সংক্ষিপ্ত
এক বর্ণময় অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে এগিয়েছিল মুলায়মের রাজনৈতিক পথচলা। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরীর সাংসদ। তাঁর হাত ধরেই বদল এসেছিল হৃদয়পুরের রাজনৈতিক সমীকরণে। ভারতীয় রাজনীতির সেই বর্ণময় অধ্যায়ের অবসান ঘটল মুলায়মের প্রয়াণের সঙ্গেই।
সময়টা ১৯৩৯ সাল,উত্তরপ্রদেশের এটাওয়ার সাইফাই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মুলায়ম সিং যাদব। পরবর্তীকালে রাম মোনহর লোহিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে রাজনীতিতে পা দিলেন তরুণ নেতা মুলায়ম সিং যাদব। সেই থেকেই শুরু হল মুলায়মের রাজনৈতিক যাত্রা। এরপর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সাক্ষী থেকেছেন নানা পালাবদলের। উত্থান পতনের মধ্য দিয়েই জাতীয় রাজনীতিতে নিজের জমি তৈরি করেছিলেন 'নেতাজি'। দশবারের বিধায়ক, তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী, দীর্ঘ ১৯ মাসের জেল, সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠা-সহ একের পর এক বর্ণময় অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে এগিয়েছিল মুলায়মের রাজনৈতিক পথচলা। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরীর সাংসদ। তাঁর হাত ধরেই বদল এসেছিল হৃদয়পুরের রাজনৈতিক সমীকরণে। ভারতীয় রাজনীতির সেই বর্ণময় অধ্যায়ের অবসান ঘটল মুলায়মের প্রয়াণের সঙ্গেই।
১৯৩৯ সালে উত্তরপ্রদেশের এটাওয়ার সাইফাই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মুলায়ম সিং যাদব। ১৯৬৭ সালে প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হন রাম মোনহর লোহিয়ার অনুগামী তরুণ নেতা মুলায়ম সিং যাদব। ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থা জারির সময় গ্রেফতার হল মুলায়ম। দীর্ঘ ১৯ মাস কাটে গরাদের ওপারে। ১৯৭৭ সালে মুক্তি পান তিনি। ফিরে এসে ফের সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৮০ সালে সভাপতি হন লোক দলের। এরপর মুলায়মের হাত ধরেই তৈরি হয় ক্রান্তিকারি মোর্চা। ভেঙে যায় লোক দল। এরপর চলে উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে ভাঙাগড়ার পর্ব।
১৯৮৯ সাল, কেন্দ্রে ভি পি সিংয়ের সরকারের পতন এবং একই সঙ্গে চন্দ্র শেখরের জনতা দল (সোশ্যালিস্ট)-এর উত্থান। উত্তরপ্রদেশের মসনদে তখন মুলায়ম সিং যাদব বিরাজমান।
১৯৯১ সাল, কংগ্রেসের সমর্থন হারাল মুলায়ম সিংয়ের সরকার। কেন্দ্রে ভেঙে পড়ল চন্দ্র শেখরের সরকারও। ওই বছর ফের বিধানসভা নির্বাচন হলে এবার উত্তরপ্রদেশের কুর্সি দখল করল BJP।
১৯৯২ সাল, বিজেপিকে রুখতে এবার নতুন অধ্যায়ের সূচনা। উত্তরপ্রদেশে তৈরি হল এক নতুন দল। সমাজবাদী পার্টি, প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিং যাদব। ১৯৯৩ সালে সমাজবাদী পার্টির হাত ধরেই নিজের হারানো কুর্সি ফেরত পেলেন উত্তরপ্রদেশের 'নেতাজি'। দ্বিতীয়বারের জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসলেন মুলায়ম।
১৯৯৬ সাল, ইতিমধ্যে রাজ্যের গন্ডী পেরিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে পা রেখেছে মুলায়মের দল সমাজবাদী পার্টি। এই বছরই উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরী থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
২০০২ সাল, উত্তরপ্রদেশে ফের গদিচ্যুত মুলায়ম। মুখ্যমন্ত্রী হলেন দলিত নেত্রী মায়াবতী। তবে এই সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেয় বিজেপি। এরপরই শোরগোল পড়ে যায় লখনউ জুড়ে। ওই বছরই তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হল মুলায়ম সিং যাদব। শুধু তাই নয় উপনির্বাচনে প্রাপ্ত ভোট হয় ৯৪ শতাংশ। রেকর্ড মার্জিনে জিতে বিধায়ক হন তিনি।
২০১২ সাল, উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতার পালাবদল। ক্ষমতায় আসে সমাজবাদী পার্টি। তবে এবার আর মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম নয়, কুর্সিতে বসলেন অখিলেশ যাদব।
সোমবার সকালে এই জীবনাবসান হল দশকের পর দশক জুড়ে জাতীয় রাজনীতি কাঁপিয়ে বেড়ানো নেতা মুলায়ম সিং যাদবের।
আরও পড়ুন-
রাতের অন্ধকারে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে রক্তাক্ত কেরালা! প্রাণ হারালেন শিক্ষক, স্কুল পড়ুয়া সহ মোট ৯ জন
সিটি হলে একের পর এক রক্তাক্ত লাশ, মেক্সিকোতে ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডে ১৮ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু
৬৬ জন গাম্বিয়ান শিশুর মৃত্যু! ভারতে তৈরি সর্দিকাশির সিরাপ নিয়ে এবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা