন মেয়েটির স্বামী। প্রত্যেক রাতে নতুন নতুন ক্রেতা আসে পতিতাবৃত্তিতে নামা নতুন বউয়ের কাছে। মেয়েটির পারিশ্রমিক ওঠে তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যদের হাতে।