সংক্ষিপ্ত

ম্যাককিনসে গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, যুবসমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য, ভারতকে ২০৩০ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৯০ মিলিয়ন নতুন অ-কৃষি চাকরি তৈরি করতে হবে।

নেই কর্মসংস্থান, নেই নতুন চাকরির দিশা। বাড়ছে হতাশা। একটা চাকরি গেলে, আরেক চাকরি জোটাতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে ভারতের যুবপ্রজন্মের। মুম্বইয়ের বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি প্রাইভেট লিমিটেডের (সিএমআইই) গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। গবেষণা জানাচ্ছে উপযুক্ত চাকরি না পেয়ে ক্রমশ হতাশা বাড়ছে দেশজুড়ে। গত কয়েক বছরে লক্ষ লক্ষ যুবক চাকরি খোঁজা ছেড়ে দিয়েছে, বিশেষত মহিলাদের মধ্যে এই প্রবণতা বাড়ছে। 

গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে সামগ্রিক শ্রম অংশগ্রহণের হার ৪৬ শতাংশ থেকে কমে ৪০ শতাংশে নেমে এসেছে। মহিলাদের মধ্যে এই হার আরও বেশি। এই সময়ের মধ্যে শ্রমশক্তি থেকে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ কর্মী স্রেফ অদৃশ্য হয়ে গেছে! কর্মক্ষম জনশক্তির মাত্র ৯ শতাংশ এখন কাজে নিযুক্ত বা আরও ভালো চাকরির সন্ধানে আছেন। 

কর্মক্ষম ৯০০ মিলিয়ন ভারতীয়দের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ চাকরি খুঁজছেন না। উল্লেখ্য, এই সংখ্যাটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার জনসংখ্যার সমান। সোসাইট জেনারেল জিএসসি প্রাইভেট লিমিটেডের অর্থনীতিবিদ কুণাল কুন্ডু বলছেন নিরুৎসাহিত হওয়ার একটা বড় কারণ হল লভ্যাংশের অভাব। অর্থাৎ চাহিদা অনুযায়ী বেতন ও লভ্যাংশ মিলছে না কর্মীদের। ফলে মধ্য আয়ের জালে ক্রমশ জড়়িয়ে পড়ছে ভারতের কর্মক্ষমতা। 

সিএমআইইর হিসাবে, ভারতের আইন অনুযায়ী যাদের কর্মক্ষম ধরা হয় সেই জনসংখ্যা এখন ৯০ কোটি। এই সংখ্যাটি কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া মিলিয়ে মোট জনসংখ্যার সমান। এর অর্ধেক মানুষ আর চাকরি খুঁজছেন না। জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সের মধ্যে। অদক্ষ শ্রমিকের বাইরে প্রতিযোগিতা মারাত্মক। সরকারে স্থিতিশীল পদগুলোতে নিয়োগের জন্য নিয়মিত লাখ লাখ আবেদন পড়ে। শীর্ষ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলগুলোতে প্রবেশের পথ কার্যত অত্যন্ত অনিশ্চিত। 

যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চাকরিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন, ভারতকে "অমৃত কাল" বা বৃদ্ধির স্বর্ণালী যুগের জন্য চেষ্টা করার জন্য জোর দিয়েছেন। তবু ম্যাককিনসে গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, যুবসমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য, ভারতকে ২০৩০ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৯০ মিলিয়ন নতুন অ-কৃষি চাকরি তৈরি করতে হবে। এর জন্য আট শতাংশ থেকে ৮.৫ শতাংশ বার্ষিক GDP বৃদ্ধি প্রয়োজন।

যদিও অর্থনীতি উদারীকরণের দিক থেকে দারুণ অগ্রগতি করেছে ভারত। অ্যাপল, আমাজন-এর মতো জায়ান্টদের আকর্ষণ করতে পেরেছে। এখন এই পরিস্থিতিতে ভারতের নির্ভরতা অনুপাত (পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ও সদস্য সংখ্যার অনুপাত) শিগগিরই বাড়তে শুরু করবে। অর্থনীতিবিদেরা উদ্বিগ্ন যে, ভারত ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বা জনমিতিক লভ্যাংশ অর্জনের সুযোগ মিস করতে পারে। অন্যভাবে বললে, ভারতীয়রা বয়স্ক হতে থাকবেন কিন্তু ধনী নয়। 

আরও পড়ুন- ভারত টেকনোলজির পাওয়ার হাউস, মোদীর কাছে বার্তা ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতির

আরও পড়ুন- ক্যাসিনো খেলতে বিদেশে ছুটতে হবে না, পর্যটকদের জন্য দেশের এই রাজ্য বৈধ হচ্ছে জুয়া

আরও পড়ুন- উন্নয়নে গতি দিতেই জম্মু ও কাশ্মীরে প্রধানমন্ত্রী, ২০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন করলেন মোদী