সংক্ষিপ্ত
চিন ইস্যুতে রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেসের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন চিন নিয়ে রাহুল গান্ধীর থেকে তাঁর জ্ঞান বেশি।
চিন ইস্যুতে কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কারণ লাদাখ সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায় চিনা আগ্রাসন নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন তুলছে। কংগ্রেস। বিষয়টি নিয়ে মাঝে মাঝেই কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন রাহুল গান্ধী। এদিন তারই জবাব দেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায় মোদী সেনা বাহিনী পাঠিয়েছেন , রাহুল গান্ধী নন।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায় ভারত সরকার বিশাল সেনা বাহিনী পাঠিয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ সত্য নয় বলেও দাবি করেন বিদেশমন্ত্রী। লাদাখ ও অরুণাচলপ্রদেশ সীমান্তে চিনা আগ্রাসন নিয়ে রীতিমত সরব কংগ্রেস। কংগ্রেসের দাবি এই এলাকায় চিনা সেনার আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে কিছুই করছে না কেন্দ্রীয় সরকার। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে বলেও দাবি করে কংগ্রেস। কিন্তু এদিন জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন কংগ্রেসের অভিযোগ পুরোপুরি অসত্য।
জয়শঙ্কর এদিন বলেন, চিন সীমান্ত এলাকায় শান্তি স্থাপনে ভারত এখনও পর্যন্ত সবথেকে বড় পদক্ষেপ করেছে। এই প্রথম কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সীমান্ত ইস্যুতে কথা বলার সময় চিনের নাম উচ্চারণ করেলেন। যাইহোক জয়শঙ্কর এদিন আরও বলেন, 'আমরা যদি উদ্যোগী না হয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায় সেনা বাহিনী না পাঠিয়ে থাকে তাহলে কে পাঠিয়েছে। রাহুল গান্ধী তাদের পাঠায়নি। নরেন্দ্র মোদী সেনা বাহিনী পাঠিয়েছে। ' তিনি আরও বলেন কেন্দ্রীয় সরকার এলএসি-তে প্রচুর পরিমাণে সেনা বাহিনী পাঠিয়েছে। এটি কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বড় উদ্যোগ।
চিন সীমান্ত প্রসঙ্গে এদিন জয়শঙ্কর আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় মোদী সরকার আগের সরকারগুলির তুলনায় পাঁচ বেশি পরিকাঠামো উন্নয়ন করেছে। 'কারা অনুদ্যোগী আর পিছিয়ে পড়া?' এই বিষয়টি তিনি জানেন বলেও কংগ্রেসের দিকেই আঙুল তুলেছেন এস জয়শঙ্কর। এদিন প্যাংগন লেক এলাকায় চিনা বিল্ডিং আর ব্রিজ তৈরি প্রসঙ্গেও কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধীদের নিশানা করেন জয়ঙ্কর। তিনি বলেন, ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধের সময় চিন বেআইনিভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায় পরিকাঠামো নির্মাণ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, কংগ্রেসের আর চিন দুটো শব্দই 'C' দিয়ে শুরু। তাই কংগ্রেসের অবশ্যই বুঝতে সমস্যা নেই যে চিন কী করেছে আর করছে না। তিনি বলেন কংগ্রেস ইচ্ছেকৃতভাবে পরিস্থিতির ভুল ব্যাখ্যা করছে। চিনারা প্রথম সেখানে এসেছিল ১৯৫৮ সালে। তারপর আসে ১৯৬২ সালে। কিন্তু কংগ্রেস সেখানে একটি ব্রিজ তৈরির জন্য ২০২৩ সালেও মোদী সরকারকে নিশানা করছে। যা সত্য নয় বলেও দাবি করেন তিনি।
জয়শঙ্কর আরও বলেন, 'রাজীব গান্ধী ১৯৮৮ সালে বেজিং গিয়েছিলেন, ১৯৯৩ ও ১৯৯৬ সালে চুক্তিগুলি স্বাক্ষর করেছিলেন। আমি মনে করি না যে এই চুক্তিগুলি ভুল ছিল। এটি একটি রাজনৈতিক বিষয় নয়, যা আমি করছি। আমার মনে হয় এই চুক্তিগুলি সেই সময়ে হয়েছিল- কারণ সেই সময় আমাদের এই চুক্তিগুলি প্রয়োজন ছিল। সীমান্তে স্থিতিশীলতার জন্য। ' সীমান্তে স্থিতিশীলতা প্রয়োজনীয় বলেও দাবি করেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন প্রতিপক্ষ দেশের দাবি যখন যুক্তিসংগত না হয় তখন সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করা যায় না।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সম্পর্কে বলতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, বিদেশ নীতি রাহুল গান্ধী এখনও ভাল করে রফত করতে পারেননি। তিনি বিদেশনীতি সম্পর্কে বেশিকিছু জানেন না। তাঁকে আরও শিখতে হবে বলেও পরামর্শ দিয়েছেন। চিন সম্পর্কে রাহুল গান্ধী কী কী জানেন তা তিনি শুনতে ইচ্ছুক বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি চিনে সবথেকে বেশি দিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাই তিনি চিন সম্পর্কে অনেক বেশি ওয়াকিবহাল বলেও দাবি করেন। তিনি আরও বলেছেন, সীমান্ত চুক্তিগুলি যতদিন চিন লঙ্ঘন করনি ততদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল।