সংক্ষিপ্ত
- কোঝিকোড়ে বিমান দুর্ঘটনার জন্য বৃষ্টিকে দায়ি করছেন কেরলের মন্ত্রী
- বিমানবন্দরের ওই রানওয়ের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে
- ২০১০ সালে ম্যাঙ্গালোর বিমান দুর্ঘটনার পর কোঝিকোড় নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল
- এর পাশাপাশি দুর্ঘটনার জন্য আরও ২টি কারণও উঠে আসছে
গত কয়েকদিন ধরেই চলছে টানা বৃষ্টি চলছে কেরলে ৷ শুক্রবার সকালে তার মধ্যে ভয়াবহ ভূমি ধসের ঘটনা। আর সেইদিন রাতেই ঘটল আরেক ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা । বৃষ্টির কারণে দৃশ্যমানতা প্রায় ছিল না বললেই চলে ৷ বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামাতেও যথেষ্ট সমস্যা হচ্ছিল। তার মধ্যেই কেরলের কোঝিকোড়ের কারিপুর বিমানবন্দরের রানওয়েতে পিছলে গেল এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের একটি বিমান ৷ দুবাই থেকেবিমানটি আসছিল ৷ দুই পাইলট, ৫ জন কেবিন ক্রু-সহ ছিলেন মোট ১৯১ জন ৷ ঘটনাস্থলেই এক পাইলটের মৃত্যু হয়।
সন্ধ্যে ৭.৪০ মিনিট নাগাদ ঘটে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে। বিমান দুর্ঘটনার জন্য প্রবল বর্ষণকে দায়ী করেন কেরালার বনমন্ত্রী কে রাজু। তাঁর মতে, বৃষ্টির মধ্যে অবতরণের কারণে বিমান রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়েছে। তবে এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ উঠে আসছে।
প্রথমত কোঝিকোড় বিমানবন্দরের ওই রানওয়ের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে । বিশেষজ্ঞদের মতে, রানওয়েটি বেশ ঢালু। রানওয়ের শেষ মাথায় রয়েছে প্রায় ২০০ মিটার গভীর উপত্যকা। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেখানে পৌঁছনোও কষ্টকর। ১০ বছর আগে কোঝিকোড় বিমানবন্দরের রানওয়েকে নিরাপদ নয় বলে উল্লেখ করেছিলেন বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় গঠিত নিরাপত্তা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ক্যাপ্টেন মোহন রঙ্গনাথন। কিন্তু তার সেই কথার কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ১০ বছরের মাথায় আবার ঘটলো দুর্ঘটনা। আবর ঘটলো প্রাণহানি।
এই বিষয়ে ক্যাপ্টেন মোহন বলেন, ‘২০১০ সালে ম্যাঙ্গালোর বিমান দুর্ঘটনার পর কোঝিকোড় বিমানবন্দরের রানওয়েকে অনিরাপদ বলে উল্লেখ করেছিলাম। কিন্তু সে বিষয়টিকে আমলেই নেওয়া হয়নি। রানওয়েটি বেশ ঢালু। শেষে রয়েছে বাফার জোন।’ তার ওপর রানওয়েটি পর্যাপ্ত দৈর্ঘ্যেরও নয়। সাধারণত রানওয়ের শেষ প্রান্তের দৈর্ঘ্য থাকে ২৪০ মিটার। কিন্তু কোঝিকোড় বিমানবন্দরের শেষ প্রান্তের দৈর্ঘ্য মাত্র ৯০ মিটারের। তাছাড়া উভয় পাশের জায়গাও কম। যেখানে উভয় পাশের জায়গা থাকার কথা ১০০ মিটার, সেখানে কোঝিকোড়ের রয়েছে মাত্র ৭৫ মিটার।’ যোগ করেন তিনি।
তবে বিমান দুর্ঘটনার জন্য বৃষ্টি ও কোঝিকোড় বিমানবন্দরের অবস্থান কারণ হিসাবে উঠে আসলেও আরও ২টি বিষয় নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। এরমত উল্লেখ করতেই হবে পাইলটদের প্রশিক্ষণ। প্রতিবছর পাইলটদের অন্তত ২ বার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু এবছর করোনা মহামারীর কারণে সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া আরও একটি কারণ হিসাবে উঠে আসছে পাইলচদের মানসিক চাপের বিষয়টিও। সম্প্রতি পাইলটদের বেতন ৬০ শতাংশ কমানোর ঘোষণা করা হয়েছে। গত এপ্রিল থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। বৃহস্পতিবারই এনিয় ঘোষণা করা হয়। সেই কারণে পাইলটরা মানসিক চাপে থাকতে পারেন, এই কারণটিকেও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।