সংক্ষিপ্ত

জৈসলমেরের সোনার কেল্লা, যেখানে হাজার হাজার মানুষ বিনা ভাড়ায় থাকেন! এই কিল্লায় রেস্তোরাঁ, রিসোর্টও আছে এবং দেয়ালে বিবাহের কার্ডও দেখা যায়।

জৈসলমের সোনার কেল্লা, যার নাম শুনলেই বাঙালির মনে ফুটে ওঠে ‘মুকুল, সত্যজিত রায়, ফেলুদা, ডক্টর হাজরা’-সহ আরও একাধিক স্মৃতি। এই সোনার কেল্লাতেই ফেলুদা জটায়ুর বন্ধুত্ব। এই সোনার কেল্লাতেই সটায়ুর প্রথম উটে চড়ার সেই স্মৃতি বাঙালিকে আজও তাড়িয়ে বেড়ায়। এই রাজস্থান তার বিশাল প্রাসাদ, দুর্গ, সংস্কৃতি, পোশাক-পরিচ্ছদ এবং শিল্পকলার জন্য কেবল দেশেই নয়, সারা বিশ্বেই পরিচিত। এখানে এমন অনেক সুন্দর ঐতিহাসিক ভবন এবং দুর্গ রয়েছে, যেগুলো দেখার জন্য বিদেশী পর্যটকরা প্রতি বছর হাজার হাজার সংখ্যায় আসেন। রাজস্থানের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে জৈসলমেরের সোনার কেল্লা, যার নির্মাণ প্রায় ৯০০ বছর আগে হয়েছিল। যা ১১৫৬ সালে ভাটি রাজপুত রাজা রাওয়াল জয়সাল দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।

দেশের প্রথম এমন কেল্লা…যেখানে থাকেন হাজার হাজার মানুষ

সোনার কেল্লাকে সোনার দুর্গ হিসেবে দেশ এবং বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। সূর্যাস্তের সময় এই কেল্লা ঠিক সোনার মতো ঝলমল করে। এই কেল্লা হলুদ পাথর দিয়ে তৈরি। এর উপর থেকে আপনি জৈসলমের শহরের প্রতিটি প্রান্ত দেখতে পারবেন। কিন্তু আপনি কি জানেন এই কিল্লার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এটি দেশের একমাত্র কিল্লা যেখানে বর্তমানে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করেন। এখানে থাকার জন্য তাদের কোন ভাড়া বা কোনও शुल्क দিতে হয় না। এখানে অনেক মন্দির এবং হাভেলি রয়েছে।

কেল্লায় বেশ কয়েকটি বড় রেস্তোরাঁ এবং রিসোর্টও রয়েছে

উল্লেখ্য, এই কিল্লায় বেশ কয়েকটি বড় রেস্তোরাঁ এবং রিসোর্টও পরিচালিত হয়। যেখানে মানুষ এসে পুরো জৈসলমের দর্শন করতে পারে এবং একই সাথে চমৎকার খাবার উপভোগ করতে পারে। আসলে, এখানে রাজা-মহারাজাদের আমল থেকেই মানুষের বাড়িঘর তৈরি হয়েছে। তাই এই কিল্লায় আজও হাজার হাজার মানুষের বসতি রয়েছে।

দেয়ালের কিনারের রহস্য আজও কেউ জানতে পারেনি

যদিও কিল্লার কিছু অংশ আজও ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপের অধীনে। তাই সেই অঞ্চলে কাউকে থাকতে দেওয়া হয় না। বাকি অংশে হাজার হাজার মানুষের বসতি রয়েছে। আপনি যদি দূর থেকে দেখেন তবে কেল্লার দেয়ালের কিনারায় অনেক সময় মানুষের কাপড় শুকতে দেখবেন যেন কারও বাড়ি।

কিল্লার দেয়ালে ছাপা হয় বিবাহের কার্ড

এই কিল্লায় বসবাসকারী মানুষের একটি ঐতিহ্য রয়েছে। তাদের বাড়িতে কোনও বিবাহ হলে তারা বিবাহের কার্ড দেয়ালে আঁকিয়ে দেয়। সেই কার্ড দেখে যে কেউ আমন্ত্রণ ছাড়াই বিবাহে যেতে পারে। তাকে কেউ কিছু বলে না। যদিও অনেক সময় এই কিল্লার দেয়াল ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে। তবে স্থানীয় প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে তা মেরামত করে।