সংক্ষিপ্ত
কার্গিল যুদ্ধে বিজয়ের ২০ বছর
বহু বীর সৈনিকের আত্মত্যাগ ও সাহসিকতায় কাহিনী জড়িয়ে আছে
এরকমই এক অসম সাহসী যোদ্ধা বীরচক্র পদকপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন রঘুনাথ সিং
তিনি অবশ্য বলছেন নায়ক বললে বলতে হবে শহিদ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার কথা
২৬ জুলাই ১৯৯৯, টাইগার হিলের মাথায় ফের জ্বল জ্বল করে উঠেছিল ভারতের তেরঙ্গা পতাকা। আর এই কাজটা করতে গিয়ে বহু বীর সৈনিকের প্রাণের মূল্য চোকাতে হয়েছে। তাদের গভীর আত্ত্যাগ ও সাহসিকতায় ব্যর্থ হয়েছিল পাক সেনাদের জঘন্য পরিকল্পনা। কার্গিল যুদ্ধে এমন অনেক সাহসী সৈনিকের অদম্য সাহসিকতার উদাহরণ পাওয়া যায়। এরকমই এক অসম সাহসী যোদ্ধা হলেন ক্যাপ্টেন রঘুনাথ সিং। বীরচক্র পদকপ্রাপ্ত এই অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্তা অবশ্য বলছেন কার্গিলের প্রকৃত নায়ক ছিলেন ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা।
পঞ্জাবের পাঠানকোটের ঘারোটা গ্রামের বাসিন্দা ক্যাপ্টেন রঘুনাথ সিং। কার্গিল যুদ্ধে জয়ের পর ২০ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু, এখনও কার্গিল যুদ্ধ নিয়ে উৎসাহ এবং আবেগে এতটুকু ভাটা পড়েনি। চোখ বুজলেই সেই সব দিনের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিতে পারেন তিনি। এই প্রাক্ন ভারতীয় সেনা রকর্তা জানিয়েছেন, ১৯৯৯ সালের ৭ জুলাই, ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা-কে মস্কো উপত্যকার পয়েন্ট ৪৮৭৫ চূড়া পাকিস্তানের হাত থেকে মুক্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
একজন প্রকৃত নায়কের মতো লড়েছিলেন ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা। একাই খতম করেছিলেন ১০ জন পাক সেনাকে। আর বাহিনী নিয়ে ৫১৪০ পিক পয়েন্টে উড়িয়েছিলেন তিরঙ্গা। তবে লড়াই শেষ করে যেতে পারেননি তিনি। পাক সেনার গুলিতে সেখানেই শহিদ হয়েছিলেন ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা। ক্যাপ্টেন রঘুনাথ সিং জানিয়েছেন লক্ষাধিক টাকা বেতনের চাকরির সুযোগ পেয়েছিলেন ক্যাপ্টেন বাত্রা। কিন্তু, অর্থের হাতছানি প্রত্যাখ্যান করে ভারতীয় সেনাবাহিনীকেই বেছে নিয়েছিলেন এই বীর সেনা নায়ক।
সেইসময়, ক্যাপ্টেন বাত্রার বাহিনীরই একজন সুবেদার ছিলেন বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার ক্যাপ্টেন রঘুনাথ সিং। ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা শহিদ হওয়ার পরই তিনি বাহিনীর কমান্ডার-এর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। পাক কমান্ডার ইমতিয়াজ খানসহ ১২ জন পাকসেনাকে হত্যা করে তাঁরা শুধু মস্কো উপত্যকার পয়েন্ট ৪৮৭৫ বরফে ঢাকা শিখরে ভারতের তেরঙ্গা পতাকাই ওড়াননি, সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া ভালোবাসার, শ্রদ্ধার মানুষ শহিদ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার প্রতিশোধ-ও নিয়েছিলেন।
তাই আজও বীরচক্র পদকপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার ক্যাপ্টেন রঘুনাথ সিং-এর সামনে কার্গিল যুদ্ধের কথা উঠলেই, তাঁর মুখে শুধুই শোনা যায় শহিদ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা-র কথা।