অপারেশন কাগর: মাওবাদীরা জানিয়েছে যে এনকাউন্টার বন্ধ করলে এবং অপারেশন কাগর থামিয়ে দিলে তারা অস্ত্র সমর্পণ করবে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে লেখা একটি চিঠি সামনে এসেছে।
অপারেশন কাগর: মাওবাদীরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে একটি চাঞ্চল্যকর চিঠি লিখেছে। চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, অবিলম্বে অপারেশন কাগর বন্ধ করে এনকাউন্টার থামালে তারা অস্ত্র ছেড়ে দেবে। এই বিবৃতিটি সিপিআই (মাওবাদী)-এর মুখপাত্র অভয়ের নামে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একাধিকবার ঘোষণা করেছেন যে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে ভারতকে মাওবাদী মুক্ত করা হবে। এরই অংশ হিসেবে অপারেশন কাগর চালানো হচ্ছে।
এদিকে, ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ জেলায় সোমবারের এক সংঘর্ষে তিনজন মাওবাদী নিহত হয়েছে। দুজন নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী) দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সহদেব সোরেনও রয়েছেন। তার মাথার দাম ছিল ১ কোটি টাকা।
কী এই অপারেশন কাগর?
অপারেশন কাগর, যা অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট নামেও পরিচিত, এটি ২০২৪ সালে ভারত সরকার দ্বারা শুরু করা একটি বড় আকারের সামরিক এবং কাউন্টার-ইনসার্জেন্সি অভিযান। এর মূল উদ্দেশ্য হল মাওবাদী আন্দোলনকে নির্মূল করা, তাদের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা এবং ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে মাওবাদী মতাদর্শকে পুরোপুরি শেষ করা। এই অভিযানে ১ লক্ষেরও বেশি সিআরপিএফ, কোবরা ইউনিট, জেলা রিজার্ভ গার্ড এবং রাজ্য পুলিশ বাহিনী কাজ করছে। ড্রোন, স্যাটেলাইট ছবি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো আধুনিক প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হচ্ছে।
অপারেশন কাগরের প্রভাব কী?
ছত্তিশগড়-তেলেঙ্গানা সীমান্তের কারেগুট্টালুতে বড় ধরনের হামলায় ৩০ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে শীর্ষ কমান্ডাররাও ছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালে শুধু ছত্তিশগড়েই ১৪০ জনেরও বেশি মাওবাদী মারা গেছে। এই অপারেশনের ফলে মাওবাদী শক্তি দুর্বল হলেও, আদিবাসী এলাকার মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে।
প্রেক্ষাপট এটাই
১৯৬৭ সালে শুরু হওয়া মাওবাদী আন্দোলন দেশে পাঁচ-ছয় দশক ধরে চলছে। এটি মূলত মধ্য ও পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিকে প্রভাবিত করছে। অপারেশন কাগরের মাধ্যমে সরকার এই আন্দোলনকে একেবারে শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে ভারতকে "মাওবাদী-মুক্ত দেশ" হিসেবে গড়ে তোলাই চূড়ান্ত লক্ষ্য।


