সংক্ষিপ্ত
রাহুল ভাটের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এদিন একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠি চার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও ক্ষোভ বাড়ছে উপত্যকাবাসীর মধ্যে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীরের বদগাওকে সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে নিহত হন কাশ্মীরি পণ্ডিত রাহুল ভাট। তিনি বদগাও জেলার একজন সরকারী কর্মী ছিলেন। ২০১০ -১১ সালে অভিবাসীদের জন্য বিশেষ কর্মসংস্থান প্যাকেজের অধীনে তিনি সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন। চাঁদুরা শহরের তহসিল অফিসের ভিতরে ঢুকে তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জম্মু ও কাশ্মীর। শুক্রবার সকাল থেকেই ভূস্বর্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবারের সদস্যরা।
স্থানীয় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের দাবি কেন্দ্র শাসিত সরকারের উচিৎ তাদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। কিন্তু তা করা হয়নি। আগামী দিনে যদি তাদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা না হয় তাহলে তারা সরকারি চাকরি থেকে গণ-ইস্তফা দেবেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে রাহুল ভাটের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এদিন একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠি চার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও ক্ষোভ বাড়ছে উপত্যকাবাসীর মধ্যে। স্থানীয়দের অভিযোগ পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দাদের লক্ষ্য করে লাঠি চার্জ করতে পারে, কিন্তু সন্ত্রাসবাদীদের ধরতে পারে না। এক বিক্ষোভকারী কেন্দ্রীয় সরকারের পুনর্বাসন নিয়েও প্রশ্ন করেছেন। তাঁর অভিযোগ তাঁদের এখানে হত্যা করার জন্যই ডেকে ডেকে নিয়ে আসা হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে তাদের কোনও নিরাপত্তা নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি। এক বিক্ষোভকারী জানিয়েছেন তাঁরা এখানে কাজ করতে এসেছেন। সরকার তাদের চাকরি দিয়েছে। কিন্তু হিংসার বলি হতে হচ্ছে তাদের।
কেন্দ্র শাসিত এই অঞ্চলের প্রশাসনের তীব্র নিন্দা করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। তিনি বলেন, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে তাঁর। তিনি তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যেতে চান। কিন্তু তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন কাশ্মীরের মুসলমান ও হিন্দুরা একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু তাঁদের হাত-পা বেঁধে রেখেছে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের সরকার।
সরকারি অফিসে ঢুকে কাশ্মীরি পণ্ডিতকে হত্যা করায় রীতিমত সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পুনর্বসনের জন্য একাধিক পদক্ষেপ করার কথা বলছে। অথচ ভূস্বর্গের পরিস্থিতি যে আগের তুলনায় তেমন পরিবর্তন হয়নি তা এই ঘটনা নতুন করে প্রমাণ করে দিল।