সংক্ষিপ্ত
এদিন সকালে রাহুল টুইট করে লিখেছেন, "একজন হিন্দুত্ববাদী গান্ধীজিকে গুলি করেছে। সমস্ত হিন্দুত্ববাদীরা মনে করেন গান্ধীজি আর নেই। কিন্তু যেখানে সত্য, সেখানে বাপু বেঁচে আছে!'
মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুবার্ষিকীতে (On the death anniversary of Mahatma Gandhi) কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর (Congress leader Rahul Gandhi tweeted) টুইট নিয়ে সকাল থেকে জোরদার চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এদিন সকালে রাহুল টুইট করে লিখেছেন, "একজন হিন্দুত্ববাদী গান্ধীজিকে গুলি করেছে। সমস্ত হিন্দুত্ববাদীরা মনে করেন গান্ধীজি আর নেই। কিন্তু যেখানে সত্য, সেখানে বাপু বেঁচে আছে!' এই ক্ষেত্রে মনে রাখা ভালো এর আগেও একাধিক ইস্যুতে রাহুল গান্ধী হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণ করেছেন। এর আগে ২৯শে ডিসেম্বর কংগ্রেসের তিন দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে ভাষণ দেওয়ার সময় রাহুল গান্ধী বলেছিলেন "যারা হিন্দুত্বের আদর্শে বিশ্বাস করে, তারা যে কারও কাছে মাথা নত করে। তারা ব্রিটিশদের সামনে মাথা নত করেছে। কারণ তাদের অন্তরে কোন সত্য নেই।" সেই সময়েও রাহুলের এই মন্তব্য নিয়ে জোরদার চর্চা শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্বাধীনতার আগে হোক বা পরে, গান্ধীর মতবাদবিরোধী লোকের সংখ্যা বড় কম ছিল না। গান্ধীর অহিংস আন্দোলন, দর কষাকষি আর জনপ্রিয়তা ভারতকে ঠেলে স্বাধীনতার দ্বারে পৌঁছে দিল বটে, কিন্তু কংগ্রেসের সমাজতন্ত্র বরাবরই থেকেছে প্রশ্নচিহ্নের মুখে। এদিকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ ওরফে আরএসএস, ১৯২৫ সালে ইউরোপীয় ডানপন্থীদের আদলে তৈরি এই সংগঠনটি বর্তমানে দেশের বর্তমান শাসক দল বিজেপি-র অন্যতম প্রধান পথপ্রদর্শক বলা চলে। এদিকে ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই হিন্দু জাতীয়তাবাদ এবং কট্টর ডানপন্থী মতবাদের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে এসেছে এই সংগঠনটি। তারাও ছিল গান্ধীর কট্টর বিরোধী। এদিকে এই আরএসএস-র মধ্যে ‘হিন্দু রাষ্ট্র দল’ নামের একটি চরমপন্থী দল গড়ে তোলেন বিনায়ক দামোদর সাভারকর। সাভারকরের স্বপ্ন ছিল অখন্ড ভারতকে একটা হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা।
আরও পড়ুন- কমছে না দৈনিক মৃত্যু, দৈনিক সংক্রমণে ফের কতটা উদ্বেগ বাড়াল ভারত
কাজেই তার সাথে একসময় পরিচয় ঘটলো নাথুরাম গডসে, নারায়ণ আপ্তে আর বিষ্ণু কারকারের। ১৯৪৮ সালে প্রথম কাশ্মীর যুদ্ধের পরবর্তী কালে বেঁধেছিল বড় ঝামেলা। ভারত সরকারের কোষাগারে পাকিস্তানের ৫৫ কোটি টাকা ছিল বলে জানা যায়। সেই সময়কার ভারতীয় নেতারা টাকা ফেরাতে না চাইলেও হকের টাকা যেন পাকিস্তানকে ফেরত দেওয়া হয় এই শর্তে অনশন শুরু করেন গান্ধীজি। আর সেই কারণেই মূলত মারাঠা উগ্রপন্থীরা গান্ধীকে হত্যা করবার সিদ্ধান্ত নেয়। যাদের মূল পাণ্ডা ছিল নথুরাম। তাদের সবার উপরেই ছিল সাভারকরের হাত। যদিও এই তত্ত্ব নিয়ে আজও বিতর্ক রয়েছে বিভিন্ন মহলে। কিন্তু গান্ধীজির মৃত্যু দিনে ফের হিন্দুত্ববাদীদের তুলোধনা করে রাহুল যে আদপে বিজেপি-কেই নিশানা করলেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন- বাবা ইকবাল সিংয়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর, যে কাজের জন্য এই মহামানবকে মনে রাখবে ভারত