সংক্ষিপ্ত

কোভিড নিয়ন্ত্রণে কতটা সফল যোগী সরকার' এই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সামনে।  আশ্চর্যরকমের ভালো বলার তালিকায় সবার উপরে রয়েছে আওয়াধ। উত্তর প্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মোদী ফ্যাক্টর কতটা প্রভাব ফেলবে? এমন প্রশ্নও রাখা হয়েছিল উত্তরদাতাদের সামনে।
 

কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে বারবারই চাপান-উতোর চলছে বিজেপি বনাম অবিজেপি দলগুলির মধ্যে। এমনকী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এর সময় অক্সিজেনকাণ্ড নিয়ে বিতর্কে নাম জড়িয়ে গিয়েছিল উত্তর প্রদেশের। আর সেই সঙ্গে প্রত্যাশিতভাবেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যোগী আদিত্যনাথকেও এই বিতর্কে রীতিমতো আক্রমণ শানিয়েছিলেন। করোনা আবহে গঙ্গায় দেহ উদ্ধার নিয়েও নাম জড়িয়েছিল যোগী সরকারের। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তীব্র আক্রমণ শানিয়ে অভিযোগও করেছিল যে করোনায় মৃতদের দেহ সৎকার না করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে খোদ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আক্রমণ শানিয়েছিলেন যোগীর বিরুদ্ধে। মালদহ জেলার বিভিন্ন স্থানে গঙ্গা বরাবর পুলিশ পিকেটিংও করিয়েছিল যদি সত্যি দেহ ভেসে আসে। এমনকী, স্থানীয় পঞ্চায়েত ,মাইকিং করে গঙ্গায় স্নান না করার কথাও প্রচার করেছিল মালদহের বিভিন্ন স্থানে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন উত্তর প্রদেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ অক্সিজেন অন্যায়ভাবে দিয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। সুতরাং, সন্দেহ নেই যে এই সব সাম্প্রতিক ঘটনা পরম্পরা বলেই দিচ্ছে করোনা নিয়ে কতটা উত্তাপ ছড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশ। এশিয়ানেট নিউজ ও জন কি বাত-এর জনমত সমীক্ষা হ্যাসট্যাগ মুড অফ ইউপি (#MoodOfUP)-এর কাঙ্খিত প্রশ্ন ছিল যে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় কতটা সফল যোগী আদিত্যনাথ? আসুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক সমীক্ষায় পাওয়া তথ্য। 

সমীক্ষায় অংশ নেওয়াদের প্রশ্ন করা হয়েছিল যে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় যোগী সরকারকে কি রেটিং দেবেন? উত্তরদাতাদের মধ্যে ২৩ শতাংশ বলেছেন খুব ভালো। আবার ভালো-র পক্ষে মত দিয়েছেন ২২ শতাংশ মানুষ। গড়পড়তা বলেছেন ৩২ শতাংশ মানুষ। খারাপ বলেছেন ১৩ শতাংশ মানুষ। 

 
এবার দেখে নেওয়া যাক অঞ্চল ভিত্তিক যে তথ্য হ্যাসট্যাগ মুড অফ ইউপি (#MoodOfUP)-এ ধরা পড়েছে তাতে কোন অঞ্চলের মানুষ কী বলছে। কোভিড নিয়ন্ত্রণে কতটা সফল যোগী সরকার' এই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সামনে।  আশ্চর্যরকমের ভালো বলার তালিকায় সবার উপরে রয়েছে আওয়াধ। এই অঞ্চলের ৮৫ শতাংশ মানুষ যোগীকে সাধুবাদ দিয়েছেন কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য। ব্রিজ ও পশ্চিম অঞ্চলের ৬৮ শতাংশ করে মানুষ কোভিড মোকাবিলায় যোগীর সাফল্যকে দেখতে পেয়েছেন। কানপুর-বুন্দেলখণ্ডের ৬৫ শতাংশ এবং কাশী-র ৫৮ শতাংশ ও গোরখের ৪০ শতাংশ মানুষ কোভিড মোকাবিলায় যোগীর সাফল্যের পক্ষে সওয়াল করেছেন। কোভিড মোকাবিলায় যোগীর সাফল্যে গড়পড়তা ছবি দেখতে পেয়েছেন- কাশির ২৯ শতাংশ, পশ্চিমের ২৫ শতাংশ, কানপুর-বুন্দেলখণ্ডের ২৫ শতাংশ, ব্রিজের ২৩ শতাংশ, গোরখের ২০ শতাংশ এবং আওয়াধের ১০ শতাংশ মানুষ।  কোভিড মোকাবিলায় যোগীকে খারাপ বলেছেন- গোরখের- ৩০ শতাংশ, ব্রিজের ৯ শতাংশ, পশ্চিমের ৭ শতাংশ, আওয়াধের ৫ শতাংশ, কাশির ১৩ শতাংশ এবং কানপুর-বুন্দেলখণ্ডের ১১ শতাংশ মানুষ। 

