সংক্ষিপ্ত

মহাকুম্ভের নিরাপত্তায় এনএসজি কমান্ডো বাহিনী ও স্নাইপার প্লাটুন মোতায়েম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার।

 

কুম্ভমেলা ২০২৫ -এর জন্য প্রস্তুতি তুঙ্গে প্রয়াগরাজে। তারই প্রস্তুতি জোরদার। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর খালিস্তানি জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে। আর সেই কারণেই সতর্ক রয়েছে প্রশসন। কানাডাবাসী খালিস্তানি জঙ্গিনেতা গুরুপতবন্ত সিং পান্নুন প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন। আর সেই কারণেই প্রথম থেকেই সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রের খবর এই পরিস্থিতিতে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় প্রয়াগরাজের প্রশাসন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোতায়েন করা হচ্ছে সেনা বাহিনীও।

মহাকুম্ভের নিরাপত্তায় এনএসজি কমান্ডো বাহিনী ও স্নাইপার প্লাটুন মোতায়েম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার। যা কুম্ভমেলার ইতিহাসে এই প্রথমবার হচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর এবার কুম্ভমেলায় মোট ২৬টি নাশকতা দমন টিম মোতায়েন করা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কমান্ডো বাহিনী ও কেন্দ্রীয় আধাসেনার স্পেশাল ফোর্সের পাশাপাশি এই তালিকায় কুম্ভমেলার নিরাপত্তায় থাকছে উত্তরপ্রগদেশের দুটি বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইউনিট। ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি থাকছে বুলেটপ্রুফ আউটপোস্ট। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে শাহি স্নানের স্থান, মন্দির ও গাড়ির পার্কিং লটগুলিতে।

 

সাধুর ছন্মবেশে জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে এমনই আশঙ্কা রয়েছে প্রশাসনের। আর সেই কারণে আখড়া-সন্ন্যাসীদের আধার কার্ড সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এবার কুম্ভমেলা শুরু হচ্ছে ৩১ জানুয়ারি। হাতে রয়েছে আর মাত্র ১ মাস। যদিও মেলা শুরুর আগে থেকেই আসতে শুরু করে পুণ্যার্থীরা। তাই আগে থেকেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে বলেও উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন সূত্রের খবর। শেষ হচ্ছে ২৬ ফেব্রুয়ারি, সেইদিন শিবরাত্রি। মেলা চলবে সাত দিন ধরে। কুম্ভমেলার বিশেষ পুণ্যতিথির স্নানকে শাহি স্থান বলা হয়। এবার ৪৪ দিনের মহাকুম্ভে কমপক্ষে ৬টি শাহি স্নানের দিন থাকবে। এরমধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মৌনী অমাবস্যার শাহি স্নান। আর এই দিনগুলি খালিস্তানি জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

প্রয়াগরাজের মেলার স্থলের আয়তন প্রায় ৩২ বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি। সঙ্গে রয়েছে সঙ্গমের বিস্তীর্ণ জলরাশি। সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উত্তরপ্রদেশের জলপুলিশের বিশেষ বাহিনীকে। মোটের ওপর উত্তর প্রদেশ প্রশাসন কুম্ভমেলা উপলক্ষ্যে গোটা এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপে ঘিরে রাখতে চাইছে।

প্রতি ৬ বছর অন্তর কুম্ভমেলা হয়। ২০১৯ সালে ছিল অর্ধকুম্ভ। তার আগে ২০১৩ সালে পূর্ণকুম্ভ মেলা। ১২ বছর পর প্রয়াগরাজে আবার পূর্ণকুম্ভ মেলা বসতে চলেছে। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের অনুমান কুম্ভমেলায় এবার ৪কোটিরও বেশি মানুষ শাহি স্নান করবেন। হিন্দু পুরণা অনুযায়ী কুম্ভস্নান পুণ্যস্থান। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী তিন নদীর সঙ্গমে ডুব দিয়ে স্থান করলে মোক্ষ অর্জন , অর্থাৎ স্বর্গযাত্রা হয়। পুরাণ অনুযায়ী কুম্ভকে কেন্দ্র করেই দেবতা আর অসুরদের যুদ্ধ হয়েছিল। যুদ্ধের সময় কুম্ভ থেকে চারটি ফোঁটা অমৃত পৃথিবীতে পড়ে গিয়েছিল। যার একটি ফোঁটা হয়েছিল প্রায়াগরাজে। বাকি তিন ফোঁটা অমৃত পড়েছিল হরিদ্বার, নাসিক আর উদ্দয়িনে। চারটি শহরই হিন্দুদের কাছে পুণ্য তীর্থ কেন্দ্র। ইতিহাস অনুযায়ী হর্ষবর্ধন খ্রিস্টপূর্ব ৬৪৪ সালের দিকে এলাহাবাদে কুম্ভ মেলার আয়োজন শুরু করেন। সৌদি আরবের মক্কায় ১.৪ মিলিয়ন মানুষ হজ যাত্রায় অংশ নেয়। উদ্যোক্তাদের কথায় কুম্ভমেলায় তার থেকেও বেশি মানুষ আসবেন। যার প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু হয়েছে।