সংক্ষিপ্ত
কর্নাটকের (Karnataka) এক স্বঘোষিত গডম্যানের বুজরুকির শিকার ৩৭ বছরের মহিলা। মাথাব্যথার নিরাময় করতে, মহিলার মাথাতেই লাঠি দিয়ে বারবার আঘাত করল সাধুবাবা।
ফের এক স্বঘোষিত গডম্যানের বুজরুকির শিকার হলেন এক ৩৭ বছর বয়সী মহিলা। সামান্য মাথাব্যথার নিরাময় করতে, ওই ভন্ড সাধু মহিলার মাথাতেই লাঠি দিয়ে বারবার আঘাত করে বলে অভিযোগ। তাতেই, প্রাণ হারান ওই গৃহবধূ। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে, গত বুধবার ভোরে, কর্ণাটকের (Karnataka) হাসন (Hasan) জেলায়। এই বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করা হলেও, অভিযুক্ত গডম্যানকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ওই মহিলার নাম পার্বতী। হাসন জেলার গৌদারাহাল্লি (Gowdarahalli) এলাকায় থাকতেন তিনি। পুলিশের কাছে তাঁর মেয়ে জানিয়েছেন, গত মাস দুই ধরেই প্রায়ই মাথাব্যথার সমস্যার ভুগতেন পার্বতী। চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, চিকিৎসকরা অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেও, তাঁর শরীরে কোনও রোগ খুঁজে পাননি। কেন তাঁর মাঝে মাঝেই মাথা ধরছে, তা বোঝা যায়নি। ডাক্তাররা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, পার্বতীর কোনও শারীরিক সমস্যা নেই।
তারপরও মাথাব্যথা না কমায়, পার্বতীকে, মনু নামে স্থানীয় এএক স্বঘোষিত গডম্যান (Godman) বা 'ঈশ্বরের দূতে'র কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁর এক আত্মীয়। পার্বতীর সেই আত্মীয়ের বাড়ি ছিল বেক্কা গ্রামে। সেই গ্রামের মন্দিরেই আস্তানা ওই সাধুর। গত ২৯ নভেম্বর ওই আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন পার্বতী। ২ ডিসেম্বর দুজনে মিলে গিয়েছিলেন সেই সাধুবাবার সঙ্গে দেখা করতে। অভিযুক্ত সাধু, পার্বতীকে একটি পাতিলেবু দিয়েছিলেন এবং কয়েকদিন পর আবার তাঁর কাছে ফিরে আসতে বলেন।
৭ ডিসেম্বর আবার মনুর আস্তানায় গিয়েছিলেন পার্বতী। পার্বতীর মেয়ে জানিয়েছেন, ওইদিন, চিকিত্সার অংশ হিসাবে, পার্বতীর মাথায়, হাতে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে একটি লাঠি দিয়ে আঘাত করতে শুরু করেছিল মনু। প্রথমে আস্তে আস্তে মারলেও, ধীরে ধীরে যাকে বলে বেদম প্রহার করা শুরু করে। পার্বতী তা সহ্য করতে না পেরে, তাকে থামতে বললেও, কথা কানে নেয়নি মনু। একসময়, সেই মারের চোটে সংজ্ঞা হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন পার্বতী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরপর অবিলম্বে সংজ্ঞাহীন পার্বতীকে চান্নারায়াপাটনা (Channarayapatna) এলাকার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গত বুধবার (৮ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ মস্তিষ্কে আঘাতজনিত কারণে মৃত্যু হয় পার্বতীর। এরপরই, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শ্রাবণবেলাগোলা (Shravanabelagola) থানার পুলিশকে খবর দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ একটি হত্যার মামলা দায়ের করেছে। তবে, ঘটনার পর থেকেই খোঁজ মিলছে না মনুর।