উত্তর প্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মোদী ফ্যাক্টর কতটা প্রভাব ফেলবে? এমন প্রশ্নও রাখা হয়েছিল উত্তরদাতাদের সামনে। এতে যে যা বলেছেন- খুবই প্রভাব ফেলবে- বলেছেন ২৫ শতাংশ। সামান্য কিছু প্রভাব ফেলবে বলেছেন ২৪ শতাংশ। কম প্রভাব ফেলবে বলেছেন ৩৩ শতাংশ। এক্কেবারেই প্রভাব ফেলবে না বলেছেন ১৮ শতাংশ। 

মানুষের দৈন্যন্দিন জীবনে বিদ্যুৎ-এর মাশুল একটা বড় জায়গা করে নিয়েছে। বিশেষ উত্তরপ্রদেশের ভোটে বিদ্যুৎ-এর মাশুল দীর্ঘসময় ধরে একটা জ্বলন্ত সমস্যা। হ্যাসট্যাগ মুড অফ ইউপি (#MoodOfUP)-এর সমীক্ষাতেও রাখা হয়েছিল বিদ্যুৎ-এর মাশুল নিয়ে .প্রশ্ন। দেখা যাচ্ছে ৪৫ শতাংশ মানুষ মনে করছেন বিদ্যুৎ-এর মাশুল ভোটে এবারও ইস্যু হবে। তবে ৫৫ শতাংশ মানুষ আবার দাবি করেছেন যে ভোটে বিদ্যুৎ-এর মাশুল কোনও গুরুত্বই পাবে না। 

চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন। এর সঙ্গে অবশ্যেই একটা গুরুত্ব তৈরি করেছিল অসম এবং তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক মহলের মতে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বিধানসভা নির্বাচনগুলি অতি গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে আরও একটি বিধানসভা নির্বাচন সামনে রয়েছে যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। আর এই বিধানসভা নির্বাচন হল উত্তরপ্রদেশের। বলতে গেলে ২০১৭ সালে বিশাল জয় নিয়ে উত্তরপ্রদেশে সরকার তৈরি করে বিজেপি। এমনকী, যোগী আদিত্যনাথ-কে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তুলে ধরে আরও এক বড় রাজনৈতিক চাল চেলেছিল গেরুয়া শিবির। প্রায় ৫ বছর শাসনকাল পূর্ণ করতে চলেছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। ২০২২ সালের শুরুতেই সেখানে বিধানসভা ভোট। খাতায় কলমের হিসাব বলছে এখনও ৭ মাস রয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের মেয়াদ। তার আগেই উত্তরপ্রদেশের মনের মেজাজ বুঝতে ময়দানে নেমে পড়েছে এশিয়ানেট নিউজ। জনমত সমীক্ষায় নাম করা সংস্থা জন কি বাত-এর সঙ্গে এশিয়ানেট নিউজ একটা তথ্যানুসন্ধান চালায়। যার নাম হ্যাসট্যাগ মুড অফ ইউপি (#MoodOfUP)-যা আসলে একটি জনমত সমীক্ষা(Opinion Poll)। এই সমীক্ষার মধ্যে দিয়ে উত্তরপ্রদেশের মানুষের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আর্থ সামাজিক অবস্থা এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি-র অভিজ্ঞতার একটা ঝোঁকের সন্ধান করা হয়েছে। আর এইখান থেকে পাওয়া সমীক্ষার মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে মানুষের দৃষ্টিকোণের সন্ধান করা হয়েছে। ভোট আসতে আসতে সন্দেহ নেই যে এই মানসিকতা ও দৃষ্টিকোণের অনেকটাই পরিবর্তন ঘটবে- ফলে সেক্ষেত্রের তথ্যের তারতম্য হওয়াটাও এক্কেবারে নিশ্চিত।