সংক্ষিপ্ত


এক মুসলিম মহিলাকে (Muslim Women) তালাক (Divorce) দেওয়ার অধিকার দিল কেরল হাইকোর্ট (Kerala High Court)। এর জন্য পবিত্র কোরান-এর (The Holly Quran) প্রসঙ্গ টানল আদালত।

মুসলিম মহিলাদের (Muslim Women) তালাক (Divorce) দেওয়ার অধিকার! সাড়া ফেলে দিয়েছে কেরল হাইকোর্টের (Kerala High Court) এক সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ। গত শনিবার আদালত বলেছে, যদি কোনও মহিলার স্বামী ফের আরেকজনকে বিবাহ করে এবং আগের স্ত্রীকে নতুন স্ত্রী-এর সমান বিবেচনা না করে, তাদের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে বৈষম্য করে, তাহলে সেই ক্ষেত্রে আগের স্ত্রী-এর তাঁর স্বামীকে তালাক দেওয়ার অধিকার দেওয়া উচিত। এই পর্যবেক্ষণের সপক্ষে পবিত্র কোরান-এর (The Holly Quran) প্রসঙ্গ টেনেছে আদালত। বলেছে, ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থে সকল স্ত্রী-এর প্রতি সমান আচরণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। যদি এই বিষয়টি লঙ্ঘিত হয়, সেই ক্ষেত্রে মহিলাদের বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করা উচিত।

কান্নুর (Kannur) জেলার থ্যালাসেরির (Thalassery) এক মুসলিম মহিলা তাঁর স্বামীর কাছ থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছিলেন। তাঁর স্বামী আবার বিয়ে করেছেন এবং তাঁর সঙ্গে থাকেন না, নতুন বউকে নিয়ে আলাদা থাকেন। তিনি প্রথমে থ্যালাসেরি পারিবারিক আদালতে আবেদন করেন। সেখানে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর, তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেখানে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁরই জয় হয়েছে। 

আরও পড়ুন - নির্যাতিতার দুই উরুর মাঝে পুরুষাঙ্গের অনুপ্রবেশ, ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল হাইকোর্ট

আরও পড়ুন - মহিলাদের ঋতুস্রাবের উপরও চলে কড়া নজরদারি, চিনা নৃশংসতার ভয়ঙ্কর বিবরণ দিলেন পলাতক নাগরিকরা

আরও পড়ুন - দোল-এ খোলাখুলি মুসলিম মহিলাদের হেনস্থার আহ্বান, কুরুচিকর পোস্টে ভরেছে নেটদুনিয়া

কেরল হাইকোর্টে মামলাটির শুনানি হয় বিচারপতি এ মহম্মদ মুস্তাক (Justice A Muhammad Mushtaq) এবং বিচারপতি সোফি টমাসকে (Justice Sofie Thomas) নিয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে। বেঞ্চ জানিয়েছে, মুসলিম বিবাহবিচ্ছেদ আইনের অনুসারে, স্বামী দ্বিতীয়বার বিবাহ করার পর যদি প্রথম স্ত্রীকে উপেক্ষা করেন, সেইক্ষেত্রে ওই মহিলাকে তালাক দেওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত। আদালত আরও বলে, চলতি মামলার ক্ষেত্রে স্বামী দুই বছরের বেশি সময় ধরে আবেদনকারীকে আর্থিক সুরক্ষা দেননি, সেটাই তাকে তালাক দেওয়ার যথেষ্ট কারণ।

ইন্ডিয়াটুডের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৯ সালে ওই মহিলা বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছিলেন। তার ৫ বছর আগে থেকেই, অর্থাৎ ২০১৪ সাল থেকে তাঁর স্বামী তাঁর সঙ্গে থাকেন না। নতুন বিবাহ করে, দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস করেন। মহিলার স্বামী প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস না করার অভিযোগ মেনে নিলেও, আদালতে দাবি করেছিলেন, এই কয়েক বছর ধরে তিনি স্ত্রীকে সকল সহায়তা প্রদান করেছেন। 

ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য বলেছে, বছরের পর বছর স্বামী তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন না। আলাদা বসবাস করছেন। এর থেকেই প্রমাণিত, প্রথম স্ত্রী, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর সমান মর্যাদা পান না। এরপরই আদালত জানায়, স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস না করা মানে তিনি তাঁর বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। এটা পবিত্র কোরানের লঙ্ঘন। এরপরই আবেদনকারীকে তাঁর স্বামীকে বিচ্ছেদ দেওয়ার অধিকার দিয়েছে কেরল হাইকোর্ট। 

মুসলিম মহিলাদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে এই রায় এক নজির হয়ে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে ২০১৯ সালের অগাস্টে মোদী সরকার আইন লাগু করে তিন তালাক (Tripple Talaq Act) বাতিল করেছিল। ভারতে তিন তালাক এখন ফৌজদারি অপরাধ।