সংক্ষিপ্ত
- সকাল থেকে ছাত্রছাত্রী ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ
- অস্বাভাবিক বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে উত্তাল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়
- পুলিশকে জল কামানও চালাতে হয়
- শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী
সোমবার সকাল থেকে ছাত্রছাত্রী ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়। গত ১৫ দিন ধরে হস্টেলের বেতন বৃদ্ধি-সহ বেশ কয়েকটি দাবিতে ধর্মঘট করছে জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদ। এতদিন প্রতিবাদ বিক্ষোভ ক্যাম্পাসের ভিতরে চললেও, এদিন সকালে তা ক্যাম্পাসের বাইরে আসতেই পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নিয়েছে। অবস্থা সামলাতে পুলিশ জল কামানও চালায়। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ছাত্র সংসদের সঙ্গে কতা বলতে আসতে হয় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীকেও।
কতটা বেড়েছে হস্টেলের ফি?
এতদিন জেএনইউ-এ হস্টেলের একটি সিঙ্গল রুমের বেতন ছিল ১০ টাকা। তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০০ টাকা। অর্থাৎ এক ধাক্কায় পি বেড়েছে ২৯০০ শতাংশ। একই ভাবে ডাবল রুমের ভাড়া ২০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০০ টাকা। এছাড়া সিকিওরিটি ডিপোজিটের পরিমাণ ৫,৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১২০০০ টাকা।
ছাত্রছাত্রী বনাম পুলিশ
ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করতেই দিল্লি পুলিশ জেএনইউ-এর বাইরে ব্যারিকেড করে ছাত্রাদের আটকায়। ব্য়ারিকেডের ওপাড় থেকেই ছাত্রাছাত্রীরা স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের হাতে বেতন বৃদ্ধি বিরোধী ব্যানার-পোস্টার ছিল। একপর্বে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ছাত্ররা। ছাত্রদের রীতিমতো ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে যায় পুলিশ। এই নিয়েই মাঝে তীব্র বিবাদ শুরু হয়।
চালাতে হল জল কামান, রেহাই পেলেন না ছাত্রীরাও
এক পর্বে ছাত্রছাত্রীদের উপর দজল কামানও চালায় পুলিশ। রেহাই পাননি ছাত্রীরাও। তাদের সরিয়ে দিতে মহিলা পুলিশের এক বিশাল বাহিনী আনা হয়। তারা ধাক্কা মেরে ওি স্থান থেকে সরিয়ে দেন ছাত্রীদের।
আসলেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী
শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল 'নিশঙ্ক'-কে। তিনি জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সঙ্গে দেখা করেন। মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন শিগগিরই ছাত্রাছাত্রীদের সমস্যার সমাধান বের করা হবে। মন্ত্রীর আশ্বাসে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়।
ছাত্র সংসদের বক্তব্য
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়েছেন, গত ১৫ দিন ধরেই ক্যাম্পাসে এই বেতন বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছে। জেএনইউ-এর অন্তত ৪০ শতাংশ ছাত্রছছাত্রী গরীব ঘরের ছেলেমেয়ে। আচমকা এই উচ্চ হারে বেতন বৃদ্ধির ফলে তাঁরা খুবই সমস্যায় পড়েছেন। অর্থের অভাবে তাদের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার জোগার। তাই রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা।
নয়া হস্টেল বিধি
সম্প্রতি জেএনইউ কর্তৃপক্ষ একটি খসড়া হস্টেল বিধি পেশ করেছেন। চড়া হারে বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি পোশাক বিধি, নির্দিষ্ট সময় মেনে হস্টেলে ঢোকার মতো বেশ কিছু বিষয় রয়েছে। ইন্টার-হল কর্তৃপক্ষও এই খসড়া বিধি-তে সম্মতি দিয়েছে।
জেএনইউ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
গত বৃহস্পতিবারই জেএনইউ কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংসদকে তাদের প্রতিবাদ বন্ধ করার অনুরোধ করেছিল। কর্তৃপক্ষের দাবি এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বহু ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছেন না। পড়াশোনায় মন দিতে পারছেন না।