সংক্ষিপ্ত
- কার্গিল যুদ্ধ জয়ের ২০ বছর পূর্ণ হচ্ছে
- এই জয় নিয়ে ভারতের গর্বের শেষ নেই
- অথচ কার্গিল যুদ্ধের শহিদরা আজ প্রায় বিস্মৃতির অতলে
- শহিদ হরিশ পালকে নিয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করেনি পঞ্জাব সরকার
কার্গিল যুদ্ধ নিয়ে ভারতের গর্বের শেষ নেই। ১৯৯৯ সালের মে মাসে কাশ্মীরি জঙ্গির ছদ্মবেশে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানি সেনা ঢুকে পড়েছিল ভারতের মাটিতে। তারপর প্রায় তিন মাস ধরে চলা যুদ্ধে পাকিস্তানিদের পরাজিত করে নিজেদের জায়গা ফের কব্জায় এনেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী।
তবে এই জয় বিনামূল্যে আসেনি। 'অপারেশন বিজয়'-এ শহিদ হন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৫৩০ জন সদস্য। ঘটনার পর ২০ বছর কেটে গিয়েছে। কার্গিল জয়ের ২০ বছর পূর্তি পালন করতে ভারতে বিশেষ করে কাশ্মীর উপত্যকায বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু য়ে শহিদদের প্রাণের বিনিময়ে মিলেছিল এই গর্বের মুহূর্ত তাদের কতটা মনে রাখা হয়েছে?
৫৩০ জন শহিদের একজন ছিলেন পঞ্জাবের হরিশ পাল। কার্গিল যুদ্ধে তিনি প্রাণ দেওয়ার পর পঞ্জাব সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল হরিশের নামে একটি স্কুল খোলা হবে। এছাড়া একটি গ্রন্থাগার ও সমাধিক্ষেত্রও করা হবে শহিদের স্মৃতিতে।
২০ বছর কেটে গিয়েছে। সেই সময় পঞ্জাবে ছিল এনডিএ অর্থাৎ শিরোমনি অকালি দল ও বিজেপির সরকার। তারপর থেকে একবার কংগ্রেস ও দুইবার এনডিএ সেই রাজ্যে সরকার গড়েছে। এখন আবার ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু কোনও সরকারই হরিশ পলের মাকে দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেনি।
স্কুল, গ্রন্থাগার, সমাধিক্ষেত্র কিছুই হয়নি। বস্তুত, পঞ্জাবের যে গ্রামে হরিশের জম্ন, যেখানে এখনও তাঁর পরিবার বাস করেন, সেই গ্রামে এখনও একটিও স্কুলই নেই। পুত্রহীনা হরিশের মা, বাড়িতে বসে অপেক্ষা করেন সরকারি উদ্যোগ শুরু হওয়ার। হাতে ধরা থাকে একটি ফ্রেমে বাঁধানো ছবি। সেনার উর্দিতে হরিশ দাঁড়িয়ে আছেন, আর পিছনে টাইগার হিলের মাথায় পত পত করে উড়ছে ভারতের তেরঙ্গা।
কার্গিল বিজয় দিবস আসে, যায়। রাজনীতির কারবারিরা সেনা দের নিয়ে বক্তৃতা দিয়ে ফাটিয়ে দেন। সোশঅয়াল মিডিয়ায় দেশভক্তি প্রতিযোগিতা লেগে যায়। কিন্তু হরিশ-এর গ্রামের অবস্থাটা পাল্টায় না। কার্গিল যুদ্ধে জয় নিয়ে গর্ব করার মধ্যে কোথাও হারিয়েই গিয়েছেন, সেই গর্বের স্থতিরা। হারিয়েই গিয়েছেন হরিশ পালরা। হরিশের মায়ের অবশ্য পুত্রকে নিয়ে গর্বের শেষ নেই। তিনি এখনও আশা রাখেন একদিন না একদিন সরকার ঠিক তার প্রতিশ্রুতি রাখবে। অন্তত একটি স্কুল হোক শহিদ হরিশের নামে, এটাই তাঁর কামনা।