সংক্ষিপ্ত
লালগড় আন্দোলনে যে ইস্টার্ন রিজিওনাল ব্যুরো কাজ করেছিল তার মাথা ছিলেন মাওবাদী নেতা প্রশান্ত বসু। তাঁকে সবাই কিষাণদা বলেই ডাকত।
খোঁজ চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। বাংলার পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও অবশেশেষে শেষ রক্ষা হল না। ঝাড়খণ্ড পুলিশের(Jharkhand Police) হাতে ধরা পড়ে গেলেন লালগড় আন্দোলনের(Lalgarh Movement) শীর্ষ মাওবাদী নেতা(Maoist leader) প্রশান্ত বসু ওরফে কিষানদা। সেই সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছেন মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষ নেত্রী শীলা মারান্ডি। তিনি সম্পর্কে প্রশান্তের স্ত্রী। ঝাড়খণ্ড পুলিশ কিষানদার(Kisananda) মাথার দাম রেখেছিল এক কোটি টাকা। এদের দুজনকেই দীর্ঘদিন থেকে খুঁজছিল একাধিক রাজ্যের পুলিশ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লালগড় আন্দোলনে যে ইস্টার্ন রিজিওনাল ব্যুরো কাজ করেছিল তার মাথা ছিলেন মাওবাদী নেতা প্রশান্ত বসু। তাঁকে সবাই কিষাণদা বলেই ডাকত। এছাড়াও নির্ভয়, কাজল এবং মহেশ নামেও পরিচিতি ছিল তাঁর। পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই ছদ্মনামে গা ঢাকা দিতেন তিনি। মাওবাদীদের তাত্ত্বিক নেতা হিসেবেই মূলত পরিচিতি ছিল তাঁর। প্রশান্তের খোঁজে ঝাড়খণ্ডের সারান্ডার জঙ্গলে একাধিক বার তল্লাশি চালিয়েছে সেনা এবং পুলিশ। কিন্তু এর আগে প্রতিবারই আগাম খবর পেয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন কিষানদা। কিন্তু এবারে কাজে এল না পুরনো পদ্ধতি।
আরও পড়ুন - কতটা ক্ষমতা বাড়ছে বিএসএফ-র, কী বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব
এদিকে শেষ পাওয়া খবর অনুয়ায়ী, বিগত কয়েক বছর ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন কিষানদা। এমনকী ভালো নেই তাঁর স্ত্রীর শরীরও। এদিকে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বরাবরই উগ্রবাদকেই নিজের গতিপথ হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন এই বর্ষীয়ান মাওবাদী নেতা। সিপিআই মাওবাদীদের পলিটব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় মিলিটারি কমিশনের সদস্যও ছিলেন প্রশান্ত বসু ওরফে কিষানদা। মাওইস্ট কমিউনিস্ট সেন্টার অব ইন্ডিয়া (এমসিসিআই) এর প্রধানও ছিলেন।
আরও পড়ুন - গরুপাচারের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে, সিতাই কাণ্ডে বিস্ফোরক দাবি মৃতের স্ত্রীর
মাওবাদীদের ইস্টার্ন রিজিওনাল ব্যুরোর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ০০৪ সালে এমসিসিআই-এর সঙ্গে মিশে যায় সিপিআই-এমএল (জনযুদ্ধ)। তৈরি হয় ভারতের মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি। তখন অনেকটাই বয়স হয়েছে প্রশান্তের। সেই সময়ের পর থেকেই মাওবাদীদের তাত্ত্বিকতার পাঠই মূলত দিতেন প্রশান্ত। এই মাওবাদী নেতাকে ধরতে পুরষ্কার ঘোষণা করেছিল অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশার পুলিশ প্রশাসন। এমনকী ৫০ লক্ষ টাকার পুরষ্কার ঘোষণা করেছিল মহারাষ্ট্র–ছত্তিশগড়।
তাঁর স্ত্রী শিলা মারান্ডি ১৫ বছর আগেও একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেই সময়ের পর ৬ বছর জেলেও ছিলেন তিনি। শোনা যায় তারপর থেকেই পুলিশের চোখে ধুলো দিতে একইজায়গায় তিন দিনের বেশি থাকতেন না এই মাওবাদী নেতা। তবে এদিন প্রশান্ত বসু ওরফে কিষাণদা যেখানে আত্মগোপন করেছিল সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।