সংক্ষিপ্ত

দেশ সীমানার গণ্ডী ছাড়িয়ে গণপতি-র পূজার বিস্তার যেমন সারা বিশ্ব জুড়ে বহুল প্রসারিত, তেমনই ধর্মের গণ্ডী ছাড়িয়ে হিন্দু থেকে ইসলামেও বিস্তৃত হয়েছেন ভগবান শ্রী গণেশ। 

‘সকল দেবতার মধ্যে গণেশ অনন্য; প্রত্যেক অন্বেষণকারী আপনাকে ডাকে, এবং যখনই কেউ আপনার নাম ডাকে, তখন তাদের কাজগুলি সম্পন্ন হয়…’ – লিখে গেছেন বিখ্যাত উর্দু কবি নাদিম জৌনপুরী। উর্দু সাহিত্যে ভগবান গণেশ একটি বিশেষ স্থান ধারণ করে থাকেন। বিভিন্ন কবি সাহিত্যিক বিবিধ ধরনের নাম যার দ্বারা সিদ্ধি বিনায়কের কথা উল্লেখ করে গেছেন, যেমন: সমুখ, একদন্ত, কপিল, গজকর্ণক, লম্বোদর, ভাকাটা, বিগানাংশ, বিনায়ক, গান্ধীকেশ এবং গজানন্দ । 

উর্দু সাহিত্যে এই বিশ্বাসও প্রকটভাবে দেখা গেছে যে, কোনও কাজের চেষ্টার যদি ভগবান গণেশের আশীর্বাদ পাওয়া যায়, তাহলে তা সফলতার পথকে সুগম করে দেয়। নাট্যকার সাদাত হাসান মান্টো-র বিখ্যাত গল্প ‘হটক’-এর  চরিত্র সুগন্ধী প্রভু গণেশের একনিষ্ঠ অনুসারী এবং গণেশকে তিনি নিজের সর্বশ্রেষ্ঠ গুরু হিসেবে বিবেচনা করেন। তাছাড়া, আলী ইমাম নকভি, রাজেন্দ্র সিং বেদী, ইসমত চুঘতাই, কুররাতুল আইন হায়দার এবং কৃষ্ণ চন্দ্রের লেখায় বিভিন্ন প্রসঙ্গে ভগবান গণেশের উল্লেখ রয়েছে।

মহারাষ্ট্রে, গণেশ চতুর্থী উদযাপনের সময় অসংখ্য উর্দু কবি ভগবান গণেশের প্রশংসায় কবিতা এবং হামদ পাঠ করেন। তাঁরা অনেকেই ভগবান গণেশের সাহসের গল্প স্মরণ করেন। নাজির আকবরাবাদী-র একটি কবিতায় উদ্ধৃত আছে: 
‘পেহলে নাম গণেশ কা লিজিয়ে সিস নাওয়ে/ জা সে কাজ সিধ হোন সাদা মহুরত লে' – এর অর্থ হল, শুরুতে আপনাকে অবশ্যই ভগবান গণেশের আশীর্বাদ গ্রহণ করতে হবে, যা আপনাকে এবং আপনার কাজকে বাধাহীনভাবে যাত্রা করতে সহায়তা করবে। গুলজার দেহলভি, একজন প্রখ্যাত উর্দু কবি, তিনি রূপকভাবে ভগবান গণেশকে নিজের ‘হামদ’-এ উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘তেরি জাত জাত-ই-কাদিম হ্যায়, তেরি জাতে জাতে আজিম হ্যায়/ তু নাদিম হ্যায় তু নাঈম হ্যায়, তু করিম হ্যায়, তু রহিম হ্যায়– এর অর্থ হল, আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ, আপনিই আমাদের বন্ধু, আপনিই আমাদের ত্রাতা। আপনি দয়ালু।